শেষের পাতা
গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চ শুরু
‘মানুষ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে’
নাজমুল হুদা, রোডমার্চ বহর থেকে
৫ জুন ২০২৩, সোমবার
ঢাকা থেকে দিনাজপুর-রংপুর অভিমুখে ৪ দিনব্যাপী রোডমার্চের যাত্রা শুরু করেছে বিএনপি’র সঙ্গে আন্দোলনে থাকা জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় রোডমার্চের প্রথম দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর প্রেস ক্লাব থেকে মৎস্যভবন পর্যন্ত পদযাত্রা করেন নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে গাড়িতে করে দুপুর ১টার দিকে গাজীপুরে পৌঁছায় রোডমার্চের বহর। এরপর বেলা দেড়টার দিকে গাজীপুর চৌরাস্তায় সমাবেশ করেন। এরপর বিকাল সাড়ে ৫টায় টাঙ্গাইলে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে এদিনের কর্মসূচি শেষ হয়।
রোডমার্চে অংশ নিয়ে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, জেএসডি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন পাটোয়ারী প্রমুখ।
সাইফুল হক বলেন, রংপুর নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। গাজীপুরের মানুষও ভোট চোরের প্রতীককে সমর্থন করে নাই। সারা দেশে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটবে। মানুষ যেখানে সুযোগ পাচ্ছে সেখানেই নৌকাকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। গতকাল বেলা দেড়টায় ঢাকা থেকে দিনাজপুর অভিমুখী রোডমার্চের অংশ হিসেবে গাজীপুরে প্রথম সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, গণআন্দোলকে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করে সরকারকে পদত্যাগে মানুষ বাধ্য করবে। সরকার দেশ চালাতে পারছে না। এই সরকার ভোট চোর। সামনে যেসব জায়গায় সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে সেখানে ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোট হলে মানুষ নৌকা ডুবিয়ে দেবে।
সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমরা মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য রোডমার্চ শুরু করেছি। আমরা দীর্ঘদিন রাস্তায় লড়াই করছি এই সংবিধান সংস্কার করার জন্য। এই সংবিধানে সবকিছুই ওই একজন ব্যক্তি করতে পারে। রাষ্ট্রপতিও নির্বাচিত করতে পারে। তাই আমাদের এই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের রোডমার্চ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কর্মসূচি। এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। আমাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য, চিন্তা, কর্মসূচি জনগণের সামনে তুলে ধরতে চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে এই সংকট আমাদের দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলছে। শুধু নাগরিক হিসেবেই নয়, দেশ হিসেবে আমরা আমাদের সার্বোভৌমত্ব, মর্যাদা ও অস্তিত্বের সংকটের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি। সেখান থেকে উদ্ধার পেতে হলে আমাদের দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বদলাতে হবে। আমাদের দেশের সাংবিধানিকভাবে সংসদের ক্ষমতা কাঠামো, সরকারের ক্ষমতা কাঠামো, বিচার বিভাগের ক্ষমতা কাঠামো এই সবগুলো বদলাতে হবে।
৫ই জুন সকালে সিরাজগঞ্জ ও বিকালে বগুড়ার মোকামতলায় সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। ৬ই জুন সকালে বগুড়ার সাতমাথায় ও বিকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সমাবেশ হবে। ৭ই জুন সকালে দিনাজপুরে ও বিকালে রংপুরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রোডমার্চ চলাকালীন কিছু অনির্ধারিত পথসভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।