বাংলারজমিন
খুলনায় কিশোরী ধর্ষণের মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১২ আগস্ট ২০২২, শুক্রবার ধর্ষণের দায়ে খুলনার একটি আদালত মাসুদ গাজী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারদাণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম করাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মাসুদ খানজাহান আলী থানার মাত্তমডাঙ্গা পূর্বপাড়া এলাকার মরিয়ম বেগমের ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান গাজী ওরফে দফাদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গত বুধবার (১০ই আগস্ট) খুলনা নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আ. ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের বাবা রাজমিস্ত্রির হেলপার। তারা খানজাহান আলী থানাধীন মাত্তমডাঙ্গা পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে কাজ করেন। কাজের সুবাদে তাকে প্রায়ই বাইরে থাকতে হয়। তাছাড়া এ ঘটনা ঘটার ১ বছর আগে তার স্ত্রী মারা যান। সেই সুবাদে তার ১৬ বছর বয়সী একটি কন্যা ও ৮ বছর বয়সী ছেলেকে বাড়িতে একা থাকতে হয়।
এ সুযোগে তার প্রতিবেশী মাসুদ বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতে শুরু করে। ২০১৫ সালের ১৫ই অক্টোবর আসামি কিশোরীকে বাসায় ডেকে নেয়। বাসায় কেউ না থাকায় ওই কিশোরীকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার গলায় ধারালো দা ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয় মাসুদ। একপর্যায়ে আসামি ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়া হয়। এরপর কয়েকবার জোরপূর্বক মেলামেশা করে মাসুদ।
কিশোরী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বাবা বাড়ি আসলে ঘটনাটি জানানো হয়। তিনি মাসুদের স্ত্রীকে বিষয়টি জানালে উল্টা তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘বিষয়টি কাউকে জানালে তোদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। জেনে রাখ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা জহিরুল ইসলাম লাল্টু আমার দেবর। তাদেরকে জানালে তোদের যেকোনো সময় খুন করে ফেলবে।’ এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা ২০১৬ সালের ২০শে জুন বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী ০৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন, যার নং-৭। এস আই মো. রোকনুজ্জামান একই বছরের ১১ই ডিসেম্বর মাসুদকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।