ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংকট

প্রয়োজন আরও ২ লাখ শিক্ষক

পিয়াস সরকার
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, শনিবার

স্বাধীনতার পেরিয়েছে ৫০ বছর। বেড়েছে জনসংখ্যা, বেড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিনিয়ত বাড়ছে সাক্ষরতার হার। কিন্তু সমতালে বাড়েনি শিক্ষকের সংখ্যা। সারা দেশে শিক্ষক সংকট রয়েছে প্রায় দুই লাখ। এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের আসন ফাঁকা রেখেই চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।  বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯০ হাজার পদে কোনো শিক্ষক নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের এসব স্কুল, মাদ্রাসা, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও কলেজের প্রতিটিতে গড়ে তিন জন শিক্ষকের পদ শূন্য। এর মধ্যে ২৯ হাজার এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানেই আছে ৬৫ হাজার। বাকি পদগুলো এমপিওবিহীন প্রতিষ্ঠানে।

বিজ্ঞাপন
এনটিআরসিএ বলছে, এই বিপুল শূন্যতা পূরণে অক্টোবরে বা নভেম্বরে ৬০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২০১৬ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে নিয়োগের দায়িত্ব পায়। এখন পর্যন্ত তিনটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৬৮ প্রার্থী নিয়োগ দেয় এনটিআরসিএ। সর্বশেষ তৃতীয় বিজ্ঞপ্তিতে ৩৪ হাজার সেইসঙ্গে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আরও ১৫ হাজার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আবার সম্প্রতি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিরও কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 সারা দেশের এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান শূন্যপদের তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে। এরপর ৬০ হাজারের কিছু বেশি পদে নিয়োগের লক্ষ্যে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। আবার সরকারি প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট রয়েছে ৬০ হাজার। প্রতি মাসেই এই সংখ্যা বাড়ছে। এই শিক্ষকদের ঘাটতি পূরণে ইতোমধ্যে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাদের ফল আগামী মাসে দেয়ার কথা রয়েছে। আবার একইসঙ্গে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে ২৮ হাজার। এই শিক্ষকদের চাকরি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেই নভেম্বরের শুরুতে দেয়া হবে এই পরীক্ষার ফল। শিক্ষকের এই ঘাটতি পূরণে শিগগিরই ফের ৩০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।  মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ১৮০ জন। সেইসঙ্গে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক পদ খালি রয়েছে ৯০ ও ২৩৩টি। সরকারি মেডিকেলেও আছে শিক্ষক সংকট। দেশের ৭৩টি মেডিকেলে প্রয়োজন ৯ হাজার শিক্ষক। সরকারি মেডিকেলে আসন ফাঁকা রয়েছে ৭২৩টি ও বেসরকারি মেডিকেলে ৪৩৭৩।

 আবার দেশব্যাপী ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের তথ্যানুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষক রয়েছে। যাতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় এক কোটি। হিসেবে প্রতি দশ জনের জন্য একজন শিক্ষক দেখানো হলেও বাস্তবে এই সংখ্যা নিয়ে আছে ধোঁয়াশা। ঢাকা, রংপুর, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ ও দিনাজপুরের একটি করে মোট পাঁচটি স্কুলের হিসাবে দেখা যায়- এই পাঁচ স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৪৯১ জন। এর বিপরীতে শিক্ষক আছেন  ৫২ জন। সাধারণত ২০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক সন্তোষজনক ধরা হয়। সেই হিসেবে শিক্ষক থাকা প্রয়োজন ৭৪ জন। আবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বেসরকারি মাদ্রাসাগুলোরও একই হাল।

 এসব মাদ্রাসার শিক্ষক সংখ্যার হিসাব না মিললেও শিক্ষক সংকট রয়েছে ভয়াবহভাবে। রংপুর, নড়াইল ও লক্ষ্মীপুরের তিনটি বেরসারি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৪৩ জন। তাদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ১২ জন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষক রয়েছে। ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে  ২ লাখ ৯৭ হাজার ৯৫৭ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ১৫ হাজার ১৯৪ জন। কিন্তু এই শিক্ষকদের একটি অংশ আছেন বিভিন্ন ছুটিতে। আবার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা পাঁচ লাখ ১৯ হাজার ৬১৩ জন। তাদের বিপরীতে শিক্ষক আছেন মাত্র ১৩৭ জন। অর্থাৎ তিন হাজার ৭৯৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status