ঢাকা, ২২ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাবান ১৪৪৪ হিঃ

শেষের পাতা

মন্ত্রিসভায় আইনের খসড়া অনুমোদন

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার

ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি (যেসব ওষুধ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনা যায়) ছাড়া ওষুধ বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী          
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বিকালে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন এই তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ সংক্রান্ত পুরাতন দুটি আইনকে এক করে এবং এর সঙ্গে আরও নতুন কিছু বিষয় যুক্ত করে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে গত বছরের ১১ই আগস্ট এ আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। সেটিকে আজ চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আজকে অনুমোদনের ক্ষেত্রে একটু পরিবর্তন এসেছে। আগে যে আইনগুলো ছিল সেগুলো মূলত ওষুধ নিয়ে ফোকাস করা ছিল। কিন্তু নতুন যে খসড়াটি করা হয়েছে সেখানে কসমেটিকসও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেজন্য এই আইনটির নামকরণ করা হয় ঔষধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩। তিনি আরও বলেন, এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এখানে ধারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
বলা হচ্ছে, এখন রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ থাকবে। বিষয়টি অমান্য করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনে কসমেটিকসকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কসমেটিকসের উৎপাদন, বিতরণ ও স্টোর এগুলো আমাদের রেগুলেট করা হবে। আমাদের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যেটা আছে সেটা কন্টিনিউ করবে ও তাদের দায়িত্ব-পরিধি এখানে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এখানে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে। আইনে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) যে গাইডলাইন আছে, সেটি যেন আমাদের ওষুধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হয় সে ব্যাপারে খুব জোর দেয়া হয়েছে। আইনটিতে এ গাইডলাইন প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক করা হবে। খসড়া আইনে শাস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ৩০টা অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে ও এসব অপরাধে শাস্তির কথা উল্লেখ করা আছে। অসৎ উদ্দেশ্যে ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে শাস্তি যাবজ্জীবন পর্যন্ত। নকল ওষুধ উৎপাদন বা জ্ঞাতসারে কোনো নকল ওষুধ বিক্রি, মজুত, বিতরণ বা বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করলে সেখানেও যাবজ্জীবনের প্রভিশন রাখা হয়েছে। ওষুধে ভেজাল করলে বা কোনো ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, বিক্রয়, মজুত, বিতরণ করলে যাবজ্জীবনের প্রভিশন রাখা হয়েছে। মাহবুব হোসেন বলেন, ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনটি ওভার দ্য কাউন্টার বিক্রি করা যাবে সেটা বলা আছে খসড়া আইনে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর লাইসেন্স অথরিটি হিসেবে কাজ করবে। কসমেটিকস উৎপাদন করতে হলে তাদের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এ ছাড়া কিছু ওষুধের দাম সরকার ঠিক করে দেবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকের নির্ধারিত এজেন্ডার বাইরেও একটা বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। যেসব জমিতে সারা বছর তিন ধরনের ফসল উৎপাদন করা হয় সেসব জমিতে কোনো প্রকল্প নেয়া যাবে না প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিন ফসলি জমিতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, স্থাপনা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বা আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে সোলার প্যানেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিল্ডিং তৈরি করার প্রস্তাব বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন কোনো তিন ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। কোনো তিন ফসলি জমিতে প্রকল্প নেয়া যাবে না, এটি সংরক্ষণ করতে হবে। এটি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন। এটা আমরা এখন নিয়মিত মনিটর করবো। সরকারি- বেসরকারি সব ক্ষেত্র কি নির্দেশনার মধ্যে পড়বেÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো ক্ষেত্রেই কোনো প্রকল্প হতে পারবে না। সরকারি-বেসরকারি সব লেভেলে। তিনি আরও বলেন, কোনো তিন ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। প্রকল্প নেয়ার সময় যাচাই করে দেখা হবে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছেও তা পাঠানো হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয় এবং বিভাগগুলোতে চিঠি দেয়া হবে।

