মুশফিকের জন্য সিমন্সের ‘উপভোগ মন্ত্র’

গলের আবহাওয়া আর বাংলাদেশ ক্রিকেটের বেশ মিল আছে। অনেকটা এখানকার মেঘ-বৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করা যায় টাইগারদের ক্রিকেটের সাফল্য ব্যর্থতা। যেমন গলে হঠাৎ রোদে হাঁটতে হাঁটতে আপনাকে ছাতা বের করতে হতে পারে বৃষ্টির জন্য। এমন দৃশ্য এখানে নিয়মিত। যেমন গত দুই দিন ধরেই এখানে চলছে রোদ আর বৃষ্টির খেলা। গতকাল সকালে টাইগাররা যখন মাঠে অনুশীলনে আসেন তখন আকাশে কালো মেঘ আর বৃষ্টি ঝরছে। পরের পুরোটা সময় আকাশে কখনো রোদ তো কখনো মেঘের খেলা। তবে তা বাধা হতে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তদের অনুশীলনে। যদিও দুপুরে তারা মাঠ ছাড়তেই আবারো ঝড়। বাংলাদেশের ক্রিকেটেও দারুণ খেলতে খেলতে খারাপ করার রোগটা এখনকার আবহাওয়ার চরিত্রের মতো। এই ভালো তো এই মন্দ। গলে যে দুটি টেস্ট খেলেছে দল সেখানেও একই চিত্র। 

২০১৩ তে দারুণ ব্যাটিংয়ে ম্যাচ ড্র করে দল। মুশফিকুর রহীমের ব্যাট থেকে ডাবল সেঞ্চুরি, মোহাম্মদ আশরাফুল ও নাসির হোসেনের সেঞ্চুরি। আবার ২০১৭ তে ব্যাটিং ব্যর্থতায় এখানে বড় ব্যবধানে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। যেহেতু মুশফিক এবারও দলে আছেন তাই তার দিকেও তাকিয়ে বাংলাদেশ। এবার কি তার ব্যাট ম্যাজিক দেখাবে? তার জন্য অবশ্য প্রধান কোচ ফিল সিমন্স দিয়েছেন অন্য এক মন্ত্র। তিনি বলেন, ‘আমি চাই সে (মুশফিক) যেন খেলাটা উপভোগ করে। ওই ইনিংস যেমন সে আনন্দ নিয়ে খেলেছিল, এবারও যেন সেটাই করে, তা-ই চাই। মুশফিকের কাছে আলাদা কোনো প্রত্যাশা নেই, সব খেলোয়াড়ের কাছেই আমার চাওয়া একই থাকবে।’ মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। তার আগে সফরকারী দলে কিছুটা দুশ্চিন্তা মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার গল টেস্ট শুরুর মাত্র দুই দিন আগে জ্বরে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। ব্যাটিং-বোলিংয়ে সমান অবদান রাখা মিরাজ খেলতে না পারলে দলের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে স্পিন বিভাগে, যেখানে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের সঙ্গে তিনিই মূল ভরসা। সিমন্সও তাই চিন্তার কথাই বললেন, ‘হ্যাঁ, এটি অবশ্যই কিছুটা চিন্তার বিষয়। তবে একজনের দুর্ভাগ্য অন্যের সুযোগ। যদি সে খেলতে না পারে, তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব নিতে হবে।’ প্রধান কোচ কেমন একাদশ হতে পারে তা নিয়ে তেমন কিছু জানাতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘উইকেট দেখে মনে হচ্ছে খুব ভালো। কাল আবার দেখা বুঝতে পারব।’ 

একাদশ  কেমন হবে, আর ওপেনিংয়ে দায়িত্ব নিবেন শান্ত এমন একটা গুঞ্জন রয়েছে। তা নিয়ে প্রধান কোচ অবশ্য নিজের মধ্যেই পরিকল্পনা রেখে দিলেন। শান্তকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো ব্যাটিং কম্বিনেশন ঠিক করিনি। কাল সিদ্ধান্ত হবে।’ অন্যদিকে শান্ত এখন শুধু টেস্ট অধিনায়ক। শ্রীলঙ্কায় আসার আগেই তার পরিবর্তে ওয়ানডে ফরম্যাটের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় মিরাজের কাঁধে। ধারণা করা হচ্ছিল এমন সিদ্ধান্ত শান্তর ওপর প্রভাব ফেলবে। তবে দলের  প্রধান কোচ তা মানতে নারজ। তিনি বলেন, ‘আমি একেবারেই মনে করি না যে এটি ওকে প্রভাবিত করবে। মাঠে নামলে নাজমুল শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, বাইরের বিষয় আমরা দেখি। তাই এটা ওর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।’
গলের উইকেটও আছে ম্যাচের আগে আলোচনায়। তবে এ  নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ প্রধান কোচ । কারণ এখানে উইকেটও যে বৃষ্টির সঙ্গে সন্ধি করে বদলায়। সিমন্স বলেন, ‘বৃষ্টির পরও উইকেট দেখতে ভালো লাগছে। আরও একটু সময় গড়ালে পরিস্থিতি বোঝা যাবে। উইকেট সবসময়ই ঘুরে এখানে, তবে কতটা ঘুরবে তা কাল বোঝা যাবে।’ তবে অধিনায়ককে নিয়ে তার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন অকপটে। দলে ফাস্ট বোলারদের নিয়েও আশাবাদী সিমন্স। অভিজ্ঞ পেসারদের ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সে (ইবাদত) অনেক দিন পর ফিরেছে। আশা করছি সে খেলতে পারবে। দলে ফিরে সে বেশ ভালো অবস্থায় আছে।’