ফাইনালের প্রথম দিন পেসারদের দাপট

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিন লড়াই হয়েছে সেয়ানে-সেয়ানে। বুধবার শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়া গুঁটিয়ে যায় ২১২ রানে। শেষ সেশনে ৪৩ রানেই ৪ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কাগিসো রাবাদা ও মার্কো ইয়ানসেনের আগুনঝরা বোলিংয়ের পর মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স আর জশ হ্যাজলউডের জবাবে দিনের ১৪ উইকেটের ১২টিই তুলে নেন পেসাররা।

লর্ডসে প্রায় ১১৩ বছর পর মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকা। টসে জিতে অজিদের আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তিনি বলেন, ‘উইকেট ভালো হলেও কন্ডিশনের জন্য আমরা আগে বোলিং করব।’ অধিনায়ককে সঠিক প্রমাণ করতে খুব বেশি সময় নেননি রাবাদা-ইয়ানসেনরা। বোলিং সহায়ক কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে ৫১ রানের খরচে ৫ উইকেট তুলে নেন রাবাদা। ঐতিহাসিক এই মাঠে রাবাদার এটি দ্বিতীয় ফাইফার। টেস্টে এখন তার উইকেট সংখ্যা ৩৩২। কিংবদন্তি পেসার অ্যালান ডোনাল্ডকে (৩৩০) ছাড়িয়ে লাল বলের ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ শীর্ষ উইকেট শিকারি এখন রাবাদাই। বাঁহাতি পেসার ইয়ানসেন নেন ৩ উইকেট। দুই পেসারের দাপটে দিনের শুরুটা ঠিকঠাক করতে পারেনি অজি ওপেনাররা। ২০ বল খেলেও রানের খাতা না খুলে ফিরতে হয় উসমান খাজাকে। অজি ওপেনারদের মধ্যে এর চেয়ে বেশি বল খেলে শূন্য রানে আউট হওয়ার বিব্রতকর নজির আছে আর মাত্র দু’জনের, ডেভিড ওয়ার্নার (২২) ও শন মার্শ (২০)। ব্যক্তিগত ১৭ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন মার্নাস লাবুশেন। দলীয় রানের খাতায় স্রেফ ৪ রান যোগ করে ফেরেন ২৯ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিনে নামা ক্যামেরন গ্রিন। ট্রাভিস হেড ফেরেন ব্যক্তিগত ১১ রানে। দলীয় ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পেসারদের কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলে ফিফটি করেন স্টিভেন স্মিথ ও বাউ ওয়েবস্টার। মধ্যাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় সেশনে ওভারপ্রতি সাড়ে ৪ রানের বেশি করে রান নেন এই দু’জন। ব্যক্তিগত ৬৬ রানের ইনিংস খেলার পথে একাধিক কীর্তি গড়েছেন স্মিথ। লর্ডসে বিদেশি খেলোড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান (৫৯১) ও ইংল্যান্ডের মাটিতে বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফিফটি (১৮) এখন এই ডানহাতি ব্যাটারেরই। ব্যক্তিগত ৮ রানে একবার জীবন পাওয়া ওয়েবস্টার শেষ পর্যন্ত ৭২ রানে খেলেন এদিনের সেরা ইনিংস। তবে শেষ সেশনে আর লড়াই করতে পারেনি অজিরা। স্রেফ ৫.৪ ওভারে ২২ রানে ৫ উইকেট তুলে নেন প্রোটিয়া পেসাররা। অ্যালেক্স ক্যারিকে ফিরিয়ে যদিও এর শুরুটা করেন কেশব মহারাজ।

অস্ট্রেলিয়াকে আড়াইশ’র আগেই বন্দি করে ফেলার সুখটা বেশিক্ষণ টেকেনি প্রোটিয়াদের। প্রথম ওভারেই ওপেনার এইডেন মার্করামের স্টাম্প ভাঙেন স্টার্ক, দলের খাতায় তখনও কোনো রান যোগ হয়নি। নবম ওভারে এই বাঁহাতি পেসারের বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রায়ান রিকেলটনও। দলীয় ২৫ রানের মাথায় উইয়ান মুলদারকে আউট করেন কামিন্স। দিনের শেষ উইকেট হিসেবে ট্রিস্টান স্টাবসকে তুলে নেন হ্যাজলউড। ব্যক্তিগত ৩ ও ৮ রানে প্রথম দিন অপরাজিত থাকেন বাভুমা ও ডেভিড বেডিংহ্যাম।