খেলা
পাকিস্তান সফরে যেতে কাউকে জোর করবে না বিসিবি
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার
ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। পাকিস্তান সুপার লীগ (পিএসএল) পিছিয়ে যাওয়ায় নতুন করে বাংলাদেশ সিরিজের সূচি পাঠায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সফর নিয়ে নিশ্চিত ছিল না। গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট দলকে অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তান যাওয়ার। তবে যেহেতু নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সেক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেই সফরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বিসিবি। এক্ষেত্রে কোনো ক্রিকেটারকেই বাধ্য করা হবে না এই সফরে যেতে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গত বুধবার দুই ভাগে ঢাকা ছাড়ে বাংলাদেশ দল। শনিবার ও সোমবার শারজাহতে হবে ম্যাচ দুটি। সূচি অনুযায়ী, এরপর দুবাই থেকেই সরাসরি পাকিস্তানের যাওয়ার কথা লিটন কুমার দাসের দলের। সেখানে ২৫শে মে শুরু হওয়ার কথা ছিল ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে সিরিজের ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চিত তৈরী হয়। এরপর বিসিবি’র কাছে নতুন সূচী পাঠায় পিসিবি। যেখানে সিরিজ শুরু হবে ২৭শে মে। তবে বিসিবি তখনও সফর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি পিসিবিকে। প্রত্যেকটা বিদেশ সফরের জন্যই সরকার থেকে অনুমতি নিতে হয় বিসিবিকে। তবে এবারের অনুমতি পাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল কিছুটা। কারণ ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটের সব টুর্নামেন্টই বন্ধ হয়ে যায়। যদিও নতুন করে সবকিছু শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে পিসিবি। এরপর গতকাল সরকারের তরফ থেকে বিসিবিকে সফর করার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সরকারের সবুজ সংকেত পেলেও ক্রিকেটাররাই সফরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। যেহেতু তারাই সেখানে যাবেন তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে চায় বিসিবি। এ প্রসঙ্গে বিসিবি’র পরিচালক ইফতেখার আহমেদ মিঠু দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘সরকার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। তবে এতেই সবকিছু চূড়ান্ত হচ্ছে না, এটা হলো প্রথম ধাপ। এরপর আমরা এখন ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলাপ করব। ওদেরকে তো আমরা জোর করতে পারি না। এটা নিরাপত্তার ব্যাপার। সরকারের দিক থেকে কনসার্ন নেই, তারা অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তান যাওয়ার। কিন্তু ক্রিকেটারদের নিজস্ব ভাবনা থাকতেই পারে। তারা কী ভাবছে সেটা আমাদের জানা দরকার। যেহেতু ওরাই যাবে পাকিস্তান, নিরাপত্তা নিয়ে ওদের কোনো সংশয় আছে কিনা, কোনো প্রশ্ন আছে কিনা এগুলো জানতে হবে। আমরা এটা নিয়ে খোলাখুলি ওদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। তবে এই সফর নিয়ে আমরা ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দেব সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’ এর আগে ২০২০ সালে পাকিস্তান সফরের আগেও এমন অবস্থান ছিল বিসিবি’র। তবে সেবার মুশফিকুর রহীম যেতে না চাওয়ায় বিসিবি’র তখনকার সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের রোষানলে পড়েন। এমনকি তাকে নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মন্তব্য করেন পাপন। যদিও শেষ পর্যন্ত মুশফিককে পাকিস্তান নিতে পারেননি তারা। এবারও যদি কেউ যেতে না চান তাহলে কী হবে! বিসিবি’র পরিচালক জানান, এবার কাউকে এরকম পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে না। এবার বাস্তবেই তারা ক্রিকেটারদের সফরে যাওয়া না যাওয়ার স্বাধীনতা দিবেন। তিনি বলেন, ‘সবাইকে এক এক করে জিজ্ঞাসা করতে হবে। কেউ যেতে না চাইলে এটা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এখানে তো আমরা কাউকে জোর করে পাঠাতে পারবো না। এটা তো খুবই (নিরাপত্তা) স্পর্শকাতর বিষয়। এ বিষয়ে ক্রিকেটারদের যার যা ইচ্ছা, সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা কোনো কিছু চাপিয়ে দেব না বা বাধ্য করব না। যারা মানসিকভাবে স্থির থাকবে যাবে যারা অস্বস্তি বোধ করবে প্রয়োজনে যাবে না। কিন্তু কাউকে চাপ দেওয়া হবে না যাওয়ার জন্য।’ নতুন সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ২৭শে মে। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচ হবে ২৯শে মে। সিরিজের শেষ তিন ম্যাচের তারিখ যথাক্রমে ১, ৩ ও ৫ই জুন। সিরিজের তারিখ পরিবর্তনের মতো ভেন্যুতেও পরিবর্তন এনেছে পিসিবি। আগের সূচি অনুযায়ী সিরিজের প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ফয়সালাবাদ ও শেষ তিন ম্যাচে ভেন্যু ছিল লাহোর। নতুন সূচিতে প্রথম তিন ম্যাচ রাখা ফয়সালাবাদে রাখা হয়েছে এবং পরের দুই টি-টোয়েন্টির ভেন্যু লাহোর। আগামী ১৯শে মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে সিরিজ শেষ করে ২৩শে মে পাকিস্তান যেতে পারে টাইগাররা।