শেষের পাতা
বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৫ জুন ২০২৫, রবিবার
বাংলাদেশে সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বাড়াতে ২৫০ মিলিয়ন বা ২৫ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকদের পর্ষদে এই অর্থ অনুমোদন করা হয়েছে। শনিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি (সিটার) প্রকল্প’-এর আওতায় এই অর্থায়ন অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের বোর্ড। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারে চলমান সংস্কার কর্মসূচিগুলোকে সহায়তা করা হবে, বিশেষ করে পরিসংখ্যান ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব আহরণ, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ক্রয় প্রক্রিয়া ও আর্থিক তদারকির ক্ষেত্রে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটির আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ (বিপিপিএ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কার্যক্রমকে আধুনিক ও ডিজিটাল রূপ দেয়া হবে। এতে তথ্যের স্বচ্ছতা, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ক্রয়প্রক্রিয়া এবং আর্থিক নিরীক্ষায় জবাবদিহিতা ও দক্ষতা বাড়বে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, এই বিনিয়োগ সরকারের ডিজিটাল রূপান্তরকে উৎসাহিত করবে, যা স্বচ্ছতা বাড়াবে ও দুর্নীতির ঝুঁকি কমাবে। একইসঙ্গে জনগণের কাছে সরকারি পরিষেবার গুণমান ও প্রবেশাধিকার উন্নত হবে এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা বাড়বে।
প্রকল্পটির মাধ্যমে ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ, ট্যাক্স আদায়ে স্বেচ্ছানুভূতিতে অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হবে। সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানো, ই-জিপি’র দ্বিতীয় প্রজন্ম চালু এবং অডিট ব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর প্রকল্পের মূল অংশ।
বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার আরও একটি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট প্রস্তুত করছে, যা এ মাসের শেষ দিকে বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হবে। সেটিও স্বচ্ছতা, রাজস্ব আহরণ, ব্যাংকিং খাত, তথ্য ব্যবস্থাপনা, সরকারি বিনিয়োগ, অডিট এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। সিটার প্রকল্প এই উদ্যোগগুলোর পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং প্রকল্পটির টিম লিডার সুলেমান কুলিবালি বলেন, একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্প এবং ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট উভয়ই সরকারকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও জনপরিষেবা উন্নয়নে সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারের সমন্বিত সমর্থন দেবে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বেশি অনুদান, সুদমুক্ত ও স্বল্প সুদের ঋণ দিয়েছে। সামপ্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাংকের ছাড়কৃত আইডিএ (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন) ঋণপ্রাপ্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে।