ঢাকা, ৬ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৮ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

ভিড়, যানজট ঠেলে বাড়ি ফিরছে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার
৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
mzamin

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ -ছবি জীবন আহমেদ

 ঈদে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করতে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। সরকারি-বেসরকারি অফিসে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় সড়কে চাপ বেড়েছে। ভিড় ও যানজট ঠেলেই বাড়ি ফিরছে মানুষ। গতকাল বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে ভিড় দেখা গেছে ঘরমুখী মানুষের। 
গতকাল রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে সকালের দিকে অনেকটাই ফাঁকা ছিল বাস কাউন্টারগুলো। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। অফিস সময় পরে বিকালে সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম দেখা যায় টার্মিনালটির বাস কাউন্টারগুলোতে। তবে এদের বেশির ভাগই আগে থেকে টিকিট সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। এমনই একজন গোলাম মোস্তফা। বুধবার বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে পূর্বাশা পরিবহনের বাসে চেপে স্ত্রী ও ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে মেহেরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রতিবারই ঈদের আগে টিকিট নিয়ে ঝামেলা হয়। তাই এবার আগে থেকেই টিকিট কেটে  রেখেছিলাম। তাই টিকিট নিয়ে বেশি একটা চিন্তা করা লাগেনি। আগের দিন রাতেই ব্যাগপত্র সব গুছিয়ে রেখেছিলাম। শেষ দিনে অফিসে তেমন কাজ না থাকায় আগেভাগে বের হয়ে গাবতলীতে চলে এসেছিলাম। তাই তেমন কোনো ঝক্কি পোহাতে হয়নি। খুব সাচ্ছন্দ্যেই যেতে পারছি। 

আশিকুর রহমান নামে শ্যামলী পরিবহনের আরেক যাত্রী বলেন, সাধারণত ঈদের সময় বেশির ভাগ মানুষই আগে থেকে টিকিট কেটে রাখেন। তাই কাউন্টারে তেমন কোনো ফাংশনাল কাজ থাকে না। শুধু দেখেশুনে সময়মতো বাসে ওঠে যাওয়া। তবে একটা জিনিস প্রতিবারই থাকে- আপনি যেখানেই নামেন না কেন বাস যে পর্যন্ত যাবে সেই শেষ গন্তব্যের টিকিটের টাকা আপনাকে দেয়া লাগে। অর্থাৎ আপনি যদি যশোর নামেন তাহলে আপনাকে গাড়ি সাতক্ষীরা বা খুলনা যেখানেই যাবে সেই পুরো রাস্তার ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। তবে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার কিশোর বলেন, এখন মূলত গাবতলী থেকে যাত্রীবোঝাই করে নিয়ে আমাদের বাসগুলো গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে। আর আসার সময় বাসগুলো পুরো খালি আসছে। কারণ এই ছুটির মধ্যে কেউ ঢাকায় আসবে না। আবার ঈদের পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাসগুলো যাত্রীবোঝাই করে ঢাকায় আসবে এবং ঢাকা থেকে বাসগুলো খালি ফিরে যাবে। তাই আমাদের খরচ পোষানোর জন্য আমাদেরকে গন্তব্যের শেষ স্টপিজের টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে। যাত্রী ওই একই টাকা দিয়ে সব শেষ স্টপেজে নামতে পারেন বা তার সুবিধামতো জেলাতেও নামতেও পারেন। এদিকে অনেকেই আবার আগাম টিকিট না কেটে গাবতলীতে এসে কাউন্টারে কাউন্টারে টিকিটের জন্য ধরনা দিচ্ছেন। তবে বেশির ভাগ কাউন্টারই টিকিটশূন্য। কয়েকটি কাউন্টারে হাতেগোনা কয়েকটি গাড়ির পেছনের সারিতে ও ইঞ্জিন কাভারে টিকিট থাকলেও তা চড়াদামে মুহূর্তের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অনেক গাড়িতে যাত্রী চলাচলের মাঝের জায়গায় মোড়া বা টুলের ব্যবস্থা করেও সিট উল্লেখ করে একই দামে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আকাশ সিকদার বলেন, আসলে এই সময়ে বেশির ভাগ যাত্রীই আগে থেকে টিকিট কেটে ফেলেন। এখন তো সব গাড়িরই অনলাইনে টিকিট পাওয়া যায়। তাই আমাদের হাতে তেমন কিছু থাকে না। শেষ সময়ে যাত্রী চাপ সামলাতে বাধ্য হয়ে আমাদেরকে ইঞ্জিন কাভারেও যাত্রী পরিবহন করতে হয়। এদিকে গাবতলী লিংক (প্রা.) লি. অর্থাৎ ৮ নম্বর, ৭ নম্বর বাস, বসুমতিসহ বিভিন্ন পরিবহনের নামে রাজধানীর সিটি সার্ভিস চলা বাসগুলোতেও গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ,  পাটুরিয়াসহ বিভিন্ন দূরপাল্লায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। ঢাকা টু পাটুরিয়া সেলফি পরিবহনের বাসেও রয়েছে যাত্রীদের চাপ। দূরপাল্লার গাড়ির টিকিট না পেয়ে এসব লক্কর-ঝক্কর বাসে চড়েও রওনা হচ্ছে মানুষ। 

এদিকে কমলাপুর রেলস্টেশনেও দেখা গেছে ঘরমুখী মানুষের চাপ। সিটে জায়গা না পেয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করছেন অনেকে। গতকাল সরজমিন কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সিডিউল বিপর্যয় ছাড়াই বেশির ভাগ ট্রেনযাত্রী নিয়ে গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে। সকালের দিকে যাত্রীসংখ্যা কম থাকলেও দুপুরের পর প্ল্যাটফরমগুলোতে যাত্রীদের চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকে। আর এই যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে স্টেশনের প্ল্যাটফরমে প্রবেশের পূর্বে ভ্রাম্যমাণ টিকিট চেকার, বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্য ও রেলের সাদা পোশাকধারীদের সমন্বয়ে ৩ স্তরে টিকিট চেকিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তবে এসবকে পাশ কাটিয়ে গতকাল দুপুরের পর যে যেখান থেকে সুযোগ পেয়েছেন সেখান দিয়েই ট্রেনে চেপে বসেছে। ট্রেনস্টেশন ছাড়ার সময় অনেকেই ট্রেনের ছাদে গিয়ে উঠেছে। এসময় অনেক নারী যাত্রীদেরও ট্রেনের ছাদে উঠতে দেখা যায়। কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল ১১টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ২১টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। তিস্তা ঈদ স্পেশাল শুধুমাত্র ৩০ মিনিট  দেরিতে ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া তেমন কোনো ট্রেন বিলম্বে ছাড়েনি।


 

পাঠকের মতামত

era manus na onno kichu

younus ahmed
৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৩:২০ অপরাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status