শেষের পাতা
ভাইয়ের চেহারার সঙ্গে মিল
লাশ দাফনের সময় লঙ্কাকাণ্ড
জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
সিলেটের জকিগঞ্জে চেহারার সঙ্গে মিল থাকায় অজ্ঞাতনামা একজনের লাশ নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। পরে লাশ দাফনের সময় ঘটে এক কাণ্ড। পাশের এলাকা থেকে ফোন আসে এখনো জীবিত আছেন তিনি। রোববার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্রমতে, অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি গত কয়েকদিন থেকে জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতাল গেট সংলগ্ন যাত্রী ছাউনিতে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিল। স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় লোকটি শনিবার মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ গ্রামের বাবুল আহমদ ও তার স্বজনরা ছুটে যান জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে। সেখানে তাদের মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই সাবুল আহমদের (৫৫) চেহারার সঙ্গে অনেক মিল। ওই ব্যক্তিকে বাড়িতে নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তার পরিবার। তবে দাফনের আগে খবর আসে, যাকে মৃত মনে করা হচ্ছিল, তিনি জীবিত আছেন। পরে জানা যায়, ভুলে অন্য একজনের মরদেহকে নিজেদের স্বজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল। পরে পুলিশের অনুমতি নিয়ে ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়।
শনিবার রাতে বাবুল আহমদ ও তাদের মামাতো ভাই উজির উদ্দিন মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন। রোববার সকালে দাফনের প্রস্তুতির সময় গোসলের ঠিক পরপরই গঙ্গাজল এলাকা থেকে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানান, সাবু আহমদ জীবিত এবং তিনি গঙ্গাজল বাজারে অবস্থান করছেন। বিষয়টি জানার পর উজির উদ্দিন গঙ্গাজল বাজারে গিয়ে সত্যি তার ভাই সাবুকে জীবিত দেখতে পান। এ বিষয়ে উজির উদ্দিন জানান, শুধু তাদের পরিবার নয়, যারা লাশটি দেখেছেন সবাই বলছিলেন এটা সাবু আহমদ। কিন্তু তাদের ভাই বেঁচে ছিলেন। তিনি ভবঘুরে অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে করতে গঙ্গাজল এলাকায় গিয়েছিলেন। এরপর তাকে বাড়িতে আনা হয়। পরে নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ফিরিয়ে দিতে গেলে সেটি আর নিতে চায়নি। এরপর দুপুরে স্থানীয় এতিছানগর কবরস্থানে তারাই নিহত ব্যক্তির লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি জানান, তাদের ভাই রোববার রাতেও বাড়িতে ছিলেন। সোমবার সকালে আবার বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন।
সুলতানপুর ইউপি সদস্য শামীম আহমদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির লাশকে ভুল করে সাবু আহমদ ভেবে বাড়িতে আনা হয়েছিল। পরে দেখা যায়, সাবু আহমদ বেঁচে আছেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থাও তারাই করেছেন। জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ ছিল বলে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ মরদেহ নিতে গেলে জানানো হয়, পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে, যারা লাশটি শনাক্ত করেছিলেন তাদের সেই স্বজন বেঁচে আছেন। এরপর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ তারাই দাফনের ব্যবস্থা করেছেন।