মত-মতান্তর
স্কুল কলেজের নাম পরিবর্তনঃ তুঘলকি কাণ্ড
শরীফ আস্-সাবের
(১ মাস আগে) ২০ মে ২০২২, শুক্রবার, ২:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:১৩ অপরাহ্ন

সম্প্রতি সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজকে সংক্ষিপ্ত নাম পরিহার করে পূর্ণ নাম ব্যবহার করার জন্য এক নির্দেশনা জারী করেছে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তর মনে করে, বিভিন্ন দাপ্তরিক ও অন্যান্য কাজে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করে আসছে যা যথাযথ নয়। নির্দেশনা অনুসারে, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করে আসছিলো, তাদেরকে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নাম ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। ঐ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্যাড, মূল ফটক ও অন্যান্য স্থানে পূর্ণ নাম ব্যবহার নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠনোর জন্য অধিদপ্তরের আঞ্চলিক উপপরিচালক ও পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এইসব পরিবর্তন চুডান্তকরনের পর পূর্ণ নামাঙ্কিত মূল ফটকের ছবি তুলে অধিদপ্তরে পাঠানোর জন্যও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত নাম পরিবর্তন করার পর ব্যানবেইস ও শিক্ষা বোর্ডগুলোতে আবেদন করে এই পরিবর্তন নিশ্চিত করতে হবে। তবে, নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন কারণ কিংবা যুক্তির উল্লেখ করা হয়নি। এই সকল নির্দেশনা জারী করার আগে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর শিক্ষা মন্ত্রী এবং মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন নিয়েছে কিনা তা অবশ্য নিশ্চিত করা যায়নি।
ইতোমধ্যেই, নির্দেশনা অনুসারে সংক্ষিপ্ত নামধারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি তাদের নাম পরিবর্তন করে পূর্ণাঙ্গ নাম ব্যবহার শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শুভানুধ্যায়ী এবং এলাকাবাসীদের অজ্ঞাতসারে তাঁদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানের নামের এই আকস্মিক পরিবর্তনে সকলেই স্তম্ভিত হয়েছেন। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিবাদ করছেন।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও কাউকে কোন পরিস্কার ধারনা প্রদান করছেন না। তারা আদিষ্ট হয়েই এই কাজটি করেছেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। এর অন্যথায়, তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারতো বলে তারা মনে করেন। এমতাবস্থায়, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেকটা বাধ্য হয়ে রাতারাতিভাবেই নাম পরিবর্তনসহ প্রতিষ্ঠানর লোগো, প্যাড ও নামফলক প্রতিস্থাপন করেছে।
প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, কেন এই হঠাৎ সিদ্ধান্ত? সিদ্ধান্ত গ্রহনের আগে এ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে কোন কমিটি গঠন কিংবা শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিশেষজ্ঞসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কি কোনরূপ মতামত আহবান করা হয়েছিল? এর তরিৎ বাস্তবায়নের পিছনে কি কোন ব্যাখ্যা রয়েছে? এই পরিবর্তনের সামাজিক এবং আইনগত ভিত্তি কি? এবং কেন এই অনমনীয় বাধ্যবাধকতা?
আমাদের দেশে সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে মসজিদ মন্দিরের হাত ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম আবির্ভাব। তারপর, দেশের বহু সমাজসেবী এবং দানশীল ব্যক্তির উদ্যোগে এবং সহায়তায় বিভিন্ন সময়ে দেশ জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অনেক স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা। এছাড়াও প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার পিছনে রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকবাসীদের যথাসাধ্য আর্থিক ও বৈষয়িক সহায়তাসহ শ্রম, উৎসাহ, আবেগ, ত্যাগ ও তীতিক্ষা। বিদ্যালয়ের নাম, লগো, মূলমন্ত্র ইত্যাদিও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে প্রচুর গবেষণা ও আলাপ আলোচনার পর নির্ধারিত হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোতে মূল প্রতিষ্ঠাতার ইচ্ছা অনিচ্ছার প্রতিফলনও ঘটেছে। একটি নিবিড় এবং দীর্ঘ সামাজিক প্রক্রিয়ার পর রীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত নাম, ঠিকানা, ধরন ইত্যাদি উল্লেখ করে অনুমোদন/নিবন্ধনের জন্য সরকার বরাবর আবেদনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা কিংবা উদ্যাক্তারা যদি কোন নামের এব্রিভিয়েশন ব্যবহার করে থাকেন এবং তা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে বছরের পর বছর (কোন কোন ক্ষেত্রে শতাধিক বছর) ব্যবহৃত হয়, তা বিনা কারণে পরিবর্তন করার কোন যুক্তি বা এখতিয়ার অধিদপ্তরের আছে কি?
