অনলাইন
সহযোগীদের খবর
তত্ত্বাবধায়কের অধীনে স্থানীয় নির্বাচনের বিপক্ষে বিএনপি, পক্ষে জামায়াত ও এনসিপি
অনলাইন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ৪ জুন ২০২৫, বুধবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:১০ অপরাহ্ন

ইত্তেফাক
‘তত্ত্বাবধায়কের অধীনে স্থানীয় নির্বাচনের বিপক্ষে বিএনপি, পক্ষে জামায়াত ও এনসিপি’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কেবল সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাবে একমত নয় দলটি। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলও বিএনপির সঙ্গে একমত। তবে, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল সংসদ ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন দুটোই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার পক্ষে।
রাজধানীর বেইলী রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আয়োজিত এই আলোচনায় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ ৩০টি দলের নেতারা অংশ নেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আলোচনায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য মো. আইয়ুব মিয়া, সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক ও ড. ইফতেখারুজ্জামান অংশ নেন। গতকালের বৈঠকে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, নিম্নকক্ষে নারী আসন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধির একটি অংশ নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাটি সরাসরি সম্প্রচার করে ‘বিটিভি ওয়ার্ল্ড’।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনায় সরকারের স্থায়িত্বের জন্য আস্থা ভোটের পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি ও এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল। তবে কোনো কোনো দল বিষয়টি নিয়ে আরো আলোচনার কথা বলেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস করার প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তবে, এতে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপি বলেছে, মেয়াদ তিন মাসের বেশি করার দরকার নেই। এছাড়া, সংসদের সব স্থায়ী কমিটির প্রধান পদে বিরোধীদল থেকে নেওয়ার প্রস্তাবেও একমত হয়নি দলটি। মেয়াদ যাই হোক ‘নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ বা ‘নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ নামকরণ করার প্রস্তাব দিয়েছে এনসিপি।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি ও সংস্কৃতি বিশ্লেষণ করে এবং উপমহাদেশের চর্চা বিবেচনা করে তার দলের পক্ষ থেকে উপযুক্ত মত হচ্ছে, ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আস্থা ভোট না থাকলে সরকার পরিচালনায় স্থায়িত্ব থাকবে না। প্রতিনিয়ত সরকার পরিবর্তিত হতে থাকবে, যা শোভনীয় হবে না।
আস্থা ভোট, অর্থবিল এবং সংবিধান সংশোধন ছাড়া সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে মতামত প্রদান করবেন, এতে বিএনপি একমত। কিন্তু, জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে এই আস্থা ভোটের বিষয়টি ৭০ অনুচ্ছেদে যুক্ত করতে বিএনপি প্রস্তাব করেছে।
প্রথম আলো
‘৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন প্রশ্নে কাছাকাছি অবস্থানে দলগুলো’-এটি দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হবে, সে প্রশ্নে অনেকটাই কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো। কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার বিষয়েও অনেকটা ঐকমত্য হয়েছে। তবে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০–তে উন্নীত করা এবং নারী আসনে নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য দূর হয়নি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় গতকাল মঙ্গলবার এ তিন বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে নারী আসন–সংক্রান্ত আলোচনা শেষ হয়নি। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির পর ১৬ বা ১৭ জুন আবার আলোচনা হবে।
গতকাল আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কার্যক্রমে বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব মতামত দিয়েছে, তার ভিত্তিতে পরিবর্তিত প্রস্তাব নিয়েই রচিত হবে জাতীয় সনদ। তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
গত সোমবার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথম পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি, সেগুলো নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আলোচনা শুরু হয়। এক ঘণ্টার মতো মধ্যাহ্নবিরতি দিয়ে আলোচনা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টি দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। গতকালের আলোচনাটি বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে।
এই বিধানে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তাদের প্রস্তাব ছিল, অর্থ বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
যুগান্তর
দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘কালোটাকা সাদার বিধান বাতিলের ভাবনা’। খবরে বলা হয়, প্রস্তাবিত (২০২৫-২৬) বাজেটে কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে সেই বিধানটি বাতিল করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। মঙ্গলবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। ‘আমরা বলছি না-কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে ভালো কিছু করে ফেলছি’-এমন মন্তব্যও করেন অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, অনেকের বক্তব্য ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এটি ঠিক নয়। কালোটাকা পেলে বাজেট সহায়তার জন্য আইএমএফ’র কাছে যেতে হতো না। তিনি বলেন, টাকা পাচারকারীরা অনেক বুদ্ধিমান। তারা বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে এসব টাকা পাচার করেছে। ইতোমধ্যে ১২টি মামলায় শনাক্ত হয়েছে, আরও একটু সময় লাগবে এসব অর্থ ফেরত আনতে। প্রস্তাবিত বাজেটে কথার ফুলঝুরি নেই, এটি জনবান্ধব-ব্যবসাবান্ধব বাজেট বলে উল্লেখ করেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেশ খাদের কিনারায় চলে গেছে, আর্থিক অবস্থা খুবই ভঙ্গুর, এমন ক্রান্তিকালে আমরা দেশের দায়িত্ব নিয়েছি, ক্ষমতা গ্রহণ করিনি। সংস্কার কার্যক্রম চলবে, এটি চলমান।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসা এক বাজেটে সম্ভব হবে না। এর জন্য কয়েকটি বাজেটের প্রয়োজন। আমরা শুরুটা করে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান অর্থ উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যেহেতু কালোটাকা সাদা প্রসঙ্গে কথা উঠছে, আমরা আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে চিন্তা করতে পারি। তিনি বলেন, গত আগস্টে এ সংক্রান্ত একটি বিধান বাতিল করা হয়েছে। একটি বিধানের মেয়াদ শেষ হবে ৩০ জুন। এর মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এর বাইরে ভিন্ন একটি বিধান আছে সেটাও দুভাগ করা হয়েছে। এরপরও যেহেতু এ বিষয়ে কথা উঠছে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে চিন্তা করতে পারি।
কালের কণ্ঠ
‘উপদেষ্টাদের বাজেট সাফাই’-এটা দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বাজেটে ব্যবসা ও জনসাধারণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেই সঞ্চয় বাড়িয়ে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুবিধার ইঙ্গিত। তবু অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদসহ অন্য উপদেষ্টারা প্রস্তাবিত বাজেটের পক্ষে সাফাই গাইলেন। বললেন, বাজেট জনবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব।
তবে তিনি কিঞ্চিৎ স্বীকারও করলেন যে বাজেটকে কখনোই পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব করা সম্ভব নয়। এক দিকে কর কমাতে গেলে আরেক দিকে বাড়াতে হবে। তবে হুট করে রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব নয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা বাজেটে ঘোষণা দেওয়া কথার ফুলঝুরির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এত চ্যালেঞ্জের মধ্যে আমাদের প্রতি একটু সমবেদনা নিয়ে কাজ করেন, একবারেই একপেশে কিছুই হয়নি, গুণগান গাইব সেটাও আমরা চাই না। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। মোট কথা আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বাজেট দিয়েছি, যা বিশ্বের অন্য দেশের কাছে যেন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘সীমিত সম্পদ ও অনেক চাহিদার মধ্যে এবারের বাজেট এনেছি। বিদেশে থেকে সম্পদ আনা, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, পুঁজিবাদের অবস্থা, ব্যাংকের অবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা অবস্থা সব মিলিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা। এর ভেতরেই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।’ তাঁর দাবি, কথার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে বাজেট করা হয়নি। অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। যেমন—মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাত, জ্বালানি খাত, রাজস্ব আদায়—এসব কিছুর মধ্যেই বাজেট দিতে হয়েছে।
নয়া দিগন্ত
দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম ‘পাচারের টাকা ফেরত আনা সহজ নয়’। খবরে বলা হয়, যারা বিদেশে অর্থ পাচার করে তারা অত্যন্ত চালাক। এমন নয় যে, তারা হুট করে সব টাকা এক সাথে পাচার করেন। সুতরাং পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। নাইজেরিয়ার পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে ২০ বছর লেগেছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি দুই এক বছরের মধ্যে পাচার হওয়া কিছু টাকা ফিরিয়ে আনতে। এই টাকা ফিরিয়ে আনলে আমাদের আর বিদেশী সংস্থার কাছ থেকে বাজেটে সহায়তার প্রয়োজন হবে না।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগ করা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা, এটি বাদ দিব কি না তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব হয়েছে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা যারা বাজেটকে গতানুগতিক বলছেন তাদের উদ্দেশে বলেন, হুট করেই একটা বিপ্লবী বাজেট দেয়া সম্ভব নয়। তবে আমরা বাজেটে কথার ফুলঝুরি দিয়ে বাজেট দেইনি।
বণিক বার্তা
‘পাঁচ বছরে বিদ্যুতে ভর্তুকি বেড়েছে ৫৯৩%, জ্বালানিতে ৩১১ শতাংশ’-এটা দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সক্ষমতা বাড়াতে দেশী-বিদেশী বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ দুই খাতে ব্যাপকভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও ভর্তুকি কমানো যায়নি। বিগত পাঁচ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদ্যুতে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা এবং ৬৮ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে গ্যাস ও জ্বালানির অন্যান্য খাতে। ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর সময়কালে এ পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। অর্থবছর ধরে ভর্তুকির পরিমাণ বিবেচনায় নিলে দেখা যায় এ পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিদ্যুতে ভর্তুকি বেড়েছে ৫৯৩ শতাংশ এবং জ্বালানি খাতে ৩১০ শতাংশ।
জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ভুল মহাপরিকল্পনায় একপেশেভাবে এ দুই খাতের অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। এ সময় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে। অন্যদিকে অবহেলিত ছিল জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা। যে কারণে ব্যয়বহুল জ্বালানি আমদানি করে তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দিতে হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যুতে বিপিডিবিকে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে ৮ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ভর্তুকি ৩ হাজার ১৮ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দেয়া হয় ২৩ হাজার কোটি টাকা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভর্তুকি দেয়া হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২৪-২৫ সংশোধিত অর্থবছরে বিপিডিবির ভর্তুকি ছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। বিগত পাঁচ অর্থবছরের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিদ্যুতের ভর্তুকি পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে ৫৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা বেড়েছে। এ ভর্তুকি বৃদ্ধি বিবেচনা করলে এ সময়কালে বিদ্যুতে ভর্তুকি ৫৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজকের পত্রিকা
দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘অর্থ বিল, আস্থা ও সংবিধান প্রশ্নে দলের বিপক্ষে ভোটে জোরালো ভিন্নমত’। খবরে বলা হয়, অর্থ বিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া সব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের (এমপি) দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো। সরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি হিসাব, প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিতসহ গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে নেওয়ার পক্ষে ঐকমত্য হলেও প্রস্তাবিত ১০০ নারী আসনের নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য হয়নি দলগুলোর মধ্যে।
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে গতকাল মঙ্গলবার এমন মত দিয়েছেন অংশগ্রহণকারী দলগুলোর নেতারা। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের প্রথম দিনের সংলাপ শুরু হয়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, আইনসভায় নারী আসন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন—এই চারটি সুপারিশ নিয়ে গতকাল আলোচনার কথা ছিল। প্রথম তিনটি নিয়ে আলোচনা হলেও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রায় ঐকমত্য হয়েছে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ এবং আইনসভায় নারী আসনের বিষয়ে ঈদের পরে বৈঠকের শুরুতেই আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ের আলোচনার ভিত্তিতে গতকাল আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব উত্থাপন করে তা হলো—অর্থ বিল, আস্থা ভোট ও সংবিধান সংশোধন বিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। এই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এই তিনটি বিষয়ের সঙ্গে কোনো কোনো দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, এমন সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে না—এমন শর্ত যুক্ত করার পরামর্শ দেয়। ৭০ অনুচ্ছেদে বা সংসদে সংসদ সদস্যদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা পুরোপুরি কাটেনি। দলীয় সিদ্ধান্তে অর্থ বিল ও আস্থা ভোটের বিধানে প্রায় সব দলই একমত বলে সংলাপ সূত্র জানায়। বিএনপি, জামায়াতসহ কিছু দল এ দুটির সঙ্গে সংবিধান সংশোধন বিলকে যুক্ত করার প্রস্তাব করে। বিএনপি বাড়তি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে। তবে দলটির পক্ষে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি সনদে না থাকলেও তাঁরা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবেন। নির্বাচিত হলে বিধানটি যুক্ত করার প্রস্তাব করবেন তাঁরা।
দেশ রূপান্তর
‘ড. ইউনূসের অধীনেই ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় বিএনপি’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে দ্রুত ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান আবারও জানিয়েছে বিএনপি। দলটির দাবি, নির্বাচন প্রশ্নে একটি পরিষ্কার ও গ্রহণযোগ্য পথনকশা না থাকায় দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে, যা দ্রুত নিরসন প্রয়োজন। এ থেকে উত্তরণে আগামী সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার কোনো কারণ দেখছে না দলটি। বিএনপি এ সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত, তবে নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত সরকারকে রাজনৈতিক চাপের মধ্যে রাখতে চায় তারা।
বিএনপির নেতাদের অভিমত, রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তুলতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা হলেও মূল গুরুত্ব পেয়েছে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং তার রোডম্যাপ। বিএনপি ছাড়াও অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ দলই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছে।
গত সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। রাত পৌনে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলা বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম ‘সুখবর নেই চ্যালেঞ্জের পাহাড়’। খবরে বলা হয়, ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেট ব্যবসাবাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে আশাব্যঞ্জক নয়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগের বাধা কাটানোর জন্য বাজেটে কোনো বার্তা নেই। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এবারের বাজেট বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। বাজেট নিয়ে কোথাও কোনো সুখবর না থাকলেও আছে অনেক চ্যালেঞ্জ। খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বাজেট বাস্তবায়নে মধ্যমেয়াদে অন্তত সাতটি চ্যালেঞ্জ দেখছে তারা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে এ চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে কঠোর মুদ্রানীতির পাশাপাশি সহায়ক রাজস্ব নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
সরকারের দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ রপ্তানি খাত। নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি রপ্তানির ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেও এটি রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে নতুন অর্থবছরে রপ্তানি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন চ্যালেঞ্জিং হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।