 

 

পাঠকের মতামত

প্রেশক্রিপশান ছাড়া ওষুধ বিক্রি করলে জড়িমানা বিশ হাজার টাকা।দেশটা ত মগের মুল্লক হয়ে গেছে। দেশের ৭৫% শিক্ষিত যুবকের দেশে কোন কর্মসংস্থান নেই। এই বিশাল বেকার জনগোষ্ঠির ভারে প্রায় প্রতিটা পরিবারের অবিভাবক হিমশিম খাচ্ছে তাই উপযুক্ত কর্মসংস্থানের অভাবে রাতের আধাঁরে উবার পাঠাও বিভিন্ন নামের হোন্ডা মটর সাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে মান সম্মান ইজ্জতের বারটা বাজিয়ে জীবন চালাচ্ছে অনেকে। কেউ কেউ অভিজাত ব্যবসা মনে করে মান সম্মান রক্ষার্থে ওষুধের ব্যবসা করছে ছোট খাটো ফার্মেসির মাধ্যমে। এখানেও বাধঁ সেদেছে সরকার। কসাই নামের ডাক্তারদের কসাইগিরি করার আরেকটা সুবর্ণ সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার স্বউদ্যোগে। ওষুধ বিক্রিতে নানা উপায়ের বিধি নিষধ শর্ত জড়িমানা প্রয়োগ করা কতখানি মানবিক তা ভাবছেনা মোটেই। দেশের কত % লোক আছে ডাক্তার দেখিয়ে প্রেশক্রিপশান করে ওষুধ সেবনের? গরীব খেটে খাওয়া মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠির অধিকাংশেরই সেই ক্ষমতা একেবারেই নাই বর্তমানে। তারপরও এই মরন শর্ত জড়িমানা ওষুধের দোকানী আর গরীব মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া কি অমানুষিকতা নয়। সমস্যার সমাধানে ওষুধ বিক্রেতাদের কেমিষ্ট কাম ডক্টর প্রশিক্ষন দেওয়া সরকারের দায়ীত্ব বিনা ফী তে। তাতে দক্ষ জনগোষ্ঠিও তৈরী হবে বেকারত্ব ঘুছবে জনগনও বাড়তি খরচ থেকে রেহাই পাবে। তা না করে একটা অমানবিক আইন তৈরী করে ফেলেছে কিভাবে মানুষকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে মরণ নিশ্চিত করা যায়।

আকাশ
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১:৪৭ পূর্বাহ্ন

এই আইনে ডাক্তারদের পোয়াবারো, গরীবের কপাল পুড়লো।

ফারুক হোসেন
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন

এই আইন গলাকাটা ডাক্তারদের আরো গলা কাটার সুযোগ করে দেওয়া হলো। দেশের ৯০%লোক নিম্ম আয়ের সাথে যুদ্ধ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সাধারণ অসুখ বিসুখ হলে পাশের ফার্মেসি থেকে মুখে বলে ঔষধ নিয়ে সেবন করে তাতে ৯০% রোগী সুফল পায়। ক্ষেত্র বিশেষে কমন কিছু এন্টিবায়োটিকও এতে ব্যবহার করা হয় যেমন সাধারণ কাটা ছেড়া ঘা কাশি দাঁতের চিকিৎসা ইত্যাদি। দেশের প্রায় ৩০% লোকের সাধারণ রোগের চিকিৎসা নিতে ৫০০থেকে ২০০০ টাকার ডাক্তার ভিজিট দিয়ে চিকিৎসা নেওয়া মোটেই সম্ভব নয়। ১০০ টাকার ঔষধ কিনা যার ক্ষমতার বাহিরে সে কি করে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার প্রেশক্রিপশান ফী বহন করবে। তার উপর আছে বাধ্যতামূলক ডায়াগনসিস টেস্ট। এ আইন মরার উপর আরেক খড়ার ঘা হয়ে দেখা দিবে। সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হতো প্রতিটা প্রতিষ্ঠিত ফার্মেসির ঔষধ বিক্রেতাকে সরকারী উদ্যোগে স্বল্প ব্যয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার উপযোগী এবং দক্ষ করে গড়ে তোলা যাতে সাধারণ চিকিৎসা তাদের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব হয়। জটিল রোগের ক্ষেত্রে হসপিটাল গুলিতে ডাক্তারী চিকিৎসা সহজলভ্য করা। যারা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে আইন প্রণয়ন করে তারা উচু শ্রেণী উচু মানসিকতা লালন করে সাধারণ নিম্ম এবং মধ্যম আয়ের লোকদের আর্থিক দুর্দশার কথা তাদের চিন্তা চেতনায় প্রতিফলিত হয়না, অথচ এরাই দেশের ৭০থেকে ৭৫%।

