অনলাইন
ভারতে বিচার বিভাগের ক্ষমতা বিতর্ক
উপরাষ্ট্রপতির দাবি সংসদই সর্বোচ্চ
পরিতোষ পাল, কলকাতা
(৩ ঘন্টা আগে) ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

ভারতীয় সংবিধান যখন প্রণয়ন করা হয়েছিল, তখন এটি সুপ্রিম কোর্টকে একটি অসাধারণ হাতিয়ার (ধারা ১৪২) দিয়েছিল যাতে তার সামনে আসা যে কোনো বিষয়ে "সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার" নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই ধারাটি একটি সুরক্ষা ভালভ থেকে একটি পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে, যা বিচারিক ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার এবং সাংবিধানিক ভারসাম্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে আইনজ্ঞ মহলে বিতর্ক তৈরি করেছে। সম্প্রতি রাজ্যপালের বিলে অনুমোদন আটকে রাখা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সময় নির্দিষ্ট করে নির্দেশ দেওয়া এবং নতুন ওয়াকফ আইনের কয়েকটি বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেবার পরই বিচার বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক নতুন করে শুরু হয়েছে। এবার এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন উপরাষ্ট্রপতি থেকে শাসক দল বিজেপির সাংসদরা । সরাসরি আক্রমণের মুখে পড়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে সরকারি তরফে পরিস্থিতি সামাল দিতে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধা সর্বাগ্রে এবং গণতন্ত্রের সকল স্তম্ভ একযোগে একটি বিকশিত ভারত গঠনের জন্য কাজ করছে। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং বিজেপি নেতাদের একটি অংশ সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্য করে এবং শীর্ষ বিচারপতিরা এই মন্তব্যের বিষয়টি আলোচনায় নেবার পর এই বিবৃতিটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় তার সংসদই সর্বোচ্চ মন্তব্যে অটল রয়েছেন। তিনি সংবিধানে বর্ণিত সরকারের কাঠামোর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, সংসদ (অর্থাৎ, আইনসভা) সর্বোচ্চ" এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরা (অর্থাৎ, সংসদ সদস্যরা) হলেন সংবিধান কী হবে তার 'চূড়ান্ত প্রভু'। তাদের উপরে কোনও কর্তৃত্ব থাকতে পারে না।
সুপ্রিম কোর্টের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেছেন , যদি সুপ্রিম কোর্টকে আইন তৈরি করতেই হয়, তাহলে সংসদ এবং রাজ্য বিধানসভা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। নতুন ওয়াকফ আইনের কয়েকটি বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলার প্রেক্ষিতে দুবে অভিযোগ করেছেন, দেশে "গৃহযুদ্ধের" জন্য প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না দায়ী থাকবেন।
তবে ভারতের শীর্ষ বিচারিক ফোরামের ভূমিকা এবং ক্ষমতা সম্পর্কে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের তীব্র সমালোচনাকে অগ্রাহ্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত। তিনি বলেন, আমরা চিন্তিত নই... প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিব্বল বলেছেন, আইন, সংসদ বা নির্বাহী বিভাগ কেউই সর্বোচ্চ নয়। সংবিধানই সর্বোচ্চ। সংবিধানের বিধানগুলি সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়। এই দেশটি এখন পর্যন্ত আইনকে এভাবেই বুঝতে পেরেছে।