শেষের পাতা
সিলেটে ইসি’র ভূমিকায় প্রশ্ন মাহমুদুলেরও
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৭ জুন ২০২৩, বুধবার
সিলেট সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলেছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান। তার মাইক ভাঙচুরের লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও নির্বাচন কমিশন থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। কয়েকদিন আগে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলও একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন। তার এক কর্মীকে প্রচারণাকালে মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে- নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন; নির্বাচনের মাঠে ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন রয়েছেন। তাৎক্ষণিক তাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিন জন রয়েছেন আলোচনায়। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান। এই তিন প্রার্থী চষে বেড়াচ্ছেন নগর।
গতকাল প্রচারণাকালে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান। তিনি সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছেন- ‘কুমারগাঁও এলাকায় আমাদের এক কর্মীকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এবং গত সোমবার রাতে নগরের ১১নং ওয়ার্ডের কুয়ারপাড় এলাকায় আমাদের গাড়িকে দুমড়ে-মুষড়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের মাইকিংয়ের যে সেট ছিল সেগুলো ফেলে দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন- ‘আমরা মনে করি জনগণের এই জোয়ার দেখে উনারা ভয় পেয়েছেন। ভয় পেয়ে উপায়ান্তর না দেখে আমাদের ওপর এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন- ‘আমরা এই ঘটনাগুলো লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশন অফিসে দায়ের করতে গেলে আমাদের কোনো অভিযোগ তারা গ্রহণ করেননি। আমাদের অভিযোগকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি দাবি করেন- ‘আমরা উপস্থিত সময়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা সেটাও পাইনি এবং নির্বাচন অফিসের সহযোগিতাও পাইনি।’ তিনি ভোট প্রচারণায় ইভিএম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। বলেন- ‘আমরা প্রথম থেকে ইভিএম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছি। আমরা গণমানুষের সংগঠন করি। গণমানুষের সঙ্গে আমরা কথা বলি, গণমানুষের কথাই আমরা মানুষকে বলি। গণমানুষের কাছে আমরা যাচ্ছি, তাদের কথা শুনছি। গণমানুষ ইভিএম নিয়ে এখনো সন্তুষ্ট না। ইভিএম বিষয়ে নির্বাচন অফিস তাদের আশ^স্ত করতে পারেনি। তারা এখনো সন্দিহান ইভিএমে তারা যে জায়গায় ভোট দেবেন সেই ভোট সঠিক জায়গায় যাবে কিনা।’ এদিকে- অভিযোগের ব্যাপারে সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার মিডিয়া সেলের প্রধান ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচনী কর্মকর্তা তারেক আহমদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘কেউ মৌখিকভাবে অভিযোগ দিলে সেটি অনেক ক্ষেত্রে সেটি গ্রহণ হয় না। মৌখিক অভিযোগ দেয়ার জন্য মাঠে ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করছেন।
প্রার্থীকে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা তারা দিতে পারেন। তবে- কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেন সেটি অবশ্যই আমলে নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এবং হচ্ছেও। নির্বাচন অবাধ করতে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে বলে জানান তিনি।’ এদিকে- গতকালও প্রচারণাকালে মাঠের পরিবেশ ও মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা নিয়ে প্রশংসা করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন- সিলেটের ভোট উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ৭ জন প্রার্থীসহ সকল কাউন্সিলররা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী কর্মকা- চালাচ্ছেন। সম্প্রতি এই শহরে সবাই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে- জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের প্রধান সমন্বয়ক ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘শামীমাবাদে আমাদের কর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় নির্বাচন কমিশন কিংবা পুলিশ কারও সহযোগিতা পাইনি। তারা কোনো অভিযোগ নেন না। বরং মাঠে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন বলে দায় এড়িয়ে যান।’ তিনি বলেন- ‘নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে লেমিনেটেড ছাড়া ব্যানার ও পোস্টার সাঁটাতে হবে। আমরা কমিশনের কথা শুনছি। কিন্তু অন্যরা শুনছেন না। তারা লেমিনেটেড করা ব্যানার ও পোস্টার সাঁটিয়েছেন। ফলে সিলেটে ভোটের মাঠের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তার।’ জানান- ‘এখনই বিতর্কিত ভূমিকা, ভবিষ্যতে কী হতে পারে সেটি এখনই আন্দাজ করা যাচ্ছে।’