খেলা
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে সমীকরণ মেলানোর সুযোগ
ইশতিয়াক পারভেজ
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ দল ক্রিকেট বিশ্বে কলার উঁচু করেই চলে। ৫০ ওভারের নিজেদের দিনে যে কোনো দলকেই হারানোর ক্ষমতা রাখে- এখন টাইগাররা। ঘরের মাঠেতো এই ফরম্যাটে যে কোনো প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু গেল কয়েক মাস ধরে হঠাৎ করেই যেন খেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। তখনই দলের অভ্যন্তরের কোন্দলও বাইরে আসে। ধারণা করা হচ্ছে- অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সেই সিরিজ হারে টাইগাররা। ওই সিরিজে অধিনায়ক তামিম ইকবাল অভিমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর সামনে আসে এশিয়া কাপের চ্যালেঞ্জ।
অবসর ভেঙে ফিরলেও তামিম ইনজুরির কারণে ছিটকে যান এমনকি নেতৃত্বও ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর সাকিবের নেতৃত্বে এশিয়া কাপের তিনবারের চ্যাম্পিয়ানরা ফিরে আসে একরাশ হতাশা নিয়ে। তবে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে নিয়ে আসে ঘুরে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস। এবার বিশ্বকাপ মিশনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। যেখানে সাকিবের পরিবর্তে নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস। ফিরেছেন তামিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজে সুযোগ দলের অনেক অমীমাংসিত সমীকরণ মেলানোর সুযোগ।
লিটন দাসের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেন করতে দেখা যাবে তামিম ইকবালকে। যদি দু’জনই নিজেদের সেরাটা দিতে পারেন তাহলে ওপেনিং নিয়ে যে শঙ্কায় ভুগছে দল তা থেকে কিছুটা হলেও মিলবে মুক্তি। তামিম বিশ্বকাপ দলে খেলবেন কিনা সেটিও নিশ্চিত হয়ে যাবে এই সিরিজে। আর লিটনের ফর্মে ফেরাও যে ভীষণ প্রয়োজন দলের জন্য। যদি নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্যাটিং ফর্মেও ফিরেন তাহলে বিশ্বকাপে কিছুটা হলেও ওপেনিং নিয়ে চিন্তা কমে আসবে। আর তা না হলে বিকল্প ওপেনার হিসেবে কাউকে বেছে নেয়াও হবে কঠিন বিষয়। এরই মধ্যে নাঈম শেখ ব্যর্থ, এনামুল হক বিজয়কে এক ম্যাচ সুযোগ দেয়া হলেও কাজে লাগাতে পারেননি।
সবমিলিয়ে কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচকরা তাকিয়ে থাকবেন এই সমস্যার সামাধানে। অন্যদিকে ৭-এ কাকে খেলানো হবে তা নিয়ে মিলছে না কোনো উত্তর। আফিফ হোসেন, শামীম পাটোয়ারীরা ব্যর্থ হয়েছে এশিয়া কাপে। তাই অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দেয়া হয়েছে শেষ সুযোগ। যদি রিয়াদ নিজেকে আরও একবার প্রমাণ করতে পারেন- তাহল হয়তো তাকে শেষ মুহূর্তে যুক্ত করা হতে পারে বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে। আর তা নাহলে এই পজিশনে অস্থিরতা নিয়েই যেতে হবে বিশ্বকাপ চ্যালেঞ্জে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ ২৬শে সেপ্টেম্বর। এরপর দিনই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গোহাটি যাবে বাংলাদেশ। তার আগে ওপেনিং ও ৭ নম্বরে অমীমাংসিত সমীকরণটা মিলিয়ে নিতে চাইবে বাংলাদেশ। সবশেষ সফরের মতো এবারও বাংলাদেশে পূর্ণশক্তির দল পাঠায়নি নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে সফরে আসবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে তারা।
বিশ্ব আসরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সফরে শীর্ষ সারির ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিয়েছে তারা। দলে নেই টিম সাউদি, টম ল্যাথাম, মিচেল স্যান্টনার, ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেল, ম্যাট হেনরি, গ্লেন ফিলিপ্স, টিম সাইফার্টরা। নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় তাকে দলে রাখা হয়নি। পারিবারিক কারণে বাংলাদেশ সফরে আসেনি মার্ক চ্যাপম্যান ও জিমি নিশাম। কিউইদের ওয়ানডে দলে নতুন মুখ হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ডিন ফক্সক্রফট।
আগস্টে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে টি-টোয়েন্টি দিয়ে নিউজিল্যান্ড দলে অভিষেক হয় তার। অভিষেক ম্যাচে ১০ বলে ১০ রান করেন তিনি। ১০ বছর পর ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে নিউজিল্যান্ড। ২০১৩-তে কিউইদের নিজেদের মাঠে ৩-০ ব্যাবধানে সিরিজ হারিয়েছিল টাইগাররা। এখন পর্যন্ত দুই দল মোট ৯ টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে। যার মধ্যে ৭ টিতে জিতেছে কিউইরা আর বাংলাদেশ ২ টিতে। দেশের মাটিতে এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তিন সিরিজের দু’টিতে জয় টাইগারদের।