শেষের পাতা
সদ্য বিবাহিত তরুণীর চিকিৎসক স্বামীর সঙ্গে মিলন হলো না
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
১৪ জুন ২০২৫, শনিবার
মাত্র ৫ মাস আগে বিয়ে হয়েছিল রাজস্থানের তরুণী খুসবুর। বালোত্রা জেলার আরাবা দুদাওতা গ্রামের বাসিন্দা মদন সিংহের কন্যা ছিলেন তিনি। গত জানুয়ারিতে লন্ডনের চিকিৎসক বিপুল সিংহ রাজপুরোহিতের সঙ্গে বিয়ে হয় খুশবুর। বিপুল রাজস্থানের লুনি বিধানসভা এলাকার খারাবাইরা পুরোহিতানের বাসিন্দা। বিপুলের সঙ্গে বিয়ের পর এই প্রথম বার লন্ডনে যাচ্ছিলেন খুশবু। কিছুদিন আগেই পাসপোর্ট হাতে পান। তারপর ভিসা। বুধবার তিনি তার গ্রাম থেকে আহমেদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানেও চড়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে বহু প্রতীক্ষিত মিলনের স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে ভেঙে পড়ে বিমানটি। মৃত্যু হয় খুশবুর। বাড়ি থেকে বেরনোর সময়কার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে ধরে হাপুস নয়নে কাঁদছেন তরুণী। পরিবারের সদস্যদেরও চোখে জল। কাঁদতে কাঁদতে পরিবারের গুরুজনদের প্রণাম করছেন তরুণী। এর পর চোখে জল নিয়েই পরিবারকে বিদায় জানিয়ে একটি গাড়িতে চড়ে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন। দাবি, ভিডিও’র তরুণী আদতে খুশবু এবং পরিবারকে ছেড়ে লন্ডনে স্বামীর কাছে যাওয়ার আগে ওই ভাবে কাঁদছিলেন। খুশবুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন রাজস্থানের সাবেক মন্ত্রী এবং বায়তুর বিধায়ক হরিশ চৌধুরী। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় থার পরিবারের মেয়ে খুশবু রাজপুরোহিতের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। ঈশ্বর তার আত্মাকে শান্তি দিন এবং শোকাহত পরিবারকে সাহস দিন।
মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন রোশনি রাজেন্দ্র সোনঘারে। সত্যি হয়েছিল স্বপ্ন, গর্ব ছিল বিমানসেবিকার ইউনিফর্ম। অভিশপ্ত বিমানে দায়িত্বপালনে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৭ বছর বয়সী রোশনির। এয়ার ইন্ডিয়ার কেবিন ক্রু ছিলেন তিনি। তবে তার অন্য পরিচয়ও ছিল। ট্রাভেল ব্লগার হিসেবে সমাজমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে জনপ্রিয় ছিলেন রোশনি।
অভিশপ্ত বিমানে আরও একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু হয়েছে। রাজস্থানের এক চিকিৎসক দম্পতি স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে তিন সন্তানসহ বিমানে উঠেছিলেন। বিমানে তাদের একটি সেলফি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। চিকিৎসক কোমি বিয়াস উদয়পুরের একটি হাসপাতালে চাকরি করতেন। স্বামী প্রতীক যোশি ছিলেন লন্ডনপ্রবাসী চিকিৎসক। স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকতে কোমি উদয়পুরে হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে তিন সন্তানকে নিয়ে তারা লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রাও শুরু করেন। তাদের চোখে-মুখে যে আনন্দ ছিল, তা সেলফিতে স্পষ্ট। সেলফিতে দেখা যায়, চিকিৎসক প্রতীক ও তার স্ত্রী কোমি এক পাশে বসা, দুজনের মুখেই হাসি। আরেক সারিতে বসে তাদের আট বছরের মেয়ে মিরায়া ও পাঁচ বছরের যমজ ছেলে-নকুল ও প্রদ্যুত। দুই ছেলেকে দেখে মনে হচ্ছে তারা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করছে, আর মেয়ে মিরায়া প্রাণ খুলে হাসছে।