প্রবাস
প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসে শোক দিবস পালন
আব্দুল মোমিত (রোমেল), ফ্রান্স থেকে
(১ বছর আগে) ১৬ আগস্ট ২০২২, মঙ্গলবার, ১২:০১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৩:১৭ অপরাহ্ন
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য, শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাস।
দূতাবাসে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহার সভাপতিত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ, সাংবাদিক, সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং তরুণ প্রজন্মের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর দূতাবাসের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ১৫ই আগস্টে নিহত সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটির তাৎপর্য ও গুরুত্ব নিয়ে উপস্থিত অতিথিবৃন্দের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তাগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রাম এবং বাঙালি জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অবদানের কথা তুলে ধরেন।
আলোচকবৃন্দ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের ১৮ জন শাহাদাতবরণকারী সদস্যের রূহের মাগফেরাত কামনা এবং গভীর শোক প্রকাশ করেন। প্রবাসী বক্তাগণ বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও জনমানুষের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামের চেতনা ধারণ করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ।
রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম. তালহা তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী, দৃঢ় ও আপোষহীন নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ এবং বাঙালি জাতি গঠনে তার অবদানের কথা তুলে ধরেন। একটি গর্বিত জাতি হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে দুর্লভ সম্মান বাঙালি পেয়েছে, তার জন্য সমগ্র জাতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ, চিরঋণী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভূতপূর্ব সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংকল্প সমগ্র দেশবাসিকে উজ্জীবিত ও দেশের উন্নয়নে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি স্বল্পোন্নত দেশ হতে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে রুপকল্প -২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, স্বাধীনতার পূর্ব হতেই বাঙালি ও বাংলাভাষার বিরুদ্ধে একটি বিশেষ কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে এসেছে। একাত্তরের গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী নিধন, স্বাধীনতা-উত্তরকালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের পুনর্গঠনে বিঘ্ন সৃষ্টি এবং তাকে সপরিবারে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট হত্যা করেই সে ঘাতকচক্র থেমে থাকেনি।
১৯৭৫ সালের নভেম্বরে জেলহত্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর বিভিন্ন সময়ে তার প্রাণনাশের সক্রিয় চেষ্টা চালিয়ে গেছে সেই ঘাতকচক্র।
তিনি প্রবাসে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশিকে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সোচ্চার ও সতর্ক থাকা এবং তা রুখে দিতে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত দুটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।