ফাইনালের চিন্তা নয় উন্নতি চান শান্ত

চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর। আগামী ১৭ই জুন গলে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে ২০২৫-২৭ সার্কেলের। আগের তিন চক্রে ক্রমাগত উন্নতি করা বাংলাদেশ এবারও ধরে রাখতে চায় সেই ধারা। তবে এখনই ফাইনালের স্বপ্ন না দেখে ছোট ছোট লক্ষ্যে এগোনোর কথা বললেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজ ছাড়াও বাকি দুই ফরম্যাটেও সিরিজ খেলবে টাইগাররা। গতকাল দেশ ছেড়েছেন নাহিদ রানা, ইবাদত হোসেন চৌধুরীসহ বাংলাদেশ দলের ১০ সদস্য। বাকিরা যাবেন আজ।

গতকাল সফর পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সেখানে ক্রমান্বয়ে উন্নতি করার প্রসঙ্গে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাকে। শান্ত অবশ্য এখনই এসব নিয়ে চিন্তা করতে চান না। তিনি বলেন, ‘এটা তো অনেক বড় স্বপ্ন। এত দূরে এখনই চিন্তা করলে বোকামি হবে আমার কাছে মনে হয়। ছোট ছোটভাবে যদি এগোতে পারি তাহলে খুব ভালো। এর আগের সার্কেলে আমরা একটা ম্যাচ জিতেছিলাম। গত সার্কেলে চারটা ম্যাচ জিতেছি। একটু উন্নতি হয়েছে। টার্গেট থাকবে এবারের সার্কেলে কীভাবে আরও ২-৩টি ম্যাচ বেশি জিততে পারি। ছোট ছোট চিন্তা করে যদি এগোতে পারি, কেন না? একদিন হয়ত বাংলাদেশ দলও ফাইনাল খেলবে। আগামী দুই বছরে গত চক্রের চেয়ে কীভাবে ভালো ফলাফল করতে পারি এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
২০১৯ সালে শুরু হওয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে সাত ম্যাচে কোনো জয় পায়নি বাংলাদেশ। পরের চক্রে ১২ ম্যাচে ১টি জিতলেও তলানিতে ছিল তারা। তবে গত চক্রে পাকিস্তানকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করে চমক উপহার দেয় বাংলাদেশ। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়েও একটি ম্যাচ জেতে টাইগাররা। এর আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হারায় শান্তর দল।

সব মিলিয়ে ১২ ম্যাচে ৪টি জিতে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে ৭ নম্বরে থেকে এবারের চক্র শেষ করে বাংলাদেশ। ধারাবাহিক উন্নতির এই পথে থেকে ধীরে ধীরে বড় স্বপ্নের দিকে এগোতে চান শান্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ) শুরু করেছিলাম, এর আগের চক্রে ১টি ম্যাচ জিতেছি। পরের চক্রে আমরা ৪টা জিতেছি। তার মানে একটু উন্নতি হয়েছে। এই চক্রে লক্ষ্য থাকবে কীভাবে আমরা ২-৩টা ম্যাচ বেশি জিততে পারি। যদি এভাবে ছোট ছোট চিন্তা করে এগোতে পারি... কেন নয়? একটা সময় হয়তো বাংলাদেশ ফাইনাল খেলবে। এই দুই বছরের মধ্যে আমরা কীভাবে আরও ভালো ফল পেতে পারি, সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আসন্ন চক্রে নিজেদের লক্ষ্যটাও পরিষ্কার করে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শান্ত বলেন, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা গত বছর (চক্রে) ৭ নম্বরে শেষ করেছি। এই বছর তো অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে যেন ৪-৫-৬ নম্বরের মধ্যে আসতে পারি। তাহলে খুব ভালো হয়। গত বছর (চক্রে) জয়ের হার সম্ভবত ৪৫ শতাংশ (আসলে ৪৫ পয়েন্ট ও ৩১.২৫ শতাংশ) ছিল। এখান থেকে যদি বাড়াতে পারি, ৫০-৫৫ বা ৬০ শতাংশ হলে, একজন অধিনায়ক হিসেবে আমার মনে হয়, ভালো একটা ফল হবে আমাদের।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সবশেষ চক্রে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক ছিল না। দেশে ছয় ম্যাচে মাত্র একটি জিতেছিল তারা। বিপরীতে দেশের বাইরে ছয় ম্যাচে ছিল তিন জয়। এবার দেশের মাঠে ভালো করার দিকে জোর দিতে চান শান্ত। তিনি বলেন, ‘ঘরের মাঠের ম্যাচগুলো জিততে হবে। সবশেষ চক্রে ঘরে আমরা খুবই বাজে খেলেছি। ঘরের মাঠে যদি জিততে পারতাম, তাহলে (ওই চক্রে) হয়তো আরও ২-৩টা ম্যাচ বেশি জেতা থাকত। চিন্তা সেটাই, ঘরে কীভাবে আমরা জিততে পারি। দেশে খেলা হলে আরও ভালো পরিকল্পনা করে খেলব ইনশাল্লাহ। ঘরের বাইরে ভালো হয়েছে, এই আত্মবিশ্বাস কাজে দেবে। এই বছর যদি আমরা বাইরের মাঠেও ফল পেতে পারি, তাহলে এই চক্রে আমাদের ফল আরেকটু ভালো হবে।’

পাকিস্তান সফর থেকে ফিরে ঈদে খুব বেশি ছুটি কাটাতে পারেননি টাইগাররা। মিরপুরে ক্যাম্প হয়েছে, নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন। শান্ত বলেন, ‘প্রস্তুতি মোটামুটি ভালোই হয়েছে। তবে আরেকটু ভালো হতে পারত। পাকিস্তান সফর একটু পিছিয়ে যাওয়ায় সময় একটু কম পাওয়া গেছে। তবে অজুহাত দিতে চাই না। যতটুকুই হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। এর আগে আমরা শ্রীলঙ্কায় টেস্ট জিতেছি। আশা করব এবারো ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ।’