ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

সরজমিন: মৌলভীবাজার

এভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে

ইমাদ উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে:
১৪ আগস্ট ২০২২, রবিবার
mzamin

আয় বাড়েনি। অথচ প্রতিনিয়তই  হু হু করে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। কিছুতে কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। সংসারে বাড়ছে অশান্তি। এমন পরিস্থিতিতে দিশাহারা মৌলবীবাজার জেলার মধ্যবিত্ত-নিন্মবিত্ত মানুষ। আয় ব্যয়ের হিসাব মেলাতে দুর্ভোগ আর দুশ্চিন্তা এখন গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই।  চলতি বছরে এ জেলার ৭টি উপজেলার ৫টি উপজেলার অধিকাংশ মানুষই বন্যা ও দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় পোহান চরম দুর্ভোগ। ওই সময় থেকে জীবন বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র থাকা মানুষগুলো ক’দিন হলো ফিরেছেন নিজেদের বসতভিটায়। বানের তোড়ে চরম ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনর্বাসনের জন্য যেমন নেই আর্থিক সঙ্গতি। তেমনি দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে দু’বেলা দুমুঠো ভাতেরও নেই নিশ্চয়তা।

বিজ্ঞাপন
মাথাগোঁজার ঠাঁই আর ক্ষুধা নিবারণের উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় এখন তাদের রাতদিন একাকার।  নিজেদের দুর্দশার কথা জানাচ্ছিলেন দিনমজুর রুশন মিয়া, কৃষক জুলফত মিয়া, নির্মাণ শ্রমিক (ঠিকাদার) সমছু মিয়া, হাকালুকি হাওর পাড়ের মৎস্যজীবী ভীরাই মিয়া, বাতির মিয়া, সুহেল মিয়া, শহরের রিকশাচালক ফাতু আহমদ, মো. আনফর মিয়া, গাড়িচালক সফিক আলী ও মবশ্বির মিয়া, সবজি বিক্রেতা ছানার মিয়াসহ অনেকেই।

 তাদের নাম ঠিকানা আর পেশা ভিন্ন হলেও দুর্ভোগ একই। গাড়িচালক সফিক আলী ও মবশ্বির মিয়া জানালেন, তেলের দাম বাড়ায় এখন বাধ্য হয়ে ভাড়া বাড়াতে হয়েছে। তাই গাড়ি নিয়ে বের হলেই যাত্রীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা। এসব আর সহ্য হয় না। যাত্রীরাও বা কি করবে আর আমাদেরও কম রাখার সাধ্যটা কোথায়। এতো ঝুট-ঝামেলার পর দিন শেষে যা আয় রোজগার তা দিয়ে ৬-৭ জনের সংসারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। কৃষক জুলফত মিয়া জানান, ছোট বড় মিলিয়ে তার ৭ জনের পরিবার। আয় শুধু ধান চাষাবাদ (বর্গাচাষি)। আর একটু আধটুকু মৌসুমী সবজি চাষ। এই আয়ে কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে বছরজুড়ে চলে তার সংসার। জ্বালানি তেল ও কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় আগামী মৌসুমের চাষাবাদ কীভাবে করবেন আর কীভাবে জীবন-জীবিকা চালাবেন এমন দুশ্চিন্তায় এখন রাতদিন একাকার। ঠিকাদার সমছু মিয়া জানান, যেভাবে ইট, রড, সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে চলেছে তাতে এখনই তো হিমশিম খাচ্ছি। আগামীতে এ পেশায় থেকে জীবিকা চালানো যাবে কিনা এমন দুশ্চিন্তায় এ পেশার সবাই। মৎস্যজীবী বাতির মিয়া জানান, তার পরিবারে সদস্য ৬ জন। তিনি একাই রোজগেরে। রাতদিন পরিশ্রম শেষে যে আয় হয় তা দিয়ে দু’বেলা ডাল-ভাতেরও যোগান দিতে পারছেন না। 

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বাজারে আগুন। এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের মতো মানুষজন না খেয়ে মরবে। রিকশাচালক  ফাতু আহমদ ও মো. আনফর মিয়া জানান, তারা শহরের একটি কলোনিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাড়া থাকেন। ৪-৫ জনের সংসার। জানালেন রিকশা চালিয়ে দিন শেষে যে আয় হয় তা দিয়ে আগে কোনো রকম চলা গেলেও এখন আর চলে না। এখন না পেট ভরে। আর না পিঠ ঘুরে। ভাতই নেই। আর কাপড় কেনার সাধ্য কোথায়। তাদের মতো এখন দুর্ভোগ আর কষ্ট নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের। স্থানীয় হাটবাজারগুলোর মুদি দোকানী, মাছ ও সবজি বিক্রেতারা জানালেন সবকিছুরই দাম বাড়তি। তাই আগের চাইতে কমছে ক্রেতা। অনেকটাই কমছে বেচাবিক্রিও।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status