আলমগীর
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১১:১৯ অপরাহ্ন

বেশীরভাগ ডাক্তাররা সারা দেশে ব্যাবসা শুরু করেছে। 2023 সালে এসেও প্রেসক্রিপশন লেখে হাতে, এমনভাবে লেখে যা কোন ভাবেই যেন না পড়া যায়। বেশীরভাগ ডাক্তার ঔষধ কোম্পানীর % এর বিনিময়ে নাম সর্বস্ব ঔযধের ট্রেড নাম লিখে, অসুখ আর ভাল হয় না। পাবলিককে ওরা বোকা মনে করে।

আলম
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১০:৩৮ অপরাহ্ন

আমার মতে ডাক্তারদে জেনেিরক নাম ব্যবহার করার আইন করা ও প্রয়োজন। কিছু অসাধু চিকিৎসক ঔষধ কোম্পানীর উৎচকের বিনিময় নাম সর্বস্ব ঔযধের ট্রেড নাম লিখেন, যাহা রুগীর রোগ তো ভালো হয়ইনা। অযথা সর্বশান্ত করে। তার উপর টেষ্টের পারসেন্টিস।

Md. Matiur..
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৯:১১ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে হাটে মাঠে অবৈধ লক্ষ লক্ষ ফার্মেসি গজিয়েছে । ঐ গুলি বন্ধ করতে হবে । ক্লাস সিক্স পাশ ছেলে বাজারে ফার্মেসি দিয়ে বসে আছে । কোন মতে ইংরেজি নাম পড়তে পারে । তবে এখন ঔষধের নাম বাংলাতে । তাই ইংরেজি জানার প্রয়োজন হয় না । আইন পাস হলে এত বেশি ফার্মেসি দেশে আইনের প্রয়োগ কঠিন হবে । প্রয়োগ হলে ভাল ।

Kazi
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৭:৪৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে এম,বি,বি,এস ডাক্তার অপ্রতুল। বিশেষ করে গ্রামে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডাক্তার পাওয়া কঠিন, সেক্ষেত্রে গ্রাম্য ডাক্তার ছাড়া উপায় নেই। অনেক জীবন রক্ষাকারী ঔষধ আছে যেটি সময়মতো প্য়োগ না করলে রোগীর মৃত্যুও হতে পরে।সেক্ষেত্রে কি করা?

Ejaz
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৬:৩৯ অপরাহ্ন

ওভার দ্যা কাউন্টার ওষুধের ক্ষেত্রে না, বাক্য টা হবে ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ ছাড়া অন্য কোন ওষুধ যেমন, এন্টিবায়োটিক ইত্যাদি ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি করা যাবেনা। সচিব ভুল বলেছেন নাকি পত্রিকার ভুল?

ডা. আলমগীর
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৬:১৯ অপরাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

সিলেট বিএনপি’র কমিটি/ যে ঝুঁকি নিলেন কাইয়ূম-এমরান

১০

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা ছিনতাই/ পুরো টাকা উদ্ধার নিয়ে যে শঙ্কা

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status