শেষের পাতা
চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত
স্টাফ রিপোর্টার
৭ মে ২০২৫, বুধবার
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত এই আদেশ দেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আরশাদুর রউফ। অপরদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান। এ ছাড়াও চট্টগ্রামে পুলিশের কাজে বাধা-ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা আরও ৪টি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। গত বুধবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেন। জামিন স্থগিতের আবেদন শুনানির জন্য নতুন দিন ঠিক করা হয়। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছিলেন, চেম্বার বিচারপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি আসামির আইনজীবীর বক্তব্য শুনবেন। তারপর আদেশ দেবেন। একইদিন বিকালে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে জামিন স্থগিত চেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে চট্টগ্রামে আরও ৪টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। আসামির নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চিন্ময়কে এদিন জেলখানা থেকে ভার্চ্যুয়ালি শুনানিতে যুক্ত করা হয়। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ এ আদেশ দেন।
শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পিপি মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের ২৬শে নভেম্বরের ঘটনায় পুলিশের করা ৩টি মামলায় এবং নিহত আইনজীবী আলিফের ভাইয়ের করা একটি মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
গত বছরের ২৫শে অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েকদিন পর গত ৩১শে অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ২২শে নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫শে নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়। গত ২রা জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময় দাস।