শরীর ও মন
ব্রণ প্রতিরোধ ও প্রাথমিক প্রতিকার
ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবারব্রণ হলো এক ধরনের ত্বকজনিত রোগ যা মুখেই বেশি হয়ে থাকে। ব্রণ হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তবে ধুলোবালি এবং বায়ুদূষণ এর জন্য সব থেকে বেশি দায়ী। আমাদের শরীরে রয়েছে অনেক লোমকূপ। এই লোমকূপ থেকে এক বিশেষ ধরনের তেল বের হয় যা মূলত আমাদের স্কিনের নেরিসমেন্টের জন্য দরকার হয়। কিন্তু বাইরের প্রচণ্ড ধুলোবালি এবং পলিউশন মিলে আমাদের এই লোমকূপগুলো আটকে দেয়। যার ফলে আমাদের স্কিনের বিশেষ ধরনের তেল বাইরে বের হতে পারে না। ফলে সেগুলো ভেতরে জমা হয়ে ব্রণ আকারে ফুলে ওঠে। ব্রণ জটিল কোনো রোগ নয়। সাধারণ কিছু ঘরোয়া টিপস ও ত্বকের প্রতি যত্নবান হলেই আমরা চাইলে এটি থেকে মুক্তি পেতে পারি।
ব্রণ থেকে পরিত্রাণে স্বাভাবিক করণীয়
যাদের মুখে তেল বেশি তাদের মুখে সাধারণত ব্রণ বেশি হয়ে থাকে। তাই ব্রণের হাত থেকে বাঁচতে মুখ সবসময় পরিষ্কার রাখুন এবং বাইরে থেকে ফিরেই মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপ্টা দিন।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য প্রতিদিন গোসল করুন:
* ব্রণের উৎপত্তি কমাতে বেশি বেশি মুখ ধোয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন অন্তত তিন থেকে চারবার মুখ ধুয়ে নিন। * সাবানের পরিবর্তে ফেসওয়াশ ব্যবহার করার অভ্যাস তৈরি করুন। * ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করতে নিয়মিত ত্বকে ময়দা, দুধ ও মধু লাগান। * মুখে ব্রণের দাগ যদি স্থায়ী করতে না চান তাহলে নখ দিয়ে ব্রণ খোঁটাখুঁটি করার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। * পর্যাপ্ত ঘুমান।
ব্রণ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস
প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস আমাদের ত্বকে অনেক প্রভাব ফেলে। তৈলাক্ত ভাজাপোড়া এসব খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের ব্রণের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই এসব খাবার একদম খাবেন না। ব্রণের হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন নিয়মিত শাকসবজি খান। নিয়মিত সবুজ শাকসবজি আর টাটকা ফলমূল খেলে আপনি ব্রণের হাত থেকে অনেকটা রক্ষা পাবেন। চিকিৎসকরা বলে থাকেন কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে ত্বকে ব্রণের দেখা দেয়। তাই চেষ্টা করুন সবসময় পেট পরিষ্কার রাখার। এর জন্য সবুজ শাকসবজি এবং টাটকা ফলমূল আপনার অনেক উপকারে আসবে। আর অবশ্যই প্রচুর পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। যত বেশি আপনি পানি খাবেন ততই আপনি বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকবেন। শরীরে যদি পানিশূন্যতা থাকে তাহলে এটি ত্বকের তৈলাক্ততার পরিমাণ বাড়িয়ে দিবে। যার ফলে ব্রণ ওঠার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৪ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ব্রণ প্রতিরোধে মৌসুমি ফল খাওয়া অনেক উপকারে আসে। প্রতিদিন রাতের খাবার খাওয়ার পরে কিছু পরিমাণ মৌসুমি ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকা, হাতের নখ নিয়মিত কাটা ও কিছু বদঅভ্যাস পরিহার করলে, আপনি চিকিৎসক ছাড়াই ব্রণ প্রতিরোধ করতে পারবেন।
লেখক: চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ ও চিফ কনসালট্যান্ট, কামাল হেয়ার এন্ড স্কিন সেন্টার।