ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

বংশগত টাক থেকে মুক্তির উপায়

ডা. জাহেদ পারভেজ
২৫ জুলাই ২০২৩, মঙ্গলবারmzamin

প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের মাথার মাঝখানে ও কপালের দুই পাশ থেকে আস্তে আস্তে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এবং একপর্যায়ে চুল পড়ে মাথা খালি হয়ে যাওয়াকে বংশগত টাক বলে। মেডিকেলের ভাষায় এটিকে মেল প্যাটার্ন হেয়ার লস বলে। এ জাতীয় টাক হওয়ার কারণ, টেস্টোস্টেরন নামে হরমোন মাথার ত্বকের ওই স্থানগুলোতে ডাইহাইড্রো টেস্টোস্টেরনে (ডিএইচটি) পরিণত হয় এবং ডিএইচটির প্রভাবে প্রথমে মোটা চুল পড়ে ও পরে পাতলা চুল এবং একপর্যায়ে চুলের গোড়া শুকিয়ে গিয়ে চুল সম্পূর্ণভাবে ঝরে যায়।

পরিবারে অন্যদের অল্প বয়সে টাক পড়ার সমস্যা থাকলে এভাবে চুল পড়ার আশঙ্কা বেশি। চুল পড়ে যাওয়াকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি হলো অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম। নানা রকম ওষুধ ও কেমোথেরাপির জন্য যখন চুল পড়ে, তাকে অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম বলে। আর চুলের ফলিকল যখন রেস্টিং স্টেজে যায়, তখন তাকে টেলোজেন ইফফ্লুভিয়াম বলে। চুলের ফলিকল রেস্টিং স্টেজে যাওয়া মানে চুল আর বড় না হওয়া এবং একসময় বেশি হারে চুল ঝরে যাওয়া। মহিলাদেরও ছেলেদের মতো টাক হতে পারে। মেনোপজ হওয়ার পর অর্থাৎ ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে তখন ফিমেল হরমোনের পরিমাণ কমে যায়, মেল হরমোন বা টেস্টোস্টেরন/এন্ড্রোজেনের আধিক্য বেড়ে যায় এবং একই নিয়মে ছেলেদের মতো টাক পড়ে।

টেস্টোস্টেরন হরমোন ডিএইচটিতে পরিণত হতে একটি এনজাইমের প্রয়োজন ছিল। সেই এনজাইমের নাম ৫-আলফা রিডাকটেজ। সুতরাং এ ৫-আলফা রিডাকটেজের কার্যকারিতা যাদের মাথার ত্বকে বেশি, তাদেরই এ জাতীয় টাক পড়ে। এ কার্যকারিতা বেশি বা কম হওয়াটা নির্ভর করে জেনেটিকের ওপর। অর্থাৎ বংশগত প্রভাবের ওপর। তাই এ জাতীয় টাককে বংশগত টাক বলা হয়। অর্থাৎ বাবার মাথায় টাক থাকলে ছেলের মাথায় টাক পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। 

টাক নিরাময়ে বিশেষজ্ঞের অধীনে চিকিৎসা নেয়াই মঙ্গল। কাজেই বংশগত টাক পড়ার আশঙ্কা থাকলে ওষুধ সেবনে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার আশা রয়েছে। যতদিন মাথায় চুল প্রয়োজন, ওষুধ চালিয়ে যেতে হবে। তবে এরইমধ্যে যাদের টাক পড়ে গেছে, তাদের ক্ষেত্রেও ওষুধ উপকারে আসবে। 
চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন চিকিৎসার ব্যবস্থা এসেছে ও ওষুধ প্রয়োগে চুলের গোড়া শুকিয়ে যাবে না এবং টাকও পড়বে না। চুল ঝরা বন্ধের লোশন ও শ্যাম্পু ভালো কাজ করে। তবে আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে মেসোথেরাপি ও পিআরপি এবং অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বা বংশগত টাকের জন্য এটি একটি কার্যকরী চিকিৎসা। চুলের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদে নিতে হয়। ওষুধ চালিয়ে গিয়েও কাটিয়ে উঠেছেন অনেকে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

 

লেখক: সহকারী অধ্যাপক
চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ
চেম্বার: ডা. জাহেদ’স হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক
সাবামুন টাওয়ার, পান্থপথ, ঢাকা
০১৭০৭০১১২০০, ০১৭৩০৭১৬০৬০

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status