ঢাকা, ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

প্রথম পাতা

মেসি মোমেন্টে বেঁচে রইলো আশা

সামন হোসেন
২৭ নভেম্বর ২০২২, রবিবার
mzamin

মেক্সিকোর রক্ষণ ভাঙা যখন দুঃসাধ্য মনে হচ্ছিল, তখনই দৃশ্যপটে সেই লিওনেল মেসি। পরে ম্যাচের শেষ দিকে তার পাস থেকেই দারুণ আরও এক গোল করলেন এনজো ফার্নান্দেজ। সৌদি আরবের কাছে হারের ধাক্কা কাটিয়ে লুসাইল স্টেডিয়ামেই ম্যাচটা আর্জেন্টিনা জিতলো ২-০ গোলে। যে জয় আর্জেন্টিনা ও মেসিকে টিকিয়ে রাখলো বিশ্বকাপেও। পোল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিতলেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে আর্জেন্টিনার। সুযোগ থাকবে ওই ম্যাচটা ড্র করলেও।
সৌদি আরবের কাছে হেরে যাওয়া ম্যাচের একাদশে ৫টি পরিবর্তন এনে গতকাল মেক্সিকোর বিপক্ষে দল নামান আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। রক্ষণভাগে শুধু নিকোলাস ওতামেন্দিকে রেখে তিনজনকেই বদলে ফেলেন। দলে ঢুকেন গঞ্জালো মন্তিয়েল, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ ও মার্কোস আকুনিয়া। মাঝমাঠে গুইদো রদ্রিগেজ ও আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারকে জায়গা দিতে বেঞ্চে চলে যান লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও পাপু গোমেজ। একাদশে এতো পরিবর্তন এনেও প্রথমার্ধে আক্রমণই করতে পারছিলেন স্কালোনির শিষ্যরা। প্রতিপক্ষের বিবর্ণতার সুযোগ অবশ্য মেক্সিকোও নিতে পারেনি। ম্যাচের দশম মিনিটে একটি হাফ-চান্স পায়  মেক্সিকো, তবে ডি-বক্সের মাঝ থেকে সিজার মন্টেসের শট লক্ষ্যের ধারেকাছেও ছিল না। ৩২তম মিনিটে গিয়ে প্রথম কর্নার পায় আর্জেন্টিনা। মেসির কর্নার কিক প্রতিপক্ষ শিবিরে কোনো ভীতির সঞ্চারও করতে পারেনি। ৪০তম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায় তারা; কিন্তু ডি মারিয়ার ক্রসে ছয় গজ বক্সের সামনে থেকে লওতারো মার্টিনেজের হেড যায় উড়ে। পাঁচ মিনিট পর দারুণ নৈপুণ্যে জাল অক্ষত রাখেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অ্যালেক্সিস ভেগার ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ফেরান তিনি। 

ক্লাব পর্যায়ে ব্যক্তিগত কিংবা দলগত সব শিরোপাই দখলে আছে মেসির। কিন্তু বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে অর্জনের কথা সামনে এলে রিক্ত এক শিল্পীর চেহারাই ভেসে ওঠে। গত বছর কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপার স্বাদ পেয়ে কিছুটা আক্ষেপ মিটিয়েছেন যদিও। তবে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে না পারার আক্ষেপ সেটিতো ছিলই। সেই আক্ষেপ মেটাতে মেক্সিকোকে হারিয়ে অন্তত বিশ্বকাপে টিকে থাকার দরকার ছিল আর্জেন্টিনার। এমন ম্যাচের প্রথমার্ধে মেসির পারফরম্যান্স ছিল মলিন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও নিস্প্রাণ দেখা গেছে সাতবার ব্যালন ডি’র বিজয়ী এই ফরোয়ার্ডকে। ডি মারিয়া, মার্টিনেজদের নিস্প্রভতার হাহাকার যখন চূড়ান্ত রূপ পেতে যাচ্ছিল, তখনই দৃশ্যপটে ফিরলেন লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধে যাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না সেই জীবন্ত কিংবদন্তী ৬৪ মিনিটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে টিকিয়ে রাখলেন এবারের বিশ্বকাপে। ডি মারিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে শট নেন মেসি। গিয়ের্মো ওচোয়া ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি, বল পোস্ট ঘেঁষে খুঁজে নেয় ঠিকানা। বাকি কাজটুকু সাড়লেন  এনজো ফার্নান্দেজ। ৮৭তম মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন ডি মারিয়ার বদলি হিসেবে নামা এই ফরোয়ার্ড। দেশের জার্সিতে এ নিয়ে ১৬৭ ম্যাচে ৯৩ গোল হলো মেসির। বিশ্বকাপে গোলসংখ্যায়ও (৮) কিংবদন্তী ম্যারাডোনাকে ছুঁয়ে ফেললেন তিনি। আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে এ দুজনের চেয়ে বেশি গোল শুধু গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার, ১০টি।
ওই গোলের পর কিছুটা গতি আসে আর্জেন্টিনার খেলায়। বদলি নামা হুলিয়ান আলভারেজ ৭৬ মিনিটে একবার বাঁ পাস থেকে দারুণ এক দৌড়ে ঢুকে পড়েন মেক্সিকোর বক্সে। তবে তার ক্রস কাজে লাগাতে পারেননি মেসি। শেষের ১৫ মিনিট মেক্সিকোর অর্ধেই খেলা হয়েছে বেশি, বলও বেশি ছিল আর্জেন্টাইনদের পায়ে। এর পুরস্কার আর্জেন্টিনার ৮৭ মিনিটে এসে। কর্নার থেকে সরাসরি বক্সে বল না পাঠিয়ে ছোট পাসে জায়গা তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। সেখানেই মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক গতিময় শট মেক্সিকোর জালে পাঠান এনজো ফার্নান্দেজ। ওই গোলেই নিশ্চিত হয়ে যায় এই ম্যাচে আর পয়েন্ট হারাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। জয়ের পাশাপাশি শেষ ১৫-২০ মিনিটের খেলায় খুঁজে পাওয়া যায় চেনা আর্জেন্টিনাকে। পরের ম্যাচটার আগে এটাও সম্ভবত আর্জেন্টাইন সমর্থকদের জন্য বড় স্বস্তি।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status