খেলা
মুশফিক বললেন, ‘সব মিলিয়ে আমি ভাগ্যবান’
স্পোর্টস রিপোর্টার
৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার
সবশেষ জাতীয় ক্রিকেট লীগে ৬ ম্যাচে বল হাতে ২৫ উইকেট নেন মুশফিক হাসান। এরপর বিসিএলে ৭ ম্যাচে নেন ১৬ উইকেট। বলার অপেক্ষা রাখে না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের পারফরম্যান্সই তাকে নিয়ে এসেছে জাতীয় দলে। কিন্তু বড় পরিসরে সুযোগেও এই তরুণের যে ঘোর কাটেনি। সংবাদ মাধ্যমে কথা বলতে এসে তার কণ্ঠে কাঁপন।
সংবাদকর্মীরা অভয় দিলেও খুব একটা কাজ হয়নি। কথা বলতে বলতে বার বার থেমে যাচ্ছিলেন তিনি। হয়তো তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, তাসকিন আহমেদদের মতো বড় তারকাদের সামনে নিজেকে কিভাবে মেলে ধরবেন তাও বুঝতে পারছিলেন না। তার মধ্যে দলের অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। পেয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের অভিনন্দনও। যা তার জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।
চোটের কারণে টেস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্কোয়াডে নেই সাকিব আল হাসান। ভাঙা আঙুল নিয়ে এখনো স্কিল অনুশীলন শুরু করতে পারেননি। তবে গতকাল মিরপুরে সতীর্থদের অনুশীলনে হাজির হন। সেখানেই তরুণ মুশফিককে অভিনন্দন জানান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার । টাইগার শিবিরে তার দুয়ার খুলেছে দেশের প্রথম শ্রেণির ম্যাচে লাল বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্সে।
বাংলাদেশ ‘এ’ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের চারদিনের সিরিজেও দারুণ পারফরম্যান্স তার। শুধু বল হাতেই নয় ফিল্ডিংটাও যে অসাধারণ। তার এই দক্ষতাও বড় বিবেচনায় নিয়েছে নির্বাচকরা। নিজের ফিল্ডিং নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘আমি ফিল্ডিং বেশি বেশি করার চেষ্টা করি যাতে দলের জন্য ভালো কিছু হয়। ভালো ক্যাচ, ফিল্ডিং মিলিয়ে প্রভাব রাখার মতো ফিল্ডার হওয়ার ইচ্ছে নিয়েই মাঠে নামি।’ তবে লাল বলে তার পারফরম্যান্সটাও যে তার স্বপ্ন পূরণের শক্তি তাও জানেন ভালো করে। ২০ বছর বয়সী এই তরুণ পেসার বলেন, ‘গত এনসিএল, বিসিএল আমার ভালো মৌসুম কেটেছে আলহামদুলিল্লাহ। হয়তো এই সুবাদে আমাকে জাতীয় দলে ডেকেছে। বছরটা আমার জন্য ভাগ্যবান ছিল। শুকরিয়া আলহামদুলিল্লাহ আমি কল পেয়েছি। আমি মনে করি, আমি ফার্স্ট ক্লাস অনেক ভালো খেলেছি। এইজন্য হয়তো ভালো খেলার সুবাদে আমাকে কল করেছে।’
এছাড়াও ‘এ’ দলে সুযোগ পেয়ে ঘরোয়া লীগের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন মুশফিক হাসান। তিনি বলেন, ‘পার্থক্য বলতে আমার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, এনসিএল, বিসিএল যেভাবে খেলেছিলাম, সেখানেও ওভাবে খেলেছি। যদি আমি জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেভাবেই খেলব।’ সবশেষ যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা এই তরুণের গত বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়।
এরপর খেলেছেন ১৩ ম্যাচ, তাতে উইকেট নিয়েছেন ৪৯টি। তবে আন্তুর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে তাকে দারুণ কিছু করে দেখাতে হবে বল হাতে। জাতীয় দলে ডাক নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘নির্বাচকরা যেটা ভালো মনে করেছেন সেটা করেছেন। আমি ভেবেছিলাম আমার সুযোগ আসবে। কিন্তু ওরকম প্রত্যাশা ছিল না যে আমি এতো দ্রুত জাতীয় দলে ডাক পাবো। তবে আমি আমার প্রক্রিয়ায় থাকার চেষ্টা করি সবসময়।’
এই তরুণের পছন্দের পেস বোলার কাগিসো রাবাদ। কিন্তু বিদেশি কাউকে অনুসরণ করলেও তিনি মনে করেন দেশের ক্রিকেটে তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমানরাই এখন সবার জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, ‘ আমি রাবাদাকে অনুসরণ করি যখন উনি অনূর্ধ্ব-১৯ খেলছিলেন। উনার অ্যাকশন, আমার অ্যাকশন কাছাকাছি হয়তো। উনার রানআপ, আগ্রাসন সবকিছুই ভালো লাগে।
সে কারণে উনাকে ফলো করি। তবে আত্মবিশ্বাস না থাকলেতো এখানে আসতে পারতাম না। তাই না? বড় ভাইরা ভালো করতেছে আমরা দেখে অনুপ্রাণিত হই। সত্যি কথা বলতে এখন বাংলাদেশের পেসারদের দেখেই অনেক কিছু শেখার আছে। উনারা অনেক পরিশ্রম করে। উনারা আমাকে অনেক সাহায্য করছে, অনেক বেশি সহায়ক। আমি মনে করি সব মিলিয়ে আমি ভাগ্যবান।’