প্রথম পাতা
কর্মসূচি জোরদারের বার্তা আওয়ামী লীগের
কাজী সোহাগ
৪ অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবারদেশব্যাপী শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলগুলোর সম্ভাব্য আন্দোলন-কর্মসূচির বিপরীতে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে দেশজুড়ে দলীয় কর্মসূচি জোরদারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সব স্তরের নেতাদের বার্তা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দল থেকে নির্বাচিত এমপিদের আলাদাভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে- সামাজিক হোক কিংবা রাজনৈতিক হোক যে কোনো দলীয় কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে বড় জমায়েত করতে হবে। সামাজিক কর্মসূচিতেও যেন অন্তত এক থেকে দেড় হাজার দলীয় লোকের সমাগম ঘটে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া দলীয় কর্মসূচিতে নিজেদের মধ্যকার সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। একক কোনো নেতা বা ব্যক্তির ব্যানারে কর্মসূচি পালন না করে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি আগে থেকেই নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা মানবজমিনকে বলেন, বিএনপি রাজধানীতে বেশকিছু কর্মসূচি পালন করেছে। এখন তারা ঢাকার বাইরে কর্মসূচি দিয়েছে।
কেন্দ্রের নির্দেশনা এরইমধ্যে মানতে শুরু করেছেন বিভিন্ন জেলার এমপি ও দলীয় নেতারা। তারা নির্বাচন পর্যন্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে নানা ধরনের কর্মসূচির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এ কারণে রাজধানীকেন্দ্রিক নেতারা এখন নির্বাচনী এলাকায় উপস্থিতি বাড়িয়েছেন। নিজেদের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে কেউ কেউ অফিসের সংখ্যা বাড়িয়েছেন। সেখানে নিয়মিত মিটিং ও নেতাকর্মীদের জমায়েত হচ্ছে। নির্বাচনের পাশাপাশি দলীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে কর্মসূচিগুলোতে নেতা-কর্মীদের সমাবেশ ঘটাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে নরসিংদী-৩ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন মানবজমিনকে বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সামনে আমাদের কাউন্সিল। এরপরই নির্বাচন। দু’টি বড় সাংগঠনিক বিষয় রয়েছে। তাই আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে চায়। এজন্য রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে তাদের সমাবেশ বেশি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দলটির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা মানবজমিনকে জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিসহ বিরোধীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সতর্ক রয়েছেন তারা। এবার নির্বাচনের আগে মাঠ গরম করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার সুযোগ দেয়া হবে না। এক্ষেত্রে আগের মতোই কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখবে দলটি। ফলে এখন থেকেই সবদিক দিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি গুজব-অপপ্রচারের জবাব দিতে প্রস্তুত করা হয়েছে লক্ষাধিক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু না হলেও ভেতরে ভেতরে এই কাজও চলমান রয়েছে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে এই কাজেও তত গতি বাড়াবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের কাজেও গতি আনতে চায় ক্ষমতাসীন দল। ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে তৈরি হওয়া বিরোধ মিটিয়ে আবারও শরিকদের নিয়ে মাঠের কর্মসূচিতে ফিরতে চায় আওয়ামী লীগ। জোট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারাও তাদের নিজেদের মতো করে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তারাও তাদের দল গোছানোসহ অন্যান্য কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গণমাধ্যমে নেত্রীও বলেছেন, সরকার ও তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট যেভাবে গোপন ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, একইভাবে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, তাদের ভেতরে চেতনা জাগ্রত করতে হবে। ২০২৪ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচন ঘিরে প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।