প্রথম পাতা
কোন নির্বাচন আগে হবে এই সিদ্ধান্ত সরকারের: ইসি
স্টাফ রিপোর্টার
২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিকে রাজনৈতিক বিষয় উল্লেখ করে এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ইসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে দাবি করে বলেছেন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের মধ্যে কোনটি আগে আর কোনটি পরে হবে- তা নির্ভর করছে সরকারের উপরই। গতকাল এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পঞ্চম সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নির্বাচন ভবনের গেইটের সামনে ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবিতে বিক্ষোভ করছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে এনসিপি’র আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিতে চাই না। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কোনটা আগে হবে, কোনটা পরে হবে-এটা ইসি’র হাতে নেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে কোন নির্বাচন আগে হবে বা পরে হবে। ইসি’র দায়িত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
এদিকে এনসিপি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি এই কমিশনার। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আপিল না করে ইসি’র গেজেট প্রকাশ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৫০, স্থানীয় সরকার ও সিটি করপোরেশন আইন, ২০০৯-এর ধারা ৫৪, স্থানীয় সরকার ও পৌরসভা বিধিমালা, ২০১০-এর ধারা ৫৪, উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০১৩-এর ধারা ৫৬, স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর ধারা ৫৪-এই সবগুলোতে বলা আছে কাকে পক্ষভুক্ত করা যাবে। সেখানে নির্বাচন কমিশনকে কোনো পক্ষভুক্ত করার আইন নেই। এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আইনে যেহেতু নেই সেহেতু স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি আমরা ফাইল ঘেঁটে দেখেছি, নির্বাচন কমিশন পক্ষভুক্ত হয়ে আবেদন করেছে কিনা, আপিল করেছে কিনা। আমরা এমন কোনো নথি পাইনি। সুতরাং পক্ষভুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আইন আমাদের সুযোগ দেয়নি।
খসড়া আচরণবিধি ও ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালায় ইসি’র অনুমোদন: ওদিকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধি এবং ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, বিধিমালা ও নীতিমালা বিশদভাবে আলোচনা হয়েছে। খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কমিটি এ নিয়ে কাজ করে কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে। তবে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও অপরাপর সংশোধনীর বিষয় আছে। ততদিন পর্যন্ত হয়তো আমাদের অপেক্ষা করা লাগতে পারে এই জিনিসগুলো চূড়ান্ত করার জন্য। তিনি জানান, ইসি’র তত্ত্বাবধানে নির্বাচনী প্রচার, সোশ্যাল মিডিয়া, দল ও প্রার্থীর প্রত্যয়নসহ নানা ধরনের নতুন বিষয় যুক্ত রয়েছে প্রস্তাবিত আচরণবিধিতে। বিদ্যমান ভোটকেন্দ্র নীতিমালায় ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসি ও এসপিদের সমন্বয়ে একটি জেলা কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন। এ কমিটির মাধ্যমেই ভোটকেন্দ্র স্থান নির্ধারণ ও পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হতো। নতুন নীতিমালায় সেই কাঠামো বাতিল করা হচ্ছে। সভার আলোচনা নিয়ে তিনি বলেন, উল্লেখযোগ্য সংশোধনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় যে কমিটি ছিল আমরা তা বিলুপ্ত করেছি। এটা কমিশনের অধীনে আনা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ইভিএম সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আমরা বাতিল করেছি। যেহেতু ইভিএম নেই।