ঢাকা, ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

দক্ষিণ আফ্রিকা আর ‘চোকার্স’ নয়

স্পোর্টস ডেস্ক
১৬ জুন ২০২৫, সোমবার
mzamin

‘চোকার’ শব্দটার দুঃস্বপ্ন দীর্ঘদিন ধরে তাড়া করেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। প্রোটিয়ারা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার পরও এ নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। তবে লর্ডসে শনিবার ফাইনালের চতুর্থ দিনই ৫ উইকেটে জিতে ২৭ বছরের আইসিসি ট্রফি-খরার অবসান ঘটায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপুটে জয় তুলে নিয়ে সমালোচকদের একহাত নিয়েছেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। 
এইডেন মার্করামের রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি আর বাভুমার হ্যামস্ট্রিং চোট নিয়েও হাঁকানো ফিফটিতে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই ২৮২ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডের এই ঐতিহাসিক মাঠে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের কীর্তি আছে স্রেফ একটি। ১৯৮৪তে ইংলিশদের বিপক্ষে ৩৪২ রানের লক্ষ্যে সেবার গর্ডন গ্রিনিজের দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে জয় তুলে নেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর ২০০৪-এ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের সমান ২৮২ রানের লক্ষ্যে জেতে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে ব্যাটিংয়ে ধুঁকেছে দু’দলই। নিজেদের প্রথম ইনিংসে স্রেফ ১৩৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তখন যে প্রসঙ্গটি ফের আলোচনায় চলে আসে, ‘চোকার্স’। তবে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে দলের ঢাল হয়ে থাকলেন এইডেন মার্করাম। ওপেনার মার্করাম ব্যক্তিগত ১৩৬ রানে পঞ্চম উইকেট হিসেবে যখন আউট হলেন, তখন দল জয়ের থেকে দূরে স্রেফ ৬ রানে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এ চক্রে ফাইনালের আগে অজিদের সঙ্গে খেলা হয়নি প্রোটিয়াদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও ম্যাচ পড়েনি। দেশের মাটিতে তিনটি সিরিজ খেলেছে ভারত, পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ঘরের বাইরে খেলা তিন সিরিজের মধ্যে দু’টি ছিল তলানির দিকের দল বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ড সফরই ছিল তাদের মূল পরীক্ষা। ফাইনালে জয়ের পর অধিনায়ক বাভুমা মনে করেন সমালোচনা, ধারণা, সবকিছুই এবার বদলে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা একটি দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছি। আমরা যে পথ বেছে নিয়েছিলাম, তা নিয়ে (অনেকের) সংশয় ছিল, বলা হচ্ছিল আমরা দুর্বল দলগুলোর সঙ্গে খেলছি। এই ধরণের পারফর্মেন্স দেখাতে পেরে আমরা খুশি এবং আশা করি, অমন ধারণা পাল্টে যাবে।’ লর্ডসের গ্যালারিতে যেভাবে দর্শকদের সমর্থন পাচ্ছিলেন, তাতে বাভুমার মনে হচ্ছিল যেন তারা ঘরের মাঠেই খেলছেন। এ প্রসঙ্গে এই ৩৫ বছর বয়সী ক্রিকেটার যোগ করেন, ‘বিশেষ কয়েকটি দিন ছিল (ফাইনালের)। গ্যালারিতে যে পরিমাণ সমর্থন পেয়েছি, এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে গেছি। কঠোর প্রস্তুতি নিয়েছি, এই মুহূর্তের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমরা অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে এখানে এসেছি। এ ধরণের ফলাফল পেতে যথেষ্ঠ ভালো খেলতে পেরেছি দেখে আমরা খুশি।’ ১৯৯৮তে শেষবার আইসিসি নকআউট ট্রফি জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই শিরোপা বাদ দিলে ১৯৯২ থেকে প্রতিটি বড় টুর্নামেন্টেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চাপ সামলে উঠতে পারেনি প্রোটিয়ারা। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিলিয়ে সাকুল্যে ১২ বার সেমিফাইনাল আর ১ বার ফাইনাল খেলেও শিরোপায় হাত রাখতে পারেনি তারা। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে চোকার্স প্রসঙ্গে একই কথা বলেছেন ফাইনাল সেরা মার্করামও। শব্দটি আর শুনতে চান না এই ডানহাতি ব্যাটার। তিনি বলেন, ‘অতীতে আমাদের নিয়ে যত প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সৌভাগ্যবশত এখন সবকিছুরই জবাব দেয়া হয়ে গেছে। এটি (চোকার্স) আর না শুনলেই ভালো হয়, কথাটি জোর দিয়েই বলছি। এই দলের জন্য তকমাটি ঝেড়ে ফেলা অনেক বড় ব্যাপার।’

খেলা থেকে আরও পড়ুন

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status