শেষের পাতা
সিলেটে প্রচারণায় যে সাজ দিচ্ছেন আনোয়ারুজ্জামান
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার
সিলেট আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। মাঠে আনোয়ারের প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসানও মাঠে সরব। এ কারণে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ‘হালকা’ ভাবে নিচ্ছেন না আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সতর্ক থেকেই মাঠ সাজাচ্ছেন। জনরায় পক্ষে নিতে চষে বেড়াচ্ছেন মাঠও। আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী মাঠ ছেড়ে দিলেও আওয়ামী লীগে এখনো ভয় আরিফকে ঘিরে। এই ভয় থেকে সিলেট আওয়ামী লীগের ভোটের সাজও ভিন্ন হচ্ছে। আরিফ মাঠে থাকলে যে প্রস্তুতি নিতেন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রার্থী ও তার দল আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে সতর্ক চোখ রাখা হচ্ছে দলীয় নেতাদের দিকেও। তারা জানিয়েছেন, সিটি নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ভরসা আওয়ামী লীগই। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের তরফ থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে। পাশাপাশি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ নামে চারটি জোনে ভাগ করা হয়েছে।
চারটি জোনেও আছে আলাদা কমিটিও। প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সিলেটে এসে এসব কমিটি গঠন করে যান। এর বাইরে ১৯০টি সেন্টার কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে চারটি উপ- কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিগুলো দিয়ে সিলেটে চলছে নৌকার প্রার্থীর ভোটের প্রস্তুতি। মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, এবারের মতো সিলেট আওয়ামী লীগ কখনো ঐক্যবদ্ধ হয়নি। আমি তো কারও পক্ষে কিংবা বিপক্ষে নই। সবার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে সিলেট আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী নৌকার বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। এবার সিলেটে আওয়ামী লীগ নৌকার বিজয় দেখতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের বাইরেও আছে আলাদা প্রস্তুতি।
যুবলীগ ও ছাত্রলীগ আলাদাভাবে ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. খালেদ শওকত আলীকে প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে যুবলীগের কেন্দ্রীয় শতাধিক নেতা গতকাল সিলেটে এসেছেন। তারা জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতৃত্ব স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। যুবলীগের নেতারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের একজন ও সিলেটের অপর তিন জেলার একজন নেতাকে নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির নেতারা প্রতিটি ওয়ার্ডে জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রচারণা চালাবেন।
গতকাল যুবলীগের বৈঠকে কমিটির প্রধান ড. খালেদ শওকত বলেছেন- গাজীপুরের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার কাজ চালাতে হবে। নৌকার ব্যাজ পরে যাতে অন্য কেউ সুবিধা না নিতে পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি জানিয়েছেন, যুবলীগ সিলেট নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে প্রতিটি ঘরে ঘরে নৌকার প্রার্থীর প্রচার পৌঁছাবে। এজন্য যুবলীগ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে প্রচারণা খুব দ্রুত শুরু হবে। এদিকে- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে আলাদা কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে প্রচারণা চালাবে। সিলেট ছাত্রলীগের নেতারা জানিয়েছেন, প্রচারণা শুরুর প্রথম দিন থেকে ছাত্রলীগের নেতারা ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকার প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিশেষ করে দায়িত্বশীল নেতারা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচারণায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দুই শতাধিক প্রবাসী দেশে এসে প্রচারণা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে তারা নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। গতকাল ওসমানীনগর এলাকার ৫০ জনের মতো প্রবাসী লন্ডন থেকে সিলেট এসে পৌঁছেছেন।
যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ খান ও লন্ডন মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক আহমদ জানিয়েছেন, আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে ভোট প্রচারণা চালাতে হাজারো প্রবাসী সিলেটে আসছেন। ইতিমধ্যে ৫ শতাধিক প্রবাসী দেশে এসেছেন। তারা এসে আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে পাড়া-মহল্লায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। সিলেটে প্রচারণায় শুধু যুক্তরাজ্য প্রবাসীরাই নয় যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রবাসীরা আসছেন বলে জানিয়েছেন তারা।