ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

জাবি ছাত্রলীগের নির্যাতন

‘ওইদিনের নির্যাতনের কথা মনে পড়লে আমার গায়ে এখন কেঁপে কেঁপে ওঠে’

জাবি প্রতিনিধি
৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার

‘বড় ভাইরা আমাকে নিয়ে পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠেছিল। রড, অস্ত্র, স্ট্যাম্প নিয়ে আমার ওপর হামলে পড়েছিল। তাদের অট্টহাসি এখনো আমার কানে বাজে। তারা অসুস্থতা বুঝে না, তারা চায় অনুগত কর্মী। আজ ১৩ দিন আমি ক্যাম্পাস ছাড়া। ওইদিনের নির্যাতনের কথা মনে পড়লে আমার গায়ে এখন কেঁপে কেঁপে ওঠে।’ এমন অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সায়েম হাসান সামি। গত ১৬ ও ১৭ই মে শহীদ সালাম-বরকত হলের অতিথি কক্ষে ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত হয় এই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ২২শে মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর তিনি লিখিত অভিযোগ দেন।  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশানুরূপ ব্যবস্থা না নেয়ায় গত ৪ঠা জুন ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেয়া ওই লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ১৬ই মে কানে অস্ত্রোপচারের কারণে ওইদিন গেস্টরুমে  না যাওয়ায় শহীদ সালাম-বরকত হলের পলিটিক্যাল ব্লকে ডেকে নিয়ে তাকে মারধর করা হয়। পরদিন হল ছেড়ে দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মাবরুক আল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য তানভীর হাসান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আকিব শাহরিয়ার গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে তাকে মারধর করেন।

বিজ্ঞাপন
সেখানে উপস্থিত সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, খন্দকার সাজ্জাদ কবির, রাতুল রায়, মাবিবুল আলম মুঠোফোনের ভিডিও ক্যামেরা অন করে শিবির, ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত জোর করে এমন স্বীকারোক্তি নিতে চেষ্টা করেন। আকিব মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরেন।

নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার পকেটে ইয়াবা বড়ি ও আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকিয়ে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করতে চান। তিনি চিৎকার করে হলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে, না হয় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার ভয় দেখান। পরে তাকে হলের পলিটিক্যাল ব্লক থেকে কোথাও না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এবং নজরদারিতে রাখা হয়। ১৯শে মে মাথা, কান ও হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসার কথা বলে সাভার রেডিও কলোনিতে মামার বাসায় চলে যান তিনি। পরে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। 

ভুক্তভোগী সায়েম হাসান সামি আরও বলেন, ‘আমাকে নির্যাতন করে ৬৩ ঘণ্টা নজরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। রুমে আটকে রাখা হয়েছিল। জোর করে মিছিলে নিয়েছে। আজ ১৩ দিন হলেও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন আমার সঙ্গে কথাও বলেনি, ব্যবস্থাও নেয়নি। আমি ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এর বিচার চাই।’ অভিযুক্ত রিয়াজুল ইসলাম ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা তো ঘটেনি। অভিযোগ দিয়েছে কবে? আমার জানা নেই, দেখি খোঁজ নিতে হবে।’

আকিব শাহরিয়া সিজান বলেন, সাত-আটজন ছেলে নিয়ে সে অন্য হলে চলে যেতে চাইলে আমরা শুধু তার কারণ জিজ্ঞেস করি। এর বাইরে কিছুই হয়নি। শহীদ সালাম-বরকত হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ মো. মাহিবুবুল মোর্শেদ বলেন, ‘ওই ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ইতিমধ্যে বৈঠক করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবো।’

 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status