খেলা
বিদায় বেলায় ম্যাথিউস
‘টাইমড আউট’ ভুলে গেছি, ওরা আমার বন্ধু
স্পোর্টস রিপোর্টার, (গল) শ্রীলঙ্কা থেকে
১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জায়গা পেতে যে ম্যাচ জেতার কোনো বিকল্প ছিল না শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ- দুই দলেরই। কিন্তু এক ‘টাইমড আউট’ কাণ্ডে বদলে গেল শ্রীলঙ্কার হিসাব-নিকাশ। লঙ্কান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস হলেন ইতিহাসের প্রথম ‘টাইমড আউট’ ব্যাটার। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ম্যাথিউসের বিপক্ষে এমন আউটের আবেদন করে আর ফিরিয়ে নেননি। কোনো বল না খেলেই তাই ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়েছিল লঙ্কান এই ক্রিকেটারকে। সেই থেকেই বাংলাদেশের বিপক্ষে তার ভীষণ ক্ষোভ আর অভিমান। জীবনে কি তা ভুলতে পারবেন! না, ভুলে যেতে চান তিনি। টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলার দিন তিনি এমনটাই জানালেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তার বন্ধু ছিলেন আর থাকবেনও- জানিয়ে দিলেন অকপটে। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। তারা আমার বন্ধু, তাদের বিপক্ষে (ব্যক্তিগতভাবে) আমার কিছু নেই। আমাদের সঙ্গে সব সময় ভালো (আচরণ) করেছে ওরা। ওই সময় আমাদের কিছু বাক্যবিনিময় হয়েছিল, কিন্তু আমি ক্ষোভ ধরে রাখি না। ক্ষোভ ক্রিকেটের জন্য খারাপ শব্দ।’
শ্রীলঙ্কার সোনালী যুগের শেষ তারকা বলা যায় তাকে। সেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস এবার থামছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া গল টেস্ট খেলেই ক্রিকেটের এই অভিজাত সংস্করণ থেকে অবসরে যাবেন ম্যাথিউস। কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডারকে বিদায় দিতে আয়োজনের কমতি রাখছে না শ্রীলঙ্কানরা। তার বিদায়ের ক্ষণে তার ক্যারিয়ারজুড়ে দেখানো অসাধারণ পারফরম্যান্সগুলোর পাশাপাশি আলোচনায় সেই টাইমড আউটের ঘটনাও। আরও একবার বাইশ গজে মুখোমুখি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। এই দুই দল মুখোমুখি হবে আর টাইমড আউট বিতর্ক স্মৃতিতে আনাগোনা করবে না তা কী হয়! তারওপর এই টেস্টটা আবার লাল বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের শেষ ম্যাচ। দুই দলের দ্বৈরথে সেই ঘটনাই আলোচনায় আসাটাই স্বাভাবিক। তবে এখন সেসব ভুলে শুধু বাংলাদেশ নিয়ে মধুর স্মৃতিগুলোই মনে রাখতে চান ম্যাথিউস। ২০১৪ সালে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লীগেও খেলেছেন নিয়মিত। সেসব স্মৃতি মনে করে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথিউস বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে অনেক খেলেছি। শুধু আন্তর্জাতিক নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেছি ওখানে। আমি খুব উপভোগও করেছি তখন। তারা সবাই আমার ভালো বন্ধু।’
ম্যাথিউস এর টেস্ট অভিষেক গল স্টেডিয়ামে। নিজের শততম টেস্ট ম্যাচটাও খেলেছেন এই মাঠেই। তাইতো কলম্বোর সন্তানের গলের প্রতি ভালোবাসাটা অন্যরকম। গল ক্রিকেটও তাকে বিদায় জানাতে করেছে রাজকীয় আয়োজন। মাঠের একপাশ জুড়ে তার বড় বড় ছবি। আলাদা করে সংবাদ সম্মেলনও আয়োজন করে। অন্যদিকে তারই বন্ধু মুশফিকুর রহীম এখনো খেলছেন বাংলাদেশ দলে। তবে ম্যাথিউস মনে করেন অনেক হয়েছে, এবার তরুণদের সুযোগ দেয়া উচিত। অবসর নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার শেষ কিছু ম্যাচ ভালো যাচ্ছে না। আমার মনে হয়েছে দলের বোঝা হয়ে যাচ্ছি। দলে এখন অনেক তরুণ ক্রিকেটাররা কড়া নাড়ছে। আমার মনে হয় তাদের সুযোগ দেয়া উচিত। সেই চিন্তা থেকেই অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর কেন গলে সেটি আসলে কাকতালীয় বিষয়। আমার টেস্ট অভিষেক, শততম টেস্ট এমনকি এবার এখান থেকে বিদায়ও নিচ্ছি।’