ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

হবিগঞ্জে গাছ কাটা ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে
৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে নির্বিচারে গাছ কাটা ও অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হবিগঞ্জবাসীর ব্যানারে শহরের প্রধান সড়ক কোর্ট মসজিদের সামনে অবরোধ করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ  লোকজন একাত্মতা পোষণ করেন। পরে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ ও হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নতির আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

অবরোধ চলাকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। অবরোধকালে সেøøাগান দেয়ার পাশাপাশি  প্লেকার্ড প্রদর্শন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধের সময় সহমত জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, আমরা এখানে গাছ রক্ষার জন্য কথা বলছি। আমরা হবিগঞ্জের বিদ্যুতের দুরবস্থার কথা বলছি। আমরা গাছের জন্য হবিগঞ্জে বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না। এরপরও গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। গাছ যেন কাটা না হয়  সেজন্য আইন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন
কিন্তু আইন প্রয়োগের ব্যাপারে তারা অবিবেচক হয়ে গাছগুলো কেটে  ফেলছে। হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে গাছগুলো না কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। ছোট গাছগুলোর আড়ালে শতবর্ষ পুরনো গাছগুলোও কাটা হচ্ছে। 

সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদ খাঁ বলেন, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পাইকপাড়া থেকে পুরান বাজার পর্যন্ত সামাজিক বনায়নের  দোহাই দিয়ে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। বর্তমানে যে তাপদাহের সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য গাছ  রোপণ করার পাশাপাশি বৃক্ষনিধন বন্ধ করতে হবে। গাছ কাটার পাশাপাশি অসহ্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে হবিগঞ্জবাসীর খুবই কষ্ট হচ্ছে।

ছাত্রনেতা ও শিক্ষার্থী প্রণব কুমার  দেব বলেন, আমরা ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ রোডে নির্বিচারে গাছ কাটার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি করেছি। আজ তার ধারাবাহিকতায় সড়ক অবরোধ করছি। গাছ কাটা মানুষ হত্যার শামিল। গাছ না থাকলে মানুষ বাঁচবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে রাস্তা উন্নয়নের জন্য এই গাছ কাটা হচ্ছে। কিন্তু গাছ কেটে  কোনো উন্নয়ন হয় না। এতে শুধু কিছু লোকের পকেট ভারি হবে।

সড়ক অবরোধস্থলে আসা হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন কার্যালয়ের উপসহকারী রাকিবুল ইসলাম জানান, হবিগঞ্জে বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন ১৯ মেগাওয়াট।  সেখানে আমরা পাচ্ছি ৭  মেগাওয়াট। যে অবস্থার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা এক সপ্তাহের মধ্যে নিরসন হবে আশা করছি।
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের ৮কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ২০০৪ সালে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে লাগানো হয়েছিল কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এই গাছের জন্য ধীরে ধীরে রাস্তাটি হয়ে উঠে অপরূপ। সবুজে আচ্ছাদিত গাছে বসে পাখিরা আশ্রয় নিতো। মনোরম পরিবেশে এ রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করতেন যাত্রীরা। কিন্তু ২ সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই কেটে ফেলা হয় বড় বড় গাছ। এমনকি ছোট গাছগুলোও রক্ষা পায়নি ঠিকাদারদের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে। 

হবিগঞ্জ বন বিভাগের আওতাধীন শায়েস্তাগঞ্জ অফিসের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহ আহাম্মেদ জানান, রাস্তা সম্প্রসারণ ও সামাজিক বনায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনামতে মেয়াদোত্তীর্ণ গাছগুলো কাটা হচ্ছে। তিনি জানান, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে ১ হাজার ২শ’ ৪৬টি গাছ কাটার জন্য টেন্ডার দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে কাটা হয়ে গেছে অন্তত ৫ শতাধিক গাছ।

এদিকে দেশে অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জেলা বিএনপি। দুপুরে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।  এ সময় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জিকে গউছ, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ প্রমুখ। বক্তারা অবিলম্বে বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান করে দেশবাসীকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান। পরে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর হাতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status