ডিএসসিসিতে গতি ফিরেছে সেবায়, চলছে আন্দোলনও

নগর ভবনসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে গতি ফিরেছে। সেবাপ্রত্যাশীদের আগমনও বেড়েছে। সেবার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিও করতে দেখা গেছে আন্দোলনকারী ঢাকাবাসীকে। নগর ভবনের প্রধান গেট এতদিন তালাবদ্ধ থাকলেও সোমবার সকালে খুলে দেয়া হয়েছে।

খিলগাঁও ও ধলপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সেবাপ্রত্যাশীরা আসছেন। কেউ জন্ম সনদের জন্য, কেউ আসছেন মৃত্যু সনদের জন্য আবার কেউ বা আসছেন ওয়ারিশ সনদের জন্য। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সেরে চলেও যাচ্ছেন। রোববার দুপুরে নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকাবাসীর ব্যানারে করা আন্দোলনের সমন্বয়ক সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি নাগরিকসেবা চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কর্মরতদের কাজে ফেরার আহ্বান জানান।

সরজমিন দেখা গেছে, সেবাপ্রত্যাশীরা খুব সহজেই দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে চলে যাচ্ছেন। এতে সেবাপ্রত্যাশীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। নগর ভবনের কর্মকর্তাদের সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে নগর ভবনের বিভিন্ন শাখায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করে নিজ কর্মস্থলে বসেন। তবে কিছু কর্মকর্তা গতকাল অফিসে আসেননি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু সেবা পেতে নাগরিকরা নগর ভবনে ভিড় করছেন।

মিরপুর এলাকার বাসিন্দা আরিফ বলেন, ছেলের লাইসেন্স হস্তান্তরের জন্য এসেছিলাম। খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে দিয়েছে। আয়েশা বেগম নামে  আরেকজন সেবাপ্রত্যাশী বলেন, আমি হোল্ডিং ট্যাক্স জমা দিতে এসেছিলাম। খুব দ্রুত কাজ হয়ে গেছে। 

ওদিকে, সোমবার নগর ভবনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারী ঢাকাবাসী। সকাল ১১টা থেকে নগর ভবনের মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর আগে সকাল থেকেই নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে নগর ভবনে আসতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। নগর ভবনের সিঁড়িতে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। স্লোগানে স্লোগানে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগও দাবি জানান।

সরজমিন দেখা গেছে, আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন অফিসের কক্ষ খুলে দিতে সহায়তা করছেন। সেবাপ্রতাশীদের সেবা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সে বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছেন। আবার শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করছেন তারা।

ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে গত ১৪ই মে থেকে ঢাকাবাসীর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সকল প্রকার নাগরিকসেবা বন্ধ রাখেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে ঈদুল আজহার আগে জরুরি সেবাসমূহ চালুর ঘোষণা দেন ইশরাক হোসেন। তারই ধারাবাহিকতায় নগর ভবনে টানা তিনদিন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সেসময় থেকেই নাগরিক সেবা সচল রাখারও ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন তিনি। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা চলমান নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত করে এর সকল দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাঁপিয়ে দেয়ার অপতৎপরতা চালাচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন ইশরাক।