শেষের পাতা
নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত পাচ্ছে জামায়াত: ইসি
স্টাফ রিপোর্টার
৫ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার
আদালতের আদেশের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশন সভায় নীতিগত এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত দিতে নির্বাচন কমিশন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, গত এক তারিখে মাননীয় আপিল বিভাগ ২০১৩ সালের
হাইকোর্টের একটি রায়ের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন যে বাতিল করা হয়েছিল সেটিকে পূর্বাপর অবস্থায় ফেরত নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আদেশের কপি পাওয়ার পর আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করেছি। অতিসত্বর জামায়াতে ইসলামী তাদের নিবন্ধন ফেরত পাবে, সেই ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি।
জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফেরত দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা, সেটিও ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ইসির কাছে আবেদন করেছিল। এটি নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছি। যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে, তার মধ্যে আছে ‘স্ট্যাটাসকো এনটে’ বলতে কী বোঝায়, অর্থাৎ ২০১৩ সালে জামায়াতের দলীয় নিবন্ধনের সঙ্গে প্রতীক ছিল, সেটি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। এ ছাড়া ২০০৮ সালের ৫ই নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন প্রজ্ঞাপনে নিবন্ধনের সঙ্গে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা দেয়া হয়েছিল একই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এ ছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বিবেচনায় নিয়েছি। এতে বলা আছে যে, রাজনৈতিক দলকে যদি প্রতীক দেয়া হয় তাহলে সেটি তাদের জন্য সংরক্ষণে রাখতে হবে। আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ২০১৬ সালে আদালতের একটি ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্তের আলোকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিল করা হয়। এটি ছিল প্রশাসনিক পত্র, যেটা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তৎকালীন ইসি এটি পেয়েছিল। সেটির আলোকে এই ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু আমাদের সামনে জামায়াতে ইসলামীর যে আবেদন ছিল তাতে একটি রিট পিটিশন এবং তার আদেশও আমাদের সামনে এসেছে।
এটাতে দাঁড়িপাল্লা যাতে কোনো প্রতীক হতে না পারে, যেহেতু এটা আদালতের ন্যায়বিচারের প্রতীক, এই মর্মে একটি আপিল করা হয়েছিল। সেই আপিল সেই সময় আদালত খারিজ করে দেন এবং এখানে তারা বলেছেন, এটি নির্বাচনে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করার কারণে কোনোভাবেই আদালতের মান ক্ষুণ্ন করবে না এবং আমাদের জানামতে এই রায় এখনো বহাল রয়েছে। এই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, জামায়াতে ইসলামীকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেয়া হবে। অর্থাৎ তারা দলীয় নিবন্ধন এবং প্রতীক দুটিই ফেরত পাবেন। তবে একটা দলীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রক্রিয়া আছে। এজন্য একটু সময় লাগবে। পাশাপাশি আরেকটি কারণে সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আরও বেশকিছু প্রতীক সন্নিবেশ করবো। এটা নিয়েও আমরা আজ আলোচনা করেছি। বর্তমানে আমাদের ৬৯টি প্রতীক আছে, সেটিকে আমরা ১০০তে উন্নীত করবো। এই পুরো কাজটি একসঙ্গে সম্পন্ন হবে।