প্রথম পাতা
ইসিতে নতুন দল নিবন্ধনের ৬৮ আবেদন, সময় শেষ রোববার
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ জুন ২০২৫, বুধবার
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ৬৮টি নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করেছে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ৬৫টি দলের আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করেছে। যাতে ১৪টি দলের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। বাকি দলগুলোর আবেদনের যাচাই এখনো চলমান। ইসি’র নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয়ার শেষদিন রোববার।
এর আগে গত ১০ই মার্চ এক গণবিজ্ঞপ্তিতে নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান করে ইসি। প্রথম দফায় ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। ওই সময়সীমার মধ্যে ৬৫টি দল আবেদন করে। এরপর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ ৪৬টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন জানালে কমিশন সময়সীমা ২২শে জুন পর্যন্ত বাড়ায়। বাড়ানো সময়ের মধ্যে এখন পর্যন্ত নতুন আরও ৩টি দল আবেদন করেছে। বাকি পাঁচদিনে এনসিপিসহ আরও কিছু নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করার কথা রয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, নতুন নিবন্ধন চাওয়া দলগুলোর নামের তালিকায় রয়েছে-বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ শান্তির দল, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন, জাতীয় ভূমিহীন পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি এবং জনতার কথা বলে-এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী ও আলোচিত নামের দল। সূত্র জানায়, নিবন্ধন পেতে আগ্রহী নতুন দলগুলোর আবেদন যাচাইয়ে গত ৮ই মে ১৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে ইসি। ওই কমিটি ইতিমধ্যেই ২০শে এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করা ৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করেছে। দলগুলোর মধ্যে ১৪টির আবেদন বাতিল করা হয়েছে। তারা ঠিকঠাক আবেদনই করতে পারেনি। বাকি দলগুলোর আবেদনের যাচাই এখনো চলমান।
এদিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে ১০টি তথ্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়। নিবন্ধন ফি দিতে হয় ৫ হাজার টাকা, যা অফেরতযোগ্য। এ ছাড়া দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি, তহবিলের উৎস, দল নিবন্ধনের আবেদনকারীর ক্ষমতাপত্র, নিবন্ধন ফি বাবদ অফেরতযোগ্য ট্রেজারি চালানের কপি এবং নিবন্ধনের তিনটি শর্তের মধ্যে যেকোনো একটি পূরণের প্রমাণ জমার বিধান রয়েছে। অন্যদিকে নতুন দলের নিবন্ধনের শর্ত হলো-দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সংবলিত তালিকা লাগবে। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে টিকে থাকা দলগুলো নিবন্ধন শর্ত পূরণ করছে কিনা তা যাচাই করতে মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন নেবে কমিশন। কোনো দলের নিবন্ধন নিয়ে কারও আপত্তি রয়েছে কিনা তাও দেখা হবে। বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর আপত্তি পেলে দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করবে কমিশন। প্রাথমিক বাছাইয়ে উৎরে গেলে এবং দাবি-আপত্তির নিষ্পত্তি হয়ে গেলে শেষ ধাপে নিবন্ধন সনদ পাবে সেই দল।
ব্যালট প্রকল্প এগিয়ে নিতে ফান্ডিং চুক্তি আজ: ওদিকে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় ব্যালট প্রকল্প এগিয়ে নিতে ফান্ডিং চুক্তি সই হবে আজ। বিকাল ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে ইসি ভবনে এই চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হবে। ইসি’র সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। ?আসন্ন জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ করার জন্য জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপি’র সহায়তায় ৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প এটি। এর আগে গত ২৮শে মে এই প্রকল্পের আওতায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), নির্বাচন কমিশন এবং ইউএনডিপি একটি চুক্তি সই করে।
চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ অ্যাডভান্সমেন্ট ফর ক্রেডিবল, ইনক্লুসিভ অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট ইলেকশনস ব্যালট নামে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ থেকে ২০২৭ সাল অর্থাৎ তিন বছর হবে। আর এ প্রকল্পের অর্থ ব্যয় হবে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে উপকরণ যেমন: ক্যামেরা, ল্যাপটপ, আইরিশ স্ক্যানার, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, সিগনেচার প্যাড, ডকুমেন্ট স্ক্যানার ক্রয়, সার্ভার সুরক্ষা, অপপ্রচার, গুজব, বিদ্বেষ ছড়ানো, নির্বাচনী আইনে জেন্ডার সংবেদনশীলতা, প্রবাসী ভোটিং, ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রম, সক্ষমতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, প্রচার কার্যক্রম, জেন্ডার সংবেদনশীল রিপোর্টিংয়ের ওপর গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণ, নারীদের ওপর সন্ত্রাস প্রতিরোধ কার্যক্রম প্রভৃতি খাতে।