খেলা
‘পা ভাঙলে ভাঙুক ট্রফি চাই’
স্পোর্টস ডেস্ক
১১ জুন ২০২৫, বুধবার
উয়েফা ন্যাশনস লীগের ফাইনালে দলের সমতাসূচক গোলটি করে ম্যাচ টাইব্রেকার পর্যন্ত নিয়ে যান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২-২ গোলে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে জিতে শিরোপা উল্লাসে ভাসে পর্তুগাল। দ্বিতীয়বার এই শিরোপা জয়ের পর সিআরসেভেন খ্যাত রোনালদো বলেন, ‘পা ভাঙলে ভাঙুক, কিন্তু ট্রফি লাগবেই।’ ক্লাব ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য প্রায় সবকিছু জেতার পর দেশের হয়ে শিরোপা জয়ই রোনালদোর কাছে অন্যসব ট্রফির চেয়ে বড়।
২৩ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারে পৃথক ৩২টি ট্রফি জিতেছেন পর্তুগিজ এই মহাতারকা। আর জাতীয় দলের হয়ে এ নিয়ে শিরোপা উৎসব করলেন তিনবার। পর্তুগালের জার্সিতে প্রথমবার ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে পর্তুগিজরা। রোববার রাতে জার্মানির অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় ৬১তম মিনিটে দল যখন ২-১ গোলে পিছিয়ে, তখনই ত্রাতা হয়ে আসেন রোনালদো। নুনো মেনদেসের বাঁ প্রান্তের ক্রস প্রতিপক্ষ একজনের পায়ে লেগে আরও উপরে উঠে গেলে তা গোলপোস্টের একদম সামনেই পেয়ে যান এই ৪০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ট্যাপ-ইনে আদায় করেন নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ১৩৮তম গোল। টাইব্রেকারে স্পেনের আলভারো মোরাতা পেনাল্টি মিস করার পর রুবেন নেভেস জয়সূচক গোলটি করার পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি রোনলাদো।
নিজের আনন্দাশ্রু সামলে নিয়ে পরে স্পোর্ট টিভিকে তিনি বলেন, ‘কী যে আনন্দ লাগছে! প্রথমত, এই প্রজন্মের জন্য। যারা এমন বড় একটি শিরোপার দাবিদার ছিল। আমাদের পরিবারগুলোর জন্যও।’ দেশের জার্সিতে জেতা ট্রফিই রোনালদোর কাছে সবচেয়ে বড়। তিনি বলেন, ‘পর্তুগালের হয়ে জেতাটা সবসময়ই বিশেষ কিছু। ক্লাবের হয়ে আমার অনেক ট্রফি আছে। তবে পর্তুগালের হয়ে জেতার চেয়ে বড় কিছুই নেই। এই যে চোখে জল আসা, কর্তব্য পালন করা.. এসবেই অনেক আনন্দ।’ তবে এই জয় কী শুধুই পর্তুগালের? ন্যাশনস লীগে অনবদ্য পারফর্মেন্স করা রোনালদোও তো জিতেছেন। কীভাবে? গত ফেব্রুয়ারিতে বয়স ৪০-এর কোটায় ঠেকেছে এই মহাতারকার। এই বয়সেও যেভাবে মুড়ি-মুড়কির মতো গোল করছেন, তা তো রোনালদোর গ্রেটনেসেরও একটি জয়! ন্যাশনস লীগে ৯ ম্যাচে ৮ গোল করেছেন এই আল নাসর তারকা। কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল, গোল পেয়েছেন টুর্নামেন্টের ৩টি মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই। ন্যাশনস লীগের ‘লীগ এ’-তে তার চেয়ে বেশি গোল নেই আর কারও। আর চার লীগ মিলিয়ে তালিকায় তার উপরে শুধু এক গোল বেশি করা সুইডেনের ভিক্টর গিয়াকেরেস। ২০১৬তে পর্তুগালের হয়ে প্রথম শিরোপা জয়ের পুরোটা সময় মাঠে থাকতে পারেননি রোনালদো। চোট নিয়ে উঠে গিয়ে জয়ের মুহূর্তেও ছিলেন সাইডলাইনে। ন্যাশনস লীগের এবারের ফাইনালেও আগেভাগে মাঠ ছেড়ে যান তিনি। ৮৭তম মিনিটে মাটিতে বসে পড়ে হাত দিয়ে ইশারা করে জানান, আর খেলা সম্ভব না। এ প্রসঙ্গে পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রোনালদো বলেন, ‘কিছুটা সময় খারাপ লাগছিল। তবে এটি জাতীয় দলের ম্যাচ। খেলার জন্য আমার পা ভাঙলে ভাঙুক। আমাকে ট্রফি জিততে হবে, খেলতে হবে, নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতে হবে। কারণ, এটি আমার দেশের মানুষের জন্য।’