অনলাইন
গুজব, খালেদা মুক্তি পাবেন
স্টাফ রিপোর্টার
(২ মাস আগে) ২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবার, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:৪৮ অপরাহ্ন

গুজবের কারখানা চালু হয়ে গেছে। নির্বাচন এলেই দলবদল আর গুজব মাঠ দখল করে নেয়। এখন প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে তরতাজা গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকি রাজনীতিকরাও এই কাফেলায় যোগ দিচ্ছেন। বলা হয়ে থাকে- গুজবে কান দেবেন না। তারপরও কেন গুজব ছড়ায়। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। রাত থেকে শুনছি, নির্বাচন নাকি তিন মাস এগিয়ে এনে অক্টোবরে স্থির করা হচ্ছে। এর পেছনে কী যুক্তি? বিরোধীদের অপ্রস্তুত রেখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলে অনেকেই নির্বাচনমুখী হয়ে যাবেন। বিরোধীদের আন্দোলন মাঠে মারা যাবে।
ইনসাফ কায়েম কমিটির আলোচিত ‘শেরাটন ডিনার’ নিয়ে টানটান গুজব। এই ডিনারের আয়োজক শওকত মাহমুদ ইতিমধ্যেই বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ পাননি। এর আগে অবশ্য দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দু’দফা শোকজও হয়েছিলেন। ইনসাফের ডিনারে যোগ দিতে এসে অনেক রাজনীতিক নিজ দলের মধ্যেই ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছেন। এরমধ্যে ড. রেজা কিবরিয়া অন্যতম। যদিও তিনি বলছেন, ডিনারের কথা বলেই তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। গণঅধিকার পরিষদ এই যুক্তি মানতে রাজি নয়। তারা বলছে, এক ব্যক্তির ডিনারের দাওয়াতে কোনো হিসাব-নিকাশ ছাড়াই তিনি সেখানে গেছেন তা মেনে নেয়া যায় না। তাদের কথা, এটা একটা চেনা শক্তির নব-কৌশল। এই শক্তির আরেক কৌশলে পা দিয়ে রেজা কিবরিয়া রাজনীতির ময়দানে অনেকটাই কোণঠাসা। নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না এখন বলছেন, এটা ছিল তার ভুল সিদ্ধান্ত। তার দলের একাধিক নেতা বলছেন, আমাদের নেতা কেন অদৃশ্য শক্তির ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন না- এটা আমরা বুঝতে পারি না। সিআইএ’র সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এমন কথা বলে এক ব্যক্তি ঢাকার এক শ্রেণির রাজনীতিকদের পুতুল নাচ নাচাচ্ছেন। কখনো ব্যাংককে, কখনো ঢাকায় বৈঠক করে এমন ধারণা দিচ্ছেন- কাল সকালেই যেন ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে। একজন মার্কিন কূটনীতিক বলছেন, এটা বোগাস এবং হাস্যকর। সিআইএ এ ধরনের কোনো নোংরা খেলার সঙ্গে যুক্ত নয়। এরপরও রাজনীতিকরা বুঝেন না, বিভ্রান্ত হন। কিন্তু কিসের জন্য? বলাবলি আছে, কিছু গোপন ‘সুযোগ-সুবিধা’ তাদের নাকি বিভ্রান্ত করে। তবে এই শক্তির পরিচয় এখন জানাজানি হয়ে গেছে।
পাঠকের মতামত
যে যত লাফালাফি ঝাপাঝাপিই করুক, সরকারি দল তথা আওয়ামী লীগ রয়েছে চরম সুবিধাজনক অবস্থায়। আওয়ামী লীগ দল হিসেবে জন্মের পর থেকেই চলে বাস্তব অবস্থার উপর ভিত্তি করে, আর বিএনপি বরাবরই চলে কল্পনার জগতে। যার ফলশ্রুতি আমরা দেখতে পারছি। বিএনপি কোনদিনই কোন আন্দোলনে জিততে পারে নাই। এর আগে তারা জামাত হেফাজত কে নিয়ে চেষ্টা করেছিলো। ফলাফল শুন্য। এখনও তক বিএনপির চলমান আন্দোলন সফল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। নির্বাচন এসে গেলে সুর সুর করে সবাই নির্বাচন এ চলে যাবে। যদি বিএনপি ২০১৪ সালের মত ভুল করে তাহলে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু বিদেশি কিছু ধান্ধাবাজ কুটনীতিক আর এদেশের কিছু রাজাকার শ্রেণীর মানুষের আস্ফালনে বিএনপির ছায়ার সাথে যুদ্ধ করার সামিল। যোগ্য নেতৃত্ত ছাড়া এই দুনিয়ায় কোথাও কোন কিছু অর্জন হয় নাই। বিএনপি জামাত যদি নেতৃত্ত ছাড়া এই সরকার কে সরাতে পারে তাহলে সেটা হবে নতুন ইতিহাস যা বিএনপির তথাকথিত নেতারাই বিশ্বাস করে না। একটা কথা মনে রাখতে হবে- মানুষ কে কিছুদিনের জন্য বোকা বানিয়ে রাখা যায়, সব সময়ের জন্য নয়।
বিএনপি কে ১০০ আসন ছাড়ের এবং নেত্রীকে সুধু রাজনীতি করার সুযোগ দেয়াতে সামনের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। খা...বা নো এলাও..…
রাজনৈতিক বদান্যতা কেবল স্বার্থ হাসিলের উপলক্ষ মাত্র । "রাশির বিমতি হলে আবার নেব জেলে"- তবে সত্য লুকালে মিথ্যার ঢালপালা বাতাশের বেগে ছড়ায়।
গুজব না, আবার সত্যি হলে হতেও পারে ? সরকার পশ্চিমাদের সন্তুষ্টি করার লক্ষ্যে খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিয়ে নামে মাত্র নির্বাচন করতে পারেন ? এতে গুজবকে গুজব বলে উড়িয়ে না দিয়ে সত্য বলে ধরা যেতেও পারে।
সরকারের পাবনায় যাবার যৌক্তিক কারণ না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার কথা নয়। খালেদা জিয়ার পরিবার আর অন্যের পরিবার এক নয়। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দিলেও বিএনপির যে লাভ হবে তার ধাক্কা সামলানোর ক্ষমতা সরকারের নাই। যা মুক্ত খালেদার প্রথম জনসভাতেই প্রমাণ হবে। গত ১৩ বছরে বিএনপিকে ভাংতে কম চেষ্টা হয়নি। কিন্তু বিএনপি ঠিকই আছে, এবং আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে, যার প্রমাণ বিগত অনেকগুলো জনসভা। এদেশে একমাত্র খালেদা জিয়া-ই মানুষের নাড়ীর আওয়াজ বুঝতে পারেন, এই ক্ষমতা আর কারো নাই। এক কথায় খালেদা জিয়া সফল নেত্রী এবং সফল মা। খালেদার অবর্তমানে বিএনপির হাল ধরার একাধিক বিকল্প তৈরী হয়ে আছে, যা অন্য পার্টিতে নেই। বিএনপি যে জাতীয় পার্টি নয়, এটা সরকার মনে রাখলে সরকারেরই লাভ।
নগদে কি না হয়? নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এমন নতুন নতুন চমক আরো আসতেই থাকবে। যে যার কৌশল নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে নিজেদের ফায়দা লুটার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে। সরকার এই ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্হায় আছে। ওরা ক্ষমতায় থেকে ভবিষ্যত লোভের টোপ দিতে পারবে। বিরোধীদল ভবিষ্যতের স্বপ্নের আশা দিয়ে লোভের টোপ দিবে। আমরা নগদে বিশ্বাষিরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশা না করে নগদ লুফে নিবো। এটাই আমার মানসিকতা, আমাদের চরিত্র।
ইনসাফ! যার অর্থ সুবিচার বা ন্যায়বিচার। যে বিচার পক্ষপাতহীন সেটাই সুবিচার। কুরআনু কারিমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, "হে ঈমানদারগণ! সত্যের ওপর স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত ও ইনসাফের সাক্ষ্যদাতা হয়ে যাও। কোন দলের শত্রুতা তোমাদেরকে যেন এমন উত্তেজিত না করে দেয়, যার ফলে তোমরা ইনসাফ থেকে সরে যাও। ইনসাফ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠিত করো। এটি আল্লাহভীতির সাথে বেশী সামঞ্জস্যশীল। আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে থাকো। