গাজা উপত্যকা থেকে দুই ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার

গাজা উপত্যকায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় আটক দুই ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি সেনা। ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন স্থানীয় সাংবাদিকও রয়েছেন। তারা একটি হাসপাতালের আঙিনায় ছিলেন। যদিও ইসরায়েলি সেনা জানিয়েছে, তারা একজন সন্ত্রাসীকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সেনাবাহিনী এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের একটি বিশেষ অভিযানে জুডিহ ওয়েইনস্টাইন এবং গ্যাড হাগাইয়ের দেহাবশেষ উদ্ধার করে ইসরায়েলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েলের সকল নাগরিকের সঙ্গে আমি এবং আমার স্ত্রী মৃতদের পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই। সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতির জন্য আমাদের হৃদয় ব্যথিত।’

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কিবুটজ নির ওজে ৭০ বছর বয়সী ওয়াইনস্টাইন এবং ৭২ বছর বয়সী হাগাইয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি নির ওজ। হামলায় ওই বসতিটির প্রায় এক-চতুর্থাংশ বাসিন্দা নিহত বা অপহৃত হয়েছিলেন। এদের  দুজনেরই ইসরায়েলি এবং মার্কিন নাগরিকত্ব ছিল। ওয়াইনস্টাইন একজন কানাডিয়ান নাগরিকও  ছিলেন। সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ৭ অক্টোবরের হামলায় তারা নিহত হয়েছে এবং মুজাহিদিন ব্রিগেড তাদের গাজায় নিয়ে গেছে, ছোট সশস্ত্র গোষ্ঠীটি শিরি বিবাস নামের এক নারী এবং তার  দুই ছোট সন্তানকে অপহরণ করে হত্যা করেছে বলেও দাবি করেছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে তারা বৃহস্পতিবার রাতের দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে ওয়াইনস্টাইন এবং হাগাইয়ের দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে। অভিযোগ ৭ অক্টোবর সকালে কিবুটজ  নির ওজে তাদের বাড়ির কাছে এই দম্পতি সকালে যখন হাঁটছিলেন, ঠিক তখনই হামাস যোদ্ধারা  সীমান্ত পেরিয়ে বেশ কয়েকটি সেনা ঘাঁটি এবং কৃষক সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালায়। ভোরের দিকে, ওয়েইনস্টাইন জরুরি পরিষেবাগুলোতে ফোন করে জানাতে সক্ষম হন যে তিনি এবং তার স্বামী উভয়কেই গুলি করা হয়েছে এবং তার পরিবারকে একটি বার্তা পাঠান।

ওয়েইনস্টাইনের জন্ম নিউ ইয়র্কে এবং তিনি গাজা সীমান্তের কাছে অবস্থিত একটি ছোট সম্প্রদায় কিবুটজ নির ওজে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ইংরেজি শেখাতেন। কিবুটজ জানিয়েছে  যে তিনি গাজা থেকে রকেট হামলার ফলে উদ্বেগে ভুগছিলেন এমনকি  শিশু এবং কিশোরদের ধ্যানের কৌশলও শিখিয়েছিলেন। হাগাই একজন অবসরপ্রাপ্ত শেফ এবং জ্যাজ সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। তাদের মেয়ে আইরিস হাগাই লিনিয়াদো একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন -' আমার সুন্দর বাবা-মা অবশেষে  মুক্তি পেলেন । ' এই দম্পতির দুই ছেলে, দুই মেয়ে এবং সাত নাতি-নাতনি রয়েছে ।

সূত্র :এপি  নিউজ