নির্বাচন নিয়ে আলোচনা

বিএনপি’র সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। গতকাল সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ অংশ নেন। বৈঠকে আগামীর নির্বাচন, অর্থনীতি ও মানবাধিকার বিষয়ক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। ৪০ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে, সেটি জানার ও বোঝার চেষ্টা করছে জাপান বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

তিনি বলেন, জাপানের রাষ্ট্রদূত অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং সেখানে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশনের প্রস্তুতির কথা তিনি জানতে চেয়েছেন।  বিএনপি’র সঙ্গে বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, জাপানের রাষ্ট্রদূত কিছুদিন আগে এখানে এসেছেন। উনি আমাদের সঙ্গে কার্টেসি কল করতে এসেছেন। জাপান-বাংলাদেশ রিলেশনশিপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি’র সময়, আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম প্রচুর বিনিয়োগ জাপান থেকে এসেছে।

প্রচুর অবকাঠামোগত বিনিয়োগ বাংলাদেশে হয়েছে সেই সময়। 

আমাদের যেহেতু মুক্তবাজার অর্থনীতি, যেটি বিএনপি বাংলাদেশে শুরু করেছে। একদলীয় শাসনের পর থেকে জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তারা দেখতে চায় সরকার বদল হলেও যাতে এটা অব্যাহত থাকে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, বর্তমানে মানবাধিকার, যেগুলো নিয়ে আজকে সবার কনসার্ন; স্বাভাবিকভাবে তাদেরও তো কনসার্ন থাকার কথা। তারা জানতে চাচ্ছে বাংলাদেশে কী হচ্ছে? আগামী দিনে কী হতে যাচ্ছে? এটা তারা বোঝার চেষ্টা করছে। 

যেহেতু তাদের অনেক বিনিয়োগ আছে এখানে। বেসরকারি খাতে আছে, সরকারের পক্ষ থেকে আছে, অবকাঠামোতে আছে, স্বাভাবিকভাবে এগুলো তো আলোচনায় এসেছে। বিএনপি’র পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে যা হচ্ছে তাই বলেছি।  সেগুলো বলা যাবে কিনা জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, সেগুলো বলা যাবে না। জাপান প্রথম জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়াকে গাড়ি উপহার দিয়েছিল। সেই জাপানের প্রতিনিধি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন কিনা গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, সার্বিকভাবে সবকিছু... বাংলাদেশে যে আজকে আইনের শাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা সবগুলো কনসার্ন বিশ্ববাসীর আছে, দেশের মানুষের আছে। স্বাভাবিকভাবে তাদেরও থাকারই কথা। জানতে চাচ্ছে কী হচ্ছে, কী হতে যাচ্ছে। 

আগামী দিনের বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আগামী দিনে বিনিয়োগের পরিবেশ। এখন যে অবস্থার মধ্যদিয়ে আমরা যাচ্ছি, সবার মধ্যে তো একটা আশঙ্কা কাজ করছে। সুতরাং শঙ্কামুক্ত হওয়ার জন্য আগামী দিনের বাংলাদেশ কী রকম হবে, নির্বাচনটা কী রকম হবে এগুলো সবাই জানার ও বোঝার চেষ্টা করছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, আমার তো মনে হয়, সব গণতন্ত্রকামী দেশ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের সদিচ্ছা ব্যক্ত করেছে ইতিমধ্যে। জাপান তো আলাদা কোনো দেশ না! বাংলাদেশে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে-যায় না প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, কে কোন দেশে যাবে কী যাবে না সে সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর নয়, জনগণ নেবে। এ ছাড়া বৈঠকে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন জাপান দূতাবাসের প্রথম রাজনৈতিক সচিব মিস ইগাই।