শেষের পাতা
আগের সীমানা ঠিক রেখেই খসড়া প্রকাশ করবে ইসি
স্টাফ রিপোর্টার
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৩০০ আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। মূলত গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যে সীমানা ছিল, সেটাকে খসড়া আকারে প্রকাশ করা হবে। এই সীমানার ওপর দাবি-আপত্তি থাকলে তা জানানোর জন্য একটা সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুসারে, সংসদীয় আসনের সীমানায় খুব বড় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের ইসি’র এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। ইসি সচিব বলেন, ইতিমধ্যে অনেকেই নিজ উদ্যোগে দাবি-আপত্তির আবেদন দিয়েছেন। প্রায় ২০ থেকে ২৫টি আবেদন এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে সমস্ত আবেদন পড়বে, সেগুলো নিয়ে শুনানি করে বিধিবিধানের আলোকে চূড়ান্ত আসন সীমানা ঘোষণা করা হবে। আগামী নির্বাচনের আগে সংসদীয় সীমানায় কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি প্রাপ্ত আবেদনের সংখ্যার ওপর নির্ভর করবে, আমরা আগে খসড়া প্রকাশ করবো।
পরে চূড়ান্ত হবে কয়টা আসনের সীমানা পরিবর্তন হচ্ছে। খসড়া কবে নাগাদ প্রকাশ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্রুতই প্রকাশ করা হবে। এটা আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই করে দেবো। বাস্তবতা এবং আইনের বিষয়টাও তাই। আগে তো মানুষকে জানাতে হবে। তারপর তাদের কোনো আপত্তি থাকলে তার ওপর শুনানি হবে। জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন অনুযায়ী, প্রতি জনশুমারির পর সংসদ নির্বাচনে সীমানা নির্ধারণ করার বাধ্যবাধকতা আছে। এ বছর ৩১শে অক্টোবর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। ২৯শে জানুয়ারির মধ্যে হবে সংসদ নির্বাচন। এর ছয় মাস আগেই ৩০০ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করার পরিকল্পনা ইসি’র। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে এ কাজ শেষ করার কথা। গত বছর ২৭শে জুলাই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ষষ্ঠ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার বলে জানানো হয়। বিবিএস এর ওই প্রতিবেদনের তথ্য যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস তাদের প্রতিবেদন দিয়েছেন গত সোমবার।
সেখানে বলা হয়েছে, প্রাথমিক প্রতিবেদন যাচাইয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ তথ্যে অমিল পাওয়া গেছে। এই ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ হলে চূড়ান্ত জনসংখ্যা দাঁড়াবে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। বিআইডিএস তাদের পর্যালোচনা জমা দিলেও বিবিএস এখনো জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর গত রোববার বলেছিলেন, সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণের জন্য জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা করে থাকা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন অনুযায়ী, ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রেখে সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনের জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব বাস্তব বণ্টনের ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, যে আইন আছে, প্রথম হচ্ছে ভৌগোলিক অখণ্ডতা, তারপর আঞ্চলিক অবিভাজ্যতা, তারপর প্রশাসনিক এলাকা, চতুর্থত জনসংখ্যার ঘনত্ব। এ সবগুলোর বিবেচনায় নিয়ে যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সীমানা সংশোধন হবে। না হলে হবে না।