অনলাইন
ইউরোপের মানবাধিকার আদালতের চাঞ্চল্যকর রায়
রুশ ক্ষেপণাস্ত্রেই ধ্বংস এমএইচ ১৭ বিমান, মৃত্যু ২৯৮ জনের
মানবজমিন ডিজিটাল
(২১ ঘন্টা আগে) ১০ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:৩৩ অপরাহ্ন

নয় বছর আগে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলাতেই ধ্বংস হয়ে যায় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ ১৭ বিমানটি। যার জেরে মৃত্যু হয়েছিল ২৮৩ জন যাত্রী ও ১৫ জন বিমানকর্মীরা। এই চাঞ্চল্যকর রায় ঘোষণা করল ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার আদালত। এক দশক ধরে ইউক্রেনে নৃশংসতার অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল কিয়েভ ও নেদারল্যান্ডস। সেই মামলাতেও পুতিনের প্রশাসনের বিরুদ্ধে গিয়েছে মানবাধিকার আদালতের রায়। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে ভেঙে পড়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ ১৭। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী ওই বিমানটি। সেটি যখন পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল অতিক্রম করছিল, তখনই একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে বিমানটিতে। ওই সময় দোনবাস অঞ্চলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ধুন্ধুমার সংঘর্ষ চলছিল। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই যে বিমানটি ধ্বংস হয়েছিল তা নিশ্চিত করেছে ইউরোপের সর্বোচ্চ মানবাধিকার আদালত। এর ফলেই মৃত্যু হয় ৮০টি শিশু-সহ ২৮৩ জন যাত্রী এবং ১৫ জন বিমানকর্মীর।
স্ট্রাসবার্গের একটি আদালতের কক্ষে রায় পড়ার সময়, আদালতের বিচারপতি মাতিয়াস গুয়োমার বলেছেন, ‘প্রমাণ থেকে বোঝা যায় ক্ষেপণাস্ত্রটি ইচ্ছাকৃতভাবে ফ্লাইট এমএইচ ১৭ লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল, সম্ভবত তারা ভেবেছিলো এটি একটি সামরিক বিমান ছিল। বিচারকদের সামনে প্রমাণিত হয়েছে যে ফ্লাইট এমএইচ ১৭ ধ্বংসে রাশিয়ার জড়িত থাকার বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করতে মস্কোর ব্যর্থতা মৃতদের আত্মীয় এবং বন্ধুদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।’ মে মাসে, জাতিসংঘের বিমান সংস্থাও এই বিপর্যয়ের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে অন্যান্য রায়
এর পাশাপাশি আদালত রাশিয়াকে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস এবং ২০২২ সালের মস্কোর পূর্ণ-মাত্রায় আক্রমণের পরে ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে। আদালত জানিয়েছে, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে। হামলা চালিয়ে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা ও আহত করেছে, ভয় ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, এই মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলো কোনও সামরিক উদ্দেশ্যে নয়। ইউক্রেনের মনোবল ভাঙার কৌশলের অংশ হিসাবে যৌন সহিংসতাকে হাতিয়ার করেছে রাশিয়া। ৫০২-পৃষ্ঠার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে রাশিয়া ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশনের চুক্তিও লঙ্ঘন করেছে।
আদালত সম্পর্কে
European Court of Human Rights বা ইউরোপের মানবাধিকার আদালত হলো ইউরোপের কাউন্সিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা এই মহাদেশের শীর্ষ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান। আদালতের গভর্নিং বডি সর্বাত্মক আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসাবে ২০২২ সালে মস্কোকে বহিষ্কার করেছিল। তা সত্ত্বেও আদালত এখনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করতে পারে। আইনত, রাশিয়া এখনও কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য। আদালত পরবর্তী তারিখে আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়ে রায় দেবে, তবে রাশিয়ার বহিষ্কারের ফলে ক্ষতিপূরণ সংগ্রহ করা যাবে এমন আশা কম ।
সূত্র : এনডিটিভি