খেলা
জামাল যেখানে পথ প্রদর্শক
স্পোর্টস রিপোর্টার
১১ জুন ২০২৫, বুধবার
২০১৩ সালে প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে নেপালে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেয়া জামালের। এরপর টানা এক যুগ ধরে লাল-সবুজের জার্সিতে খেলে চলছেন জামাল। এরিমধ্যে জাতীয় দলের হয়ে ৮৫তম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন জামাল। দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্বও দিচ্ছেন বাংলাদেশ দলের। জামালের পথ ধরেই এরপর জাতীয় দলে আসেন ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া তারিক কাজী। জাতীয় দলে তাঁর অন্তর্ভুক্তি উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছে সমর্থকদের। তবে সর্বশেষ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হামজা চৌধুরীর লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চাপান। মাঝে সাবেক ক্রিকেট হালিম শাহের ছেলে কানাডা প্রবাসি কাজেম শাহ ডুক পরেন জাতীয় দলে। বদলি হিসেবে মাঝে মধ্যে খেলার সুযোগ হলেও কাজেম প্রথম একাদশে সুযোগ পান ৪ঠা জুন ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে। এরইমধ্যে জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে ইতালি প্রবাসী ফাহমিদুল ইসলাম। বাংলাদেশ দলে পঞ্চম প্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল।
গতকাল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছে আরেক প্রবাসী কানাডা জাতীয় দলের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলা শমিত সোমের। কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব কাভালরি এফসির মিডফিল্ডার শমিত সোম ২০১৬ সালে কানাডার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৭টি ও ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন ৪টি ম্যাচ। ২০২০ সালে কানাডার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেন দুটি ম্যাচ। গত ২৫শে মার্চ ভারতের শিলংয়ে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে হামজার স্মরণীয় অভিষেকের পর এই আগ্রহ আরও বেড়েছে। এই ছয় ফুটবলার বাদেও বাংলাদেশের হয়ে খেলতে এখন পর্যন্ত নতুন করে ১৩টি দেশে বসবাস করা ৩২ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম। সবচেয়ে বেশি ১২ জন ইংল্যান্ডের। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, পর্তুগাল, জ্যামাইকা, সোমালিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশের ফুটবলারও আছেন তালিকায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ইংল্যান্ডের করিম হাসান স্মিথ, আশিকুর রহমান, ইলমান মতিন, হারুন সালাহ, নাবিল রহমান; ফ্রান্সের ফারহান মাহমুদ, কানাডার নাবিদ আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্রের আমির সামি। হামজা শতিদেও আগমনে দেশের ফুটবলে প্রাণ ফিরেছে। মাঠে আসতে শুরু করেছে দর্শক। মরা ফুটবলে পানি আসাতে মিডিয়াও হুমরি খেয়ে পরেছে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতেই প্রবাসি ফুটবলাররা আসতে চাইছেন। কিন্তু জামাল যখন এসেছেন তখন দেশের ফুটবলে কিছুই ছিল না। জাতীয় দলের খেলাও ছিল অনিয়মিত। ভুটানের কাছেও হেরেছে বাংলাদেশ। সাফ ফুটবলেও নিয়মিত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতো লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ফুটবলের মরা অবস্থাতেও জামাল পরে রয়েছেন বাংলাদেশে। পরিণত হয়েছেন দেশের ফুটবলের পোস্টার বয় হিসেবে। সেই জামাল কাল ছিলেন না সিঙ্গাপুর ম্যাচের একাদশে।