শেষের পাতা
মানব পাচারে ‘পটু’ মাসুম
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৮ নভেম্বর ২০২২, সোমবারমানব পাচারে ‘পটু’ সিলেটের মাসুম আহমদ। গ্রেপ্তার হয়েছিল র্যাবের হাতে। জামিনে বেরিয়ে আগের মতোই জাল ভিসার কারবার শুরু করে। এবার সিআইডি’র তদন্তে ধরা পড়ে মাসুমের নেটওয়ার্ক। পাঁচ দিন আগে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাসুমকে। সিআইডি জানিয়েছে- গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিকভাবে মুখ খোলেনি। এ কারণে তার রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। মাসুম আহমদের বাড়ি কানাইঘাটে। তার পিতার নাম আতাউর রহমান। পুলিশ জানায়- ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে তার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
২০২০ সালে যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন তার কাছ থেকে জাল পাসপোর্টের ফটোকপি এবং তুরস্কের ভুয়া ভিসার জন্য ব্যবহৃত ‘অ্যাম্বুস সিল’ তৈরির মেশিনসহ অন্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। র?্যাব ওই সময় মাসুম সম্পর্কে জানায়- ফিলিস্তিন দূতাবাস অভিযোগ জানানোর পর মাসুমের বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করে জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, রোমানিয়া, ইতালি, ইসরাইল, গ্রিস, মালয়েশিয়া, কানাডা, তুরস্ক, ক্যামেরুন প্রভৃতি দেশে মানব পাচারের তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও র?্যাবের নজরে আসে। এর প্রেক্ষিতে র?্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার বিরুদ্ধে নকল পাসপোর্ট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে মানব পাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়- মাসুমসহ এক শ্রেণির অসাধু দালাল চক্র স্বল্প আয়ের মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবৈধভাবে মানব পাচার করে আসছে। মাসুম ও তার চক্রের সদস্যরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট তৈরি করে দুই-তিন হাজার ইউরোতে বিক্রি করতো।
এ ছাড়া এই চক্র বিভিন্ন দেশের ভিসার নকল স্টিকার বানিয়ে ভুয়া ভিসা দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে মানব পাচার করে আসছে। সিলেটে তাদের রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক। সিআইডি’র মানব পাচার অপরাধ দমন ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন- সিলেটসহ সারা দেশেই এদের নেটওয়ার্ক। মাসুমসহ এ চক্রের কয়েকজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিআইডি মানব পাচারের মামলার তদন্ত নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে। সিলেটের শাহপরাণ থানার ওসি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন- শাহপরাণ থানায় দুটি মানব পাচার মামলা সিআইডি’র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডি ওই মামলাগুলো তদন্ত করছে।