শরীর ও মন
হেপাটাইটিস ভাইরাসের নানা ধরন ও করণীয়
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নিল
২ আগস্ট ২০২৩, বুধবারপ্রতিবছর সারা বিশ্বে অসংখ্য মানুষ হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অনেক লোক মারা পর্যন্ত যায়। অথচ আমরা সচেতন হলে এই ভয়াল ভাইরাস হেপাটাইটিস থেকে মুক্ত থাকতে পারি। তাই যে হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলো আপনাকে আক্রান্ত করতে পারে বা মনের অজান্তে আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে সে সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন।
হেপাটাইটিস ‘এ’
এই ভাইরাসটি সাধারণত পানি ও খাবারবাহিত ভাইরাস। এই ভাইরাসে শৈশবেই সাধারণত হেপাটাইটিস হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সামান্য উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন খাবারে অরুচি, বমি, চোখ ও প্রস্রাব হলুদ হওয়া ইত্যাদি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই ভাইরাসে হওয়া হেপাটাইটিস তেমন চিকিৎসা ছাড়াই এক-দুই মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। এরপরও প্রয়োজন মনে করলে চিকিৎসকের সাহায্য নেয়া উচিত। হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের টিকা আছে। শিশুদের টিকা দিলে এই রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় ।
হেপাটাইটিস ‘বি’
এটি একটি মারাত্মক ভাইরাস। এটি সাধারণত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়।
হেপাটাইটিস ‘সি’
এটিও একটি মারাত্মক ভাইরাস ও একটি রক্তবাহিত রোগ। অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ মূলত এ রোগের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়। এটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ ও প্রদাহ সৃষ্টি করে। এ রোগে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। এই ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ফলে লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারও হতে পারে। এই ভাইরাসের কোনো টিকা নেই।
হেপাটাইটিস ‘ডি’
কারও কারও ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস ‘ডি’ সাধারণত হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের সঙ্গে হয়ে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ হলে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সার। এই ভাইরাসের আলাদা কোনো টিকা নেই।
হেপাটাইটিস ‘ই’
এ ভাইরাস দূষিত পানি ও খাদ্যবাহিত। এতে সাধারণত স্বল্পমেয়াদি সংক্রমণ হয়। তীব্র মাত্রার জন্ডিস হয়। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হতে পারে। গর্ভকালে হেপাটাইটিস ‘ই’ সংক্রমণ হলে অনেক সময় মারাত্মক জটিলতা দেখা দেয়।
প্রতিরোধ ও সচেতনতা
হেপাটাইটিস রোগ প্রতিরোধে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। পানি ফুটিয়ে পান করা সবচেয়ে নিরাপদ। যেখানে-সেখানে বা বাইরের খাবার বা পানি খাওয়া যাবে না।
সব ধরনের মাদক থেকে মুক্ত থাকতে হবে। নিরাপদ রক্ত নিতে হবে। অনিরাপদ যৌনমিলন এড়িয়ে চলতে হবে। ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা নিতে হবে। যদি জন্ডিস হয় কবিরাজ, ঝাড়ফোঁক বা কু-চিকিৎসা পরিহার করে বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা নিতে হবে।
লেখক: অধ্যাপক ও ডিভিশন প্রধান, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং আঞ্চলিক পরামর্শক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
চেম্বার: ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, মিরপুর রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা।
হটলাইন-১০৬০৬
মন্তব্য করুন
শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন
শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত
৯৫ ভাগ কিশোরীকে টিকা দেয়ার টার্গেট/ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা পেল ১১ শিক্ষার্থী

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]