শেষের পাতা
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২৬ হাজার ৬২০ টন কয়লা এসেছে
বাগেরহাট প্রতিনিধি
১১ জুন ২০২৩, রবিবারবাগেরহাটের রামপাল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। এক মাসের কয়লা মজুতের মধ্যে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরও ২৬ হাজার ৬২০ টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের আউটার এ্যংকোরেজে ভিড়েছে চীনের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি জে হ্যায়’। ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি গতকাল ভোর ৫টায় মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেরের হাড়বাড়িয়ার-১১ নম্বর বয়ায় নোঙ্গর করে। গতকাল সকাল থেকেই এ জাহাজটি আউটার এ্যংকোরেজে হতে লাইটার জাহাজে কয়লা খালাস কাজ শুরু হয়েছে। চীনের এই জাহাজটি থেকে খালাসকৃত কয়লা লাইটার জাহাজে করে রামপাল মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে নেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোল শেডে মজুত রাখা হচ্ছে। দু’টি ইউনিটের ১৩২০ মেগাওয়ার্ট ক্ষমতার রামপাল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির ৬৬০ মেগাওয়ার্টের প্রথম ইউনিট গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়ার্টের দ্বিতীয় ইউনিটটি এ বছরের জুনে উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা।
তবে এর আগে ১৪ই জানুয়ারি কয়লা সংকটের কারণে এক মাস বন্ধ ছিল এই তাপ বিদ্যুৎরকন্দ্রটি। দ্বিতীয় বার যান্তিক ত্রুটির কারণে ১৫ই এপ্রিল রাত থেকে ২৩ দিন বন্ধ থাকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। কয়লাবাহী চীনের পতাকাবাহী এমভি জে হ্যায় জাহাজের শিপিং এজেন্ট দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, আমদানিকৃত ২৬ হাজার ৬২০ টন কয়লা নিয়ে চীনের পতাকাবাহী এমভি জে হ্যায় জাহাজটি গত ২১শে মে ইন্দোনেশিয়া থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসার ১৯ দিনের মাথায় জাহাজটি শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় পৌঁছায়।
এরপর সেখান থেকে জাহাজটি গতকাল ভোর ৫টার দিকে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ার-১১ নম্বর এ্যংকোরেজে ভিড়েছে। আউটার এ্যংকোরেজে হতে লাইটার জাহাজে কয়লা খালাস কাজ শুরু হয়েছে। চীনের এই জাহাজটি থেকে খালাসকৃত এ কয়লা লাইটার জাহাজে (নৌযান-কার্গো/কোস্টার) করে নেয়া হবে তাপ রামপাল মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে। তারপর এসব কয়লা স্বয়ংক্রিয় বেল্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কোল শেডে।
এর আগে গত ১৬ই মে বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেসে জাহাজে করে ৩০ হাজার টন ও ২৯শে মে এমভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি জাহাজে করে ৩০ হাজার ৫০০ টন কয়লা মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রামপাল মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে আনা হয়। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম জানান, বর্তমানে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার কোনো সংকট নেই। এক মাসের পর্যাপ্ত কয়লা মজুত রয়েছে। কয়লা আমদানিও করা হয়েছে। গতকাল ভোরে এই মৈত্রী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরও ২৬ হাজার ৬২০ টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের আউটার এ্যংকোরেজে ভিড়েছে চীনের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জে হ্যায়। কয়লার সংকটের কারণে প্রথমে গত ৫ই জুন পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ৯ই জুন বাঁশখালী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। কয়লা সংকটে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার দুঃসংবাদের মধ্যে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুখবর নিয়ে গতকাল ভোরে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে চীনের পতাকাবাহী ‘এমভি জে হ্যায়’ নামে কয়লা বোঝাই আরও একটি জাহাজ।