ঢাকা, ১৩ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

দায় এড়াতে পারে না বাফুফেও

স্পোর্টস রিপোর্টার
১২ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
mzamin

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ফুটবল ফিরেছে। দুই ম্যাচ নিয়ে দর্শক আগ্রহ নতুন বার্তা দিয়েছে। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থ। টিকিট নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড ঘটিয়েছেন। সাধারণ দর্শক টিকিট পায়নি। টিকিট চলে গিয়েছিল ‘মৌসুমী’ ফুটবল দর্শকদের হাতে। ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই গেট ভেঙে টিকিট ছাড়া দর্শকের গ্যালারিতে ঢুকে যাওয়ার অভিযোগ আছে। কেবল মাঠে নয়, শৃঙ্খলা ছিল না টিম ম্যানেজমেন্টেও। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ ম্যাচকে অতি বাণিজ্যিকীকরণ করতে গিয়ে ফুটবলারদের নাজেহাল করে ছেড়েছেন বাফুফের কর্তাব্যক্তিরা।

সাধারণত ফিফা এএফসি’র এ ধরনের ম্যাচে খুব বেশি আনুষ্ঠানিকতা দেখা যায় না কোথাও। কিন্তু বাফুফে এই ম্যাচকে সামনে রেখে যা  করেছে তা আসলে সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। ম্যাচটিকে টাকা আয়ের খাত বানাতে গিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে সাধারণ দর্শকদের। টিকিটের দাবিতে দিনের পর দিন আন্দোলন করেছেন যারা তারা টিকিট পাননি। অথচ টিকিট পেয়েছেন বনানী ক্লাব, অলকমিউনিটি ক্লাবের কর্মকর্তারা। পেশাদার লীগের ক্লাবগুলোকেও চাহিদা মতো টিকিট দেয়া হয়নি। ফুটবলারদের ব্যবহার করা হয়েছে নানাভাবে। বিশেষ করে হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমকে। একদিনে সাত আটটা করে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা গেছে এই দুই ফুটবলারকে। চাইলেই যে কেউ হোটেলে ছবি তুলতে পেরেছেন হামজা-শমিতের সঙ্গে। স্পন্সরদের খুশি করতে তাদের ডেকে এনে ছবি তোলানো হয়েছে। ৪ঠা জুন ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচের পর ১০ই জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের মাঝের দিনগুলোতে ছিল ঈদের আমেজ। তবে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন থেমে ছিল না। 

মজার বিষয় হলো, এবার বাংলাদেশ কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্ট বেশি উৎসাহিত ছিল ক্লোজড-ডোর অনুশীলনে। এমনকি হামজা চৌধুরী যেদিন প্রথম ঢাকা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেছেন সেদিনও বাফুফে টাঙিয়ে দিয়েছিল ‘ক্লোজ-ডোর’ অনুশীলনের নোটিশ। এটা দোষের কিছু না। কোচ মনে করলে ক্লোজড-ডোর, ওপেন-ডোর যে কোনো অনুশীলন করাতে পারেন। তবে লক্ষ্যনীয় ছিল যে, মাঠে ক্লোজড-ডোর অনুশীলন হলেও হোটেল ছিল উম্মুক্ত। ম্যাচের আগের দিন টিম হোটেলেই এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল দলের ম্যানেজার আমের খানকে। পৃথিবীর কোথাও কি আছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তারকা খেলোয়াড়দের এভাবে ইন্টারভিউয়ের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়? এমন প্রশ্নে আমের খানের জবাব ছিল, ‘আরো বড় কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করেন।’ বাফুফের কাছে অবশ্য ম্যাচ বড় ছিল না, বড় ছিল হাঁক-ডাক। সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মুজিববর্ষে দাপটে ব্যবসা করা ফাহাদ করিমের হাতেই ছিল এই ম্যাচের মূল চালিকা শক্তি। ম্যাচের মার্কেটিংয়ের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। মুখে ভলান্টারি জবের কথা বললেও হাই-ভোল্টেজ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নামে তার প্রতিষ্ঠান কে-স্পোর্টসের লোকজনকেই ম্যাচের ইভেন্টের কাজ করতে দেখা গেছে। এমনকি ভিআইপি বক্সের একটি কক্ষও বরাদ্দ ছিল কে-স্পোর্টসের নামে। এই কে-স্পোর্টস মুজিববর্ষে সারা দেশে কাউন্টডাউন ঘড়ি তৈরির কাজ করেছে । এবার মাঠের বাইরে খেলোয়াড়দের নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের বাড়াবাড়ির নেতিবাচক প্রভাব ছিল মাঠেও। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের হামজা ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের হামজাকে একটু মিলিয়ে দেখলেই পরিষ্কার হবে সবকিছু।

খেলা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status