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত আছেন।" সুরা: আল-মায়িদাহ, আয়াত-৮। আল্লাহ কেবল এতটুকু বলেই ক্ষান্ত হননি যে, তোমরা ইনসাফের দৃষ্টিভংগী অবলম্বন করো এবং ইনসাফের পথে চলো বরং বলেছেন তোমরা ইনসাফের পতাকাবাহী হয়ে যাও। কেবল ইনসাফ করাই তোমাদের কাজ হবে না বরং ইনসাফের ঝাণ্ডা নিয়ে এগিয়ে চলাই হবে তোমাদের কাজ। জুলুম খতম করে তার জায়গায় আদল ও সুবিচার প্রতিষ্ঠিত করতে তোমাদের দৃঢ় সংকল্প হতে হবে। আদল ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য যে সহায়ক শক্তির প্রয়োজন মু’মিন হিসেবে তোমাদের যোগান দিতে হবে সেই সহায়ক শক্তি। বাংলাদেশের একজন কবি ও বুদ্ধিজীবি রাখ ডাক না রেখে 'ইনসাফ' কায়েমের আওয়াজ তুলেছেন। তাঁর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়না। যদি তিনি কমিউনিস্ট আদর্শের ধারক বাহক ছিলেন, বর্তমানে ধর্মকর্ম করেন। তাঁর সঙ্গে জড়িত আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে, যেখানে মানবতা, মানবিকতা, গনতন্ত্র, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার, সেখানে আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ সন্দেহ নেই। কিন্তু, তাঁদের এই পদক্ষেপ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দেশবিদেশের সবাই জানে বাংলাদেশে বিগত দুটি নির্বাচন- আসলে কোনো নির্বাচনই হয়নি। জনগণকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তারই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, "নির্বাচন এখন আইসিইউতে আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গণতন্ত্র এখন লাইফ সাপোর্টে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।"(প্রথম আলো, ১৪ নভেম্বর ২০২১) তাছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এতোটাই অমানবিক যে গুমখুন, বিরোধী মতের লোকজনদের উপর নিপীড়নের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে, লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে 'গায়েবি' নামের মামলা দিয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া করা হয়েছে, বাজার ব্যবস্থায় সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি করে সীমাহীন লুটপাট করা হয়েছে, ব্যাংক খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটিয়ে নেয়া হয়েছে এবং বিদ্যুতের দুর্নীতি ব্যপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এসব বেইনসাফের বিরুদ্ধে কোনো কথা না বলে আয়োজকেরা বলেছেন নির্বাচনের আগে সর্বদলীয় সরকার গঠন করারা কথা। অথচ প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তাঁদের সমমনা দলগুলো বেইনসাফের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আর তথাকথিত ইনসাফ কায়েমের উদ্যোক্তারা গনতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কিছুই বললেন না। তাঁরা জাতীয় সরকারের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হলেন। তাই মনে করা যায়, 'ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়'। ইনসাফ কায়েম করতে হলে সর্বপ্রথম একটি সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরেয়ে দিতে হবে। বিরোধী মতের দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে যে দল বিজয়ী হবে তাঁদের স্বাগতম। কিন্তু নির্বাচনের রিহার্সাল দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করলে গনতান্ত্রিক দুনিয়া থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং শাসক শ্রেণি স্বর্গসুখে থাকলেও জনগণের জীবন জীবীকা বিপন্ন হবে। ফলে ইনসাফের বদলে বেইনসাফের প্লাবনে ভাসতে ভাসতে স্বর্গসুখ একসময় জাহান্নামের অগ্নিকুণ্ডলীতে পরিণত হবে। এখন ইনসাফের ফেরিওয়ালারা ভেবে দেখতে পারেন- কি করবেন?