অনলাইন
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: এক যুগেও শেষ হয়নি বিচার
অনলাইন ডেস্ক
(২ সপ্তাহ আগে) ২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:৫১ অপরাহ্ন

সাভারের রানা প্লাজা ধসে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ৯৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রানা প্লাজা ধসের এক যুগ পূর্ণ হলো। তবে এক যুগেও শেষ হয়নি বিচার। কবে এ মামলার বিচার শেষ হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত হন। আর এতে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হন ১ হাজার ১৬৯ জন।
ওই ঘটনায় মোট মামলা হয়েছিল ২০টি। এর মধ্যে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ। আর ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ঢাকার জেলা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ইকবাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ সব সময় তৎপর। হতাহতের সংখ্যা বেশি হওয়ায় মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের আদালতে হাজির করা হবে।’
হত্যা মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন। অন্য দুটি মামলা ঢাকার আদালতে বিচারাধীন।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় করা খুনের মামলার তদন্তে কেটে গেছে দুই বছর। মামলায় ছয় সরকারি কর্মকর্তাকে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি করার অনুমতি না পাওয়ায় তদন্ত শেষ করতে আরও দেরি হয়। পরে ওই ছয় সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি করে ২০১৬ সালে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এরপর অভিযোগ গঠনের আদেশ হয় আরও এক বছর পর।
অভিযোগ গঠনের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করেন মামলার সাত আসামি। তাদের পক্ষে বিচারকাজ স্থগিতাদেশের রায় আসে। এ জন্য পাঁচ বছর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
অভিযোগপত্রভুক্ত তিন আসামির মৃত্যু হয়েছে। এজন্য তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বর্তমানে আসামি ৩৮ জন। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র রানা প্লাজা ভবনের মালিক সোহেল রানা কারাগারে রয়েছেন।
রানা প্লাজা ভবন নির্মাণে ত্রুটি ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরের বছর ২০১৬ সালের ১৪ জুন বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত। এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে মামলা করেন।
পরে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ আছে। এর বাইরে ভবন নির্মাণের দুর্নীতিসংক্রান্ত মামলাটি ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে আছে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইকবাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এতদিনেও বিচার কাজ শেষ না হওয়ার পেছনে ‘বিগত সরকারের অবহেলা রয়েছে’।