শরীর ও মন
যে রোগসমূহ গোপন করতে মানা
ডা. দিদারুল আহসান
(২ বছর আগে) ১৯ এপ্রিল ২০২২, মঙ্গলবার, ১২:২৩ অপরাহ্ন
যৌন রোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ। কিন্তু রোগটির অবহেলা ও গোপন করার কারণে এর জটিলতা বৃদ্ধি পায় ও রোগমুক্তি কঠিন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজের উপর অস্বস্তিসহ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অশান্তি সৃষ্টি হয় এ রোগের কারণে। একপর্যায়ে তাদের ক্ষেত্রে রোগটি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তাই যৌন রোগের বিষয়টি গোপন না করে এর চিকিৎসা নিতে হবে। যেসব যৌন রোগগুলো একটু জটিল এবং চিকিৎসা না করলে মারাত্মক হতে পারে তাহলো-
গনোরিয়া:
এ রোগের কারণে পুরুষের শুক্রনালি বন্ধ ও উপ-শুক্রাশয় নষ্ট হয়ে যেতে পারে (এপিডিডাইমিস)। এসব ক্ষেত্রে স্ত্রী সঙ্গমে সমস্যা দেখা না দিলেও সন্তানের বাবা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কারণ ওই ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বীর্য তৈরি হয় না।
হলেও ভালো নল দিয়ে তা আসতে পারে না। তাই সন্তানের জনক হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ হতে পারে।
সিফিলিস:
সঠিক চিকিৎসা না হলে সিফিলিস মেয়াদি সিফিলিসে পরিণত হতে পারে। দুই বছরের পর থেকে শুরু করে সিফিলিসের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ প্রাকৃতিকভাবে ভালো হয়ে যেতে পারে। বাকি ৭০ শতাংশের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ মেয়াদি সুপ্ত জীবনব্যাপী সিফিলিস হতে পারে। অর্থাৎ সারাজীবন তিনি এ জীবাণুটি উপসর্গবিহীন অবস্থায় বয়ে বেড়াবেন। বাকি ৪০ শতাংশের মধ্য থেকে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ স্নায়ুতন্ত্রের সিফিলিস ও ১২ দশমিক ৫ শতাংশ হৃদযন্ত্রের সিফিলিসের জটিলতা সহকারে দেখা দেয়। আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর দেহে এ রোগের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে গর্ভপাতও ঘটতে পারে, মৃত সন্তান প্রসব হতে পারে অথবা সিফিলিসে আক্রান্ত হয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির হার্ট ও মস্তিষ্কে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা থেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তাই রোগটির উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।
শেনকরোয়েড:
চিকিৎসা না করলে এ থেকে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হয়। যেমন- আক্রান্ত ব্যক্তির কুঁচকির লসিকাগ্রন্থি আক্রান্ত হয়ে ওওঘএটওঘঅখ ইটইঙ-তে পরিণত হতে পারে। তা একপর্যায়ে ফেটে গিয়ে নিঃসরণ নালি তৈরি হতে পারে অথবা ফাইমোসিস বা প্যারাফাইমোসিস দেখা দিতে পারে। ফলে পুরুষাঙ্গের ছিদ্র সরু হয়ে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রোগটির শুরুতে চিকিৎসা না নিলে পরবর্তীতে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
জেনিটাল হারপিস:
এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। একবার হলে কখনো ভালো হয় না। কিছুদিন পর দেখা দেয়। আবার চলে যায়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর দেখা দেয়। মায়ের এ রোগ থাকলে প্রসবের সময় শিশু আক্রান্ত হতে পারে। শিশুর চোখ আক্রান্ত হতে পারে। গর্ভপাত হতে পারে। এ রোগের কারণে মায়ের জরায়ু গ্রীবায় ক্যানসার হতে পারে। তাই সচেতনতা প্রয়োজন।
লেখক: চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা। মোবা: ০১৭১৫৬১৬২০০।