প্রথম পাতা
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা
নৈশভোজ থেকে বিএনপি’র ৫৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
স্টাফ রিপোর্টার
২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবাররাজধানীর বনানী ক্লাবে দাওয়াত খেতে এসে আটক মুন্সীগঞ্জ বিএনপি’র ৫৪ নেতাকর্মীকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আটক সবাই মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মী। গত রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে বনানী ক্লাবের তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। ডিবি’র সঙ্গে ওই অভিযানে বনানী থানা পুলিশও অংশ নেয়। পুলিশের দাবি, আটক সবাই সেখানে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছিল। তাই তাদেরকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মমিন আলী, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হেসেন এবং সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন রয়েছেন। মমিন আলী গত জাতীয় নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন।
বিএনপি’র সূত্রগুলো বলছে, মুন্সীগঞ্জের ওই দুই উপজেলার নেতাকর্মীরা রাষ্ট্রবিরোধী কোনো বৈঠক করেনি। মমিন আলী ওমরাহ হজ পালন করতে সৌদি আরবে যাবেন। তাই তিনি এলাকার নেতাকর্মীদের নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
ডিবির ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম রেজাউল হক মানবজমিনকে বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আসে বনানী ক্লাবে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছে। পরে আমরা সেখানে অভিযান চালিয়ে ৫৪ জনকে আটক করেছি। সংখ্যায় তারা আরও বেশি ছিল। কিন্তু সবাইকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সবাইকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাইলে আদালত প্রত্যেকের দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিমাণ্ডে এনে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো।
বনানী থানা সূত্র জানিয়েছে, রোববার রাতের ওই ঘটনায় ডিবি ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ইকরামুল হক হালদার বাদী হয়ে যে মামলাটি করেছেন সেখানে ৫৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে দু’জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে করণীয় বিষয় নির্ধারণের জন্য একত্রিত হয়। গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জনসাধারণের মাঝে ও সরকারি স্থাপনা এবং যানবাহনে নাশকতামূলক কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি গ্রহণ করে সন্ত্রাসবিরোধী অপরাধ করেছে।
এদিকে, ঢাকার বনানী ও নেত্রকোনা থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশটা এখন আওয়ামী লীগের পৈতৃক সম্পত্তি। দেশের মানুষকে ব্যক্তিগত কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানেও বাধা দেয়া হচ্ছে। সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি গিয়ে প্রতিনিয়ত তল্লাশির নামে হয়রানি করা হচ্ছে। অবৈধ সরকার বিরোধীদল শূন্য করে নিজেদের একচ্ছত্র শাসন দীর্ঘায়িত করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। এ কারণেই তারা এখন বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।