ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

সাবধান হোন উচ্চ কোলেস্টেরলের বিপদ থেকে

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুল হাই
২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার
mzamin

মানব শরীরের জন্য কোলেস্টেরল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শরীরের কোষ এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠনের জন্য এটি অপরিহার্য। কিন্তু উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল শরীরের জন্য বিষ হয়ে দেখা দেয়। হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ জীবন সংহারী বিভিন্ন রোগের অন্যতম কারণই হচ্ছে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল। আবার ডায়াবেটিসসহ শরীরের বিভিন্ন মেটাবোলিক রোগের জটিলতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে থাকে এ কোলেস্টেরল। তবে মানব শরীরের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে বিপদে ফেলে দেয় না। বড় কোনো সংকট এর পূর্বেই শরীরকে বিভিন্ন সংকেত দেয়। সেই ইঙ্গিতগুলি অনুধাবন করতে পারলে আগেভাগে সাবধান হওয়া যায়। ঠিক তেমনি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীর কিছু সংকেত দেয়। ত্বক,পা, পুরো শরীরেই অদ্ভুত কিছু লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে।

বিজ্ঞাপন
আমরা জানি, কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে তা রক্তনালির গায়ে জমে গিয়ে রক্তস্রোত সংকুচিত করে ফেলে। মূলত এ কারণেই ত্বক, পা ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভব হয়। শরীরের বিভিন্ন সংকেতের উৎপত্তি মূলত এখান থেকেই। 
এখন দেখা যাক, এ সংকেতগুলো কী রকম:

# হৃদপিণ্ডের দেয়ালের রক্তনালিগুলো কোলেস্টেরল জমে সরু হয়ে যাওয়ার ফলে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। ফলে দৈনন্দিন কাজকর্মে সহজেই ক্লান্তি  চলে আসে। 

# চোখের উপরের পাতায় হলুদাভ পিণ্ড দেখা দেয়। শরীরের অন্য জায়গায়ও এটা দেখা দিতে পারে। 

# রক্তনালি সরু হয়ে যাওয়ার কারণে পায়ে রক্তের অভাব হয়। সে কারণে পা মাঝে মাঝে ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

# অনেক সময় পা অসাড় বোধ করতে শুরু করে এবং কাঁপুনিও অনুভূত হয়।

# কোলেস্টেরল শুধু হার্টের রক্তনালিতে জমে না, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেও জমে। পুরুষাঙ্গের রক্তনালিগুলো সরু হয়ে যাওয়ার ফলে যৌন ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়।

# ব্লকেজের কারণে রক্ত চলাচল ঠিকঠাক হয় না। পায়ে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। অল্প কিছু হাঁটার পরেই অনেকের পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।

# উচ্চ কোলেস্টেরলের প্রভাব পায়ের নখে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। সাধারণত পায়ের নখ হালকা গোলাপি রঙের থাকে। রক্ত চলাচল বাধা পাওয়ার কারণে নখ হলুদ হতে শুরু করে বা তাতে দাগ দেখা দেয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া, দৈনন্দিন জীবনে উচ্চ স্ট্রেস ইত্যাদি কারণে রক্তে বাড়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা। প্রাথমিকভাবে এটা উপসর্গবিহীন হলেও পরবর্তীতে এটা জীবনের জন্য ডেকে আনে বিরাট হুমকি। 
পরিত্রাণ পেতে পারেন যেভাবে

সময়মতো উচ্চ কোলেস্টেরল এর লক্ষণগুলো জানা জরুরি। বয়স তিরিশের পরে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর অবশ্যই সিরাম লিপিড প্রোফাইল ল্যাবরেটরিতে পরিমাপ করা উচিত। জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে কোলেস্টেরলকে সহজেই আয়ত্তে নেয়া যায়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে কোলেস্টেরল কমানোর কিছু ওষুধ সেবন করতে হয়। স্বাভাবিক কোলেস্টেরল ভয়ঙ্কর কিছু রোগ থেকে মানষকে সুরক্ষা দেয়, সর্বোপরি স্বাভাবিক, সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনের জন্যও এটা অপরিহার্য।

লেখক: (চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ), জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার-১২, স্টেডিয়াম মার্কেট, সিলেট।
ফোন- ০১৭১২২৯১৮৮৭।
 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

   

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status