বাংলাদেশের পথে হাঁটতে চায় ভারতের ফুটবল

এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশ, হংকং, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আছে ভারত। ফিফা র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী সবার উপরে ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতই । গ্রুপের খেলা শুরুর আগে র‌্যাঙ্কিংয়ে পাশের দেশ ভারতের র‌্যাঙ্কিং ছিল ১২৫। বাংলাদেশ ১৮৩, সিঙ্গাপুর ১৬০ ও হংকংয়ের অবস্থান ছিল ১৫৫তম। দুই রাউন্ড শেষে র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রতিফলন দেখা যায়নি ভারতের খেলায়।  বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে কোন রকমে হার এড়িয়েছে ভারত। হংকংয়ের কাছে হেরেছে দ্বিতীয় ম্যাচে। দলটির টানা ব্যর্থতায় সমালোচনা হচ্ছে চারদিকে। ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে সেদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। এই অবস্থায় নড়েচড়ে বসেছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)। দেশটির গণমাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এআইএফএফ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এবার থেকে প্রবাসী ভারতীয়দেরও জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে সরকারের কাছে। সেই আবেদন ভালোভাবে খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার।
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হয়ে বাংলাদেশের ফুটবলে আবির্ভাব ঘটেছে হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলা এই ফুটবলারকে পেয়ে প্রাণ ফিরেছে দেশের ফুটবলে। মাঠে দর্শক ফিরতে শুরু করেছে। খেলারও উন্নতি চোখে পরছে। হামজার উপস্থিতিতে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ ভারতের মাটিতে ভারতের সঙ্গে ড্র করে ফিরেছে। ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুর ম্যাচে হামজা চৌধুরীর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ইতালি ফাহমিদুল ইসলা ও কানাডা জাতীয় দলে খেলা শমিত সোম। রেফারির কিছু বাজে সিদ্ধান্ত ওই ম্যাচে হয়তো জয় পায়নি বাংলাদেশ। তারপরেও  প্রবাসী ফুটবলারদের ভেলায় চড়ে ফুটবলে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন সমর্থকরা। এবার দলের হাল ফেরাতে প্রবাসীদের টানার কথা ভাবছে ভারতও। দেশটির গণমাধ্যমকে ভারতীয় এক ফুটবল কর্মকর্তা জানিয়েছেন,  ‘আমাদের প্রেসিডেন্ট একাধিক সরকারি দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে আপাতত ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে। আমাদের হাতে অবশ্য কিছু নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার আমাদের কথায় সায় দেবে, সেই নিয়ে আমরা আশাবাদী।’ প্রবাসী ভারতীয়রা জাতীয় দলের জার্সিতে খেললেই যে রাতারাতি সাফল্য আসবে না, সেটাও মনে রাখতে বলছেন ওই ফেডারেশন কর্মকর্তা। তার কথায়, প্রবাসী ভারতীয়রা যদি জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান তাহলে প্রথম একাদশ গড়ার জন্য অনেক বিকল্প থাকে হাতে। তাছাড়াও এই ফুটবলাররা অনেক উন্নতমানের লীগে ক্লাব ফুটবল খেলে থাকেন। তাদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা থেকে সমৃদ্ধ হতে পারে ভারতীয় ফুটবল। তবে প্রবাসী ভারতীয়রা এলেই পরপর জিততে শুরু করবে এমন আশা না রাখাই উচিত। ভারতীয় ফুটবলে দুর্দিন চলছে। অবসর ভেঙে দলে ফেরা সুনীল ছেত্রীও খুব একটা সুবিধা করতে পারছেন না। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকংয়ের কাছে হেরে গেছে টিম ইন্ডিয়া। ফেডারেশনের ওই কর্মকর্তা বলেন, আপাতত ফেডারেশনের তরফ থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে যে প্রবাসী ভারতীয়রা খেললে ভালো হয়। প্রবাসী ভারতীয়দের কাজে লাগাতে চায় ফেডারেশন। হংকংয়ের বিরুদ্ধে জিততে পারলে জাতীয় দলের জন্য আর্থিক পুরস্কার ঘোষণার সিদ্ধান্তকেও সমর্থন করেছেন তিনি।