উদাহরণস্বরূপ, আমি নরসিংদীর তিনটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের কথা বলতে চাই - স্যার কেজি গুপ্ত উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মন্দী কে.কে.এম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সাটিরপাড়া কেকে ইন্সটিটিশন। আমি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল প্রতিষ্ঠাতারা বিদ্যালয়ের নামে সংক্ষেপিত আদ্যাক্ষরগুলি জুড়ে দিয়েছিলেন। এই সব নামের পরিবর্তন হবে তাঁদের স্মৃতি ও আত্মার প্রতি অবমাননার সামিল। এ ছাড়াও, যদি কোন বিদ্যালয় পূর্ণ নামেও প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে, প্রচলিত সংক্ষেপিত নাম বাতিল করার প্রয়োজন তো নেই। পৃথিবী জুড়ে এর নজীর রয়েছে। নিউইর্য়ক এয়ারপোর্টের মূল নাম জন ফিটজেরাল্ড কেনেডি এয়ারপোর্ট হলেও তা জেএফকে নামেই পরিচিত। এমনকি ঐ বিমানবন্দরের বেশ ক’টি সাইনে শুধুই জেএফকে লেখা আছে। অষ্ট্রেলিয়ার ঐতিহ্যবাহী আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের জেএনইউ কিংবা আমেরিকার এমআইটি বা ইউসিএলএ নিয়ে তো কোন মাথাব্যথা ওখানকার শিক্ষা বিভাগের নেই। বুয়েটিয়ানরাও কি চাইবেন তাঁদের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংক্ষেপিত নামটি বিলীন হয়ে যাক?
আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমাদের গর্বের ধন, আমাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের প্রতিভূ। আর, এই সব প্রতিষ্ঠানের নামগুলো আমাদের সংস্কৃতি ও সভ্যতার ধারক যা দেশভাগ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ কালের অমোঘ সাক্ষী। এই সব নাম কি পরিদপ্তরের একটি আদেশেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে? দেশের সরকার, রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞজনদের কি এ বিষয়ে কিছুই করার নেই?
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উচিত ছিল এই বিষয়টি বাস্তবায়নের আগে এর উদ্দেশ্য এবং প্রকৃতি সম্পর্কে স্থানীয় সাংসদ ও অন্যান্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সামাজিক সংগঠন এবং এলাকবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পরামর্শ করা। জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুভূতির মূল্যায়ন না করে এ ধরনের একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহন ও চাপিয়ে দেওয়া অযৌক্তিক ও অসমীচীন বলে প্রতীয়মান হয়।
যাই হউক, আমি মনে করি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বিষয়টির বিশালত্ব ও গুরুত্ব সঠিকভাবে অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে। কোন ধরনের গবেষণা কিংবা বিস্তারিত আলোচনা ও পরামর্শ ছাড়াই তারা নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। এ বিষয়ে কোন ধর্তব্য ব্যখ্যাও তারা জনসাধারন্যে উপস্থাপন করে নি। অধিদপ্তর পূর্বাপর না ভেবে দেশের মানুষকে প্রকারান্তরে ছাত্রজ্ঞান করেই যেন এই সিদ্ধান্তটি গ্রহন এবং বাস্তবায়ন করেছে। দেখে শুনে মনে হয়, এ যেন নিছক এক তুঘলকি কাণ্ড!
শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কারো মতামতের তোয়াক্কা না করে অধিদপ্তরের এই জাতীয় অতি উৎসাহের কারণ এবং অহেতুক অর্থ ও সময় খরচের বিষয়টি জরুরী ভিত্তিতে তলিয়ে দেখা দরকার।
সব শেষে, শেক্সপিয়র সাহেবের একটি বিখ্যাত উক্তি তুলে ধরতে চাই। তিনি বলেছিলেন, ‘নামে কি আসে যায়?’ আর, কথায় আছে, ‘জন্ম হউক যথাতথা, কর্ম হউক ভালো’। নাম নিয়ে বাড়াবাড়ি এবং এ নিয়ে সময় ও অর্থের অপচয় না করে মাউশি পরিদপ্তরের উচিত তার মূল দায়িত্ব, শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত ও গুণগত উৎকর্ষ সাধনে মনোনিবেশ করা।
(লেখকঃ ড. শরীফ আস্-সাবের, শিক্ষক, কলামিস্ট, কবি)
পাঠকের মতামত
শংকর চন্দ্র দেব বাবু, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যটির জন্য। যিনি প্রতিষ্ঠাতা তিনি যে নাম দিয়েছেন তার পরিবর্তন করার অধিকার তো কারো নেই। আর অনেক প্রতিষ্ঠানই প্রতিষ্ঠাতার নামে হয়নি। তবে এর সমাধান হিসাবে প্রতিষ্ঠাতার নাম বিদ্যালয়/মহাবিদ্যালয়ের নামের নীচে লেখা যেতে পারে। আসুন আমরা সবাই মিলে যা সঠিক এবং যা হওয়া উচিৎ তা ই তুলে ধরার চেষ্টা করি। ধন্যবাদ লেখককে এমন একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয় সর্বসমক্ষে তুলে ধরার জন্য। অযৌক্তিক পরিবর্তন নয়, যুক্তির সঠিক প্রয়োগই সকলের কাম্য। মাউশির শুভবুদ্ধির উদয় হউক।
শংকর চন্দ্র দেব বাবু, যিনি প্রতিষ্ঠাতা তিনি যে নাম দিয়েছেন তার পরিবর্তন করার অধিকার তো কারো নেই। আর অনেক প্রতিষ্ঠানই প্রতিষ্ঠাতার নামে হয়নি। এর বিহিত হিসাবে প্রতিষ্ঠাতার নাম বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয়ের নামের নীচে লেখা যেতে পারে। আসুন আমরা সবাই মিলে যা সঠিক এবং যা হওয়া উচিৎ তা ই তুলে ধরার চেষ্টা করি। ধন্যবাদ লেখককে এমন একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয় সর্বসমক্ষে তুলে ধরার জন্য। অযৌক্তিক পরিবর্তন নয়, যুক্তির সঠিক প্রয়োগ দরকার।
নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যুগোপযোগী। সবাই প্রতিষ্ঠাতা চিনবে।
আমি একটি কলেজের লেকচারার। মাউশি দূর্নীতিতে ভরপুর। বদলী, পোস্টিং পদোন্নতি সব কিছুর জন্য এখানে ঘুষ দিতে হয়। মাত্র কয়েকদিন আগে মাউশি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পুরা পরীক্ষায়টাই বাতিল হয়ে যায়। মাউশি কর্তৃপক্ষ শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধের ভয় দেখিয়ে এই নামগুলো পরিবর্তন করেছে। এই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দরকার।
আমি একজন বাংলাদেশী লন্ডনে থাকি। আমার বন্ধুর ছেলে এখানকার DLD College এ পড়ে। যেমনই হউক, নাম তো নামই।আমি বুঝবার পারি না কেন বাংলাদেশে জোর করে সংক্ষিপ্ত নাম বড় করতে হবে? দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া উচিত।
শিক্ষা অধিদপ্তর এতদিন পরে একটা ভাল উদ্যোগ নিয়েছে আমি এই উদ্যোগগে সাধুবাদ জানাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ননাম ব্যবহার করলে তার সবাই তার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে।
ভাই রে, এইটা কি মগের মুল্লুক নাকি? ইচ্ছা হইলো আর কোন যুক্তি তর্ক ছাড়াই শত বছরের ঐতিহ্যের জলাঞ্জলি হয়ে যাবে! এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদাশয় সরকারের কাছে করজোর অনুরোধ করছি।
দীর্ষ লেখাটি পড়লাম। শুধু অবাক হচ্ছি, এই ভুল সিদ্ধান্তের বিষয়ে মানবজমিন ছাড়া কোথাও তেমন কোন আলোচনা হচ্ছে না কেন। কাজী মোঃ রুহুল আমিন এর মন্তব্যটিও পড়লাম। আপনি একদম ঠিক বলেছেন। দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে এই কান্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তের বিষয়ে দেশের শীর্ষ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা ও বিহিত দাবী করতে পারে।
হতবাক হয়েছি। এক শ্রেনীর উর্বর মস্তিষ্কের লোক শিক্ষার সাথে যুক্ত হয়েছে। এদের ১) কোন নামের সাথে বিদ্বেষ থাকতে পারে। ২) কোন নামের প্রতি অতি উৎসাহ থাকতে পারে। ৩) শিক্ষার মানোন্নয়নে চিন্তা শক্তির অভাব থাকতে পারে । ৪) পরিবর্তনের ফলে কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে এই চিন্তার অভাব থাকতে পারে। ৫) কোন এক সময়ে এই নিয়ে আদালতে কেইস হতে পারে এই চিন্তা মাথায় না আসা। ৬) ইতিপূর্বে এই নিয়ে আদালতে কোন মামলা হয়েছিল কিনা এবং আদালতের কোন পর্যবেক্ষন আছে কিনা তাহা না জানা। এই রকম বহু কথা আছে। যাই হোক শেষে বলবো এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হোক। এটা আমাদের শত শত বছরের ঐতিহ্য বিরোধী। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। সবাইকে ধন্যবাদ।
মোঃ মোশারেফ হোসেন। সব কিছুতে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াবেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত নামগুলো প্রতিষ্ঠানের দাতা কিংবা উদ্যোক্তারাই দিয়েছেন। ভারতসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এই সংক্ষিপ্ত নামের প্রচলন রয়েছে। লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন।
The use of abbreviated names is common around the world. Please have a look at some examples from West Bengal: KK Das College, kolkata, E I Bethel College, Rasapunja, Dr B C Roy Engineering College, Durgapur; K. J. R Govt. General Degree College; Dr. A.P.J. Abdul Kalam Government College; Dr. B. R. Ambedkar Satabarshiki Mahavidyalaya; GLF Business School, Sector I, Salt Lake; Model B.P.Ed. College; P.D. Women’s College
বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, ঢাবি, চবি, রাবি দূর হোক, পূর্ণ নাম আসুক। পাশে সংক্ষিপ্ত নামটি থাকলে দোষের কিছু নাই। ঝাটাপেটার মানসিকতা থাকা অনুচিৎ। ঐতিহ্যবাহী মনিপুর স্কুলের স্বাপ্নিক, প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষানুরাগী নূর মোহাম্মদ সাহেব এর নাম নানান ছবি ও নামের চাপে ঢাকা পরেছে। মূল নামের নীচে প্রতিষ্ঠাতার নাম থাকা বাঞ্চনীয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত নাম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হীন মানসিকতার কারনেই হয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান গুলো হিন্দু দানবীরদের নামে হয়েছে। যেহেতু হিন্দু তাদের নামগুলো সংক্ষিপ্ত করলে আর হিন্দু নামটি যাতে না বুঝতে পারা যায় সে কারনেই এ কাজটি হয়েছে। আমার এলাকার কথাই বলি যেমন মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয়কে MH, দ্বারকানাথ কে ডিএন, যোগেন্দ্রনাথ কে জেএন করা হয়েছে।ঠিক এমনি ভাবে আন্দমোহন কে এএম, ব্রজমোহনকে বিএম, ব্রজলালকে বিএল করা হয়েছে।
সরকারের উচিত বিষয়টির আশু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনকালে দাতাগনের শ্রম, সদিচ্ছা, অবদান, স্থানীয়দের অনুভূতির প্রতি সম্মান ইত্যাদির বিবেচিত হয়। সুতরাং, নাম পরিবর্তন বা সংক্ষিপ্ত শব্দের পূর্ণ রূপান্তর ইত্যাদির প্রশ্ন ওঠে না। এটা প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গনকে অমর্যাদা করার শামিল। নাম নিয়ে বাড়াবাড়ি এবং এ নিয়ে সময় ও অর্থের অপচয় না করে মাউশি পরিদপ্তরের উচিত তার মূল দায়িত্ব, শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত ও গুণগত উৎকর্ষ সাধনে মনোনিবেশ করা।
কোনো প্রকাশনা করার জন্য অবশ্যই মন গড়া তথ্য দেয়া কি ঠিক? আপনি নরসিংদীর সাটিরপাড়া কে কে ইনস্টিটিউট কে বললেন পুরনো নাম। এই তথ্যের রেফারেন্স টা কোথায় পেলেন। ১৯০১ সাল থেকেই পূর্ণ নাম ছিল।। আর কোনো কিছু বলার নাই হাওয়ায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশনা সম্পর্কে।।
আমি মনে করি পূর্ণ নাম লেখা থাকলে ভালোই হয়। যেমন এম সি কলেজ এর পূর্ণ রুপ মুরারি চাদ কলেজ।
একমত
শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া সাহেবের কাছে অনুরোধ করবো, দয়া করে লেখাটি মন দিয়ে পড়তে। ঢালাও মন্তব্য না করে যুক্তি দিয়ে কথা বলুন প্লিজ। আমি একজন স্কুল শিক্ষক। আমার স্কুল এফেক্টেড। ছাত্র ছাত্রী, অভিভাবক এবং দাতাদের উত্তরসূরীদের থেকে শুরু করে এলাকাবাসী সবাই এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। মাউশি অধিদপ্তরের উচিত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা।
নাম পরিবর্তন করার আদেশটি যথাযথ হয়েছে। বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ। এ ইউ উচ্চবিদ্যালয় যদি কোন নাম থাকে তবে তার দ্বারা কি বোঝা যায়। সেটি যদি ঠিক করে আলীম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় লেখার আদেশ জারি করা হয় তবে তাতে মন্দের কিছু দেখিনা।
@Zahirul Haque লেখক এবং আপনার সঙ্গে শতভাগ সহমত।আমার এলাকার দুইটি প্রতিষ্ঠান এই ষড়যন্ত্রের শিকার। এলাকাবাসীরা খুবই অসন্তুষ্ট। বিনা কারণে, বিনা প্রয়োজনে অধিদপ্তর শিক্ষক কর্মচারীদেরকে বেতন ভাতা বন্ধের ভয় দেখিয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে এবং দ্রুততার সঙ্গে এই অপকর্মটি সাধন করে। সরকারের উচিত বিষয়টির আশু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।
একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনকালে দাতাগনের শ্রম, সদিচ্ছা, অবদান, স্থানীয়দের অনুভূতির প্রতি সম্মান ইত্যাদির বিবেচিত হয়। সুতরাং, নাম পরিবর্তন বা সংক্ষিপ্ত শব্দের পূর্ণ রূপান্তর ইত্যাদির প্রশ্ন ওঠে না। এটা প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গনকে অমর্যাদা করার শামিল। একই এলাকার একই নাম আমার অভিজ্ঞতার মধ্যেই নেই। যদি থেকেও থাকে, শুধুমাত্র সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে। তাও আলোচনার মাধ্যমেই। সেটা সবার জন্য না। তাছাড়া একই নাম অনেক উদাহরণ আছে। যেমন উপজেলার নাম কালিগঞ্জ কম পক্ষে পাঁচ টি। আবার উপজেলার নাম ফরিদপুর, জেলা পাবনা।
@nasym: পাকি জারজদের গায়ে ফোসকা পড়েছে বলে মনে হচ্ছে।
লেখাটি মন দিয়ে পড়লাম। একটি সময়োপযোগী লেখা। পাঠকের মতামতও পড়লাম। আসিফ জামান সাহেবের মন্তব্যটির পড়ে মনে হলো, তিনি শুধু শিরোনাম পড়েই মন্তব্য করেছেন। নামের পরিবর্তন অবশ্যই হয়েছে। সেটা রেজিষ্টার্ড নাম কিংবা সংক্ষিপ্ত নাম, যেটাই হউক না কেন। অধিদপ্তরের এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কি আছে?
লেখক লেখার শিরোনামে নাম পরিবর্তন উল্লেখ করেছেন। বাস্তবে সেটা নয়। আর পূর্ণ নাম উল্লেখ করলে সেটা আরো সুবিধাজনক বলে মনে করি। বাংলাদেশের কেন্দ্রীভূত শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপুল সংখ্যক বিদ্যালয়ের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই কাছাকাছি সংক্ষিপ্ত নামের বিদ্যালয়গুলোর পরিচিতির সমস্যা দেখা যায়। সবচেয়ে বড় কথা সংক্ষিপ্ত নামের ভীড়ে অনেক ক্ষেত্রে দাতা বা প্রতিষ্ঠাতার আসল নাম পরিচয়ই হারিয়ে যায়। আমি মনে করি এটি একটি সঠিক সিদ্ধান্ত, আরো আগেই এটা নেবার দরকার ছিল।
এত বড় একটা ঘটনা ঘটলেও সারা দেশ চুপচাপ। আমাদের প্রিয় বুদ্ধিদীবীরা কই? এ বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্ত হওয়া জরুরি। অবিলম্বে সকল প্রতিষ্ঠানের মূল নামে ফিরিয়ে আনা হউক।
কম পন্ডিত,sdd, আপনার পুরো নাম কোথায়? ভারত পন্থী নাম আপনার? চিড়বিড়ানী দেখে তাই মনে হয়। আমাদের দেশের ব্যাপারে কম কথা বলবেন।
পূর্ণ নাম হলে সমস্যা কোথায়? ধরা যাক, আজকাল জবির ব্যবহার খুবই হচ্ছে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির সাইন বোর্ড, দাপ্তরিক কাগজপত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নামটি থাকা কি এতোই অসঙ্গত যে এই মহাপন্ডিতের গায়ে ভীমরুলের চাক জুড়ে বসলো? সে কী বলতে